বিজয়ের মাস আনন্দের ও উপভোগ্যের এমনকি আগামীর কল্যাণ সাধনে নিয়োজিত হওয়ার প্রস্তুতির মাস। কিন্তু বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে এসেও বিজয়ের সেই স্বাধ ও সুযোগ উপভোগ এমনকি আগামীর কল্যাণ সাধনে মনোনিবেশ করার সুযোগগুলো হাতছাড়া হচ্ছে; বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ ও অতিসাধারণ মানুষজন। এরই মধ্যে বহুবার বিজয়স্বাধ পেয়েছে এই জাতি কিন্ত তা ধরে রাখতে পারেনি এমনকি এর তাৎপর্য্যও অনুধাবন করে আগামীর কল্যাণের তরে কাজে লাগাতে পারেনি।
সর্বশেষ ঘটে যাওয়া ২৪এর বিজয়স্বাধ আস্বাধনের আগেই গলাটিপে মারার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু নতুন বিজয়ের স্বাধ অস্বাধনের আশায় দিনগুজার করার ক্রান্তিকাল অতিক্রান্তে কঠোর ও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে জাতিকে অগ্রসর হতে হবে। হয়তোবা কোন ত্রাতা এসে এই দুরবস্থার কবল থেকে অন্যকোন বিজয় স্বাধ আস্বাধনে জাতিকে নিমজ্জ্বিত করাবে। তবে সকল বিজয়ই নস্যাৎ হয়েছে এবং হয়ে যাচ্ছে আর যাবে তাই স্থায়ী বিজয়ের স্বাধ আস্বাধনে এবং সেই বিজয় আর্জনে এখন থেকে নুতুন করে ভাবতে ও শিখতে এবং জানতে আর সেই অনুযায়ী অগ্রসর হয়ে এগুতে হবে। তবে মহান খোদা এই যাত্রায় সহায়ক হবে এবং এরজন্য খোদার সহায়তা কামনা করতে হবে।
জাতি হিসেবে আমরা হতভাগা। তাই আমাদের ভাগ্যে সুখ ও শান্তি, আশা আর নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা সহ্য হয়না। তাই মনুষ্যস্বভাবের বাইরে গিয়ে নেতিবাচক ও ধ্বংসাত্মক আচরণে উম্মত্ব ও উত্তাল থেকে নিজেদের ভাগ্যকে শুন্যের কোটায় নামিয়ে এনে বিপদের সঙ্গে বসবাসে নিয়োজিত হই। আর এটি ঘটে স্বেচ্ছায়। তাই এর থেকেও মুক্তির প্রয়োজন। তাই আমরা নিজে থেকে না পাড়লেও অপরের সাহায্য নিয়ে চেষ্টা করি। যদি কোন চেষ্টাই আর কাজে লাগছেনা ঠিক তখনই সৃষ্টিকর্তার স্মরণাপন্ন হই এবং তাঁর ইচ্ছা ও আকাঙ্খা এবং অভিপ্রায় অনুযায়ী অগ্রসর হই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সুখ শান্তি এবং আনন্দ আর নিশ্চয়তার জন্য পরিকল্পনা করে রেখেছেন আর সেই পরিকল্পনাই আমাদের বিজয় বা মুক্তি ও নিশ্চয়তার বিধান করবে। আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভে তাঁরই কাছে স্মরণাপন্ন হই।
বিড়ম্বনা একটি প্রাত্যহিক প্রাপ্তি ও নিয়মিত আর হরহামেশার ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। রাস্তা-ঘাটে যানযট বিড়ম্ভনা, ভিভিআইপি বিড়ম্ভনা আর নতুন যোগ হওয়া অগনিত বাংলার আবিস্কার টেসলা। এই সকল বিড়ম্ভনায় আমরা আজ অতিষ্ট। তবে যাই বলুক বা বলুন না কেন এই সকল বিড়ম্ভনাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার পরও বার বার এই বিড়ম্ভনার কবলেই জীবন সমাধি ঘটে। যার থেকে মুক্তির জন্য আজও কেউ কোন পদক্ষেপ নেয়নি এমনকি নেয়ার প্রয়োজনও মনে করেনি। তবে এই বিড়ম্ভনা বাড়ানোর কাজটুকুই সুসম্পন্ন করে যাচ্ছেন সুনির্পূণভাবে। সদ্য যোগ হওয়া বিড়ম্ভনার একটি হলো পিড়াদায়ক ও বেদনাদায়ক; ভিভিআইপি চিকিৎসার বিড়ম্ভনা। এই বিড়ম্ভনা থেকে মুক্তির উপায় ছিল এবং আছে কিন্তু সেই উপায়কে ধুলিসাৎ করে বিড়ম্ভনায় পৃষ্ট জীবন এখন সংকটে মৃত্যুর প্রখর গুনছে। একটি ঘটনা সদ্যই আমাদের চোখের সামনে। তা হলো এভারকেয়ার হাসপাতালে জাতির ঐক্যের প্রতিক মেডাম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। সেই চিকিৎসায় যথেষ্ট আস্থা ও বিশ্বাস এবং সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভরতা রয়েছে। তারপরও দেশবাসী যার যার অবস্থান থেকে মেডামের জন্য দোয়া করে যাচ্ছেন যাতে দেশের কল্যাণে ও দেশবাসির প্রয়োজনে তাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। এরই মধ্যে তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। আর সেই সংকটে ঘি ঢেলে দিয়েছেন হাজারো দর্শনার্থী এবং সাংবাদিকগণ। যার কারণে সাধারণ যাত্রী ও রোগিদের চলাচলে বিষম সমস্যা হচ্ছে। সময়মতে এম্বুলেন্স রোগী নিয়ে পৌঁছতেও পারছে না। রোগীর লোকজন রোগির খোজ খবর নিতে পারছেনা। কিন্তুু এতেও থেমে নেই বিড়ম্বনার; আবার নতুন করে যুক্তহলো অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা এবং তৎপরবর্তী পদক্ষেপ, এসএসএফ, পিজিআর, পুলিশ (এসবি, এনএসই), বিজিবি, আর্মীসহ সকলের দায়িত্ব পালনে হাসপাতালের সেবায় বিঘ্ন ঘটছে। রোগী তার প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রোগীর এটেনডেন্ট তার রোগীর অবস্থা জানতে ও মতামত দিতে সমস্যার মুখে পতিত হচ্ছে। শুধু কি তাই এর মধ্যে আবার নতুন করে আসছে ভিভিআইপ মুভমেন্ট এবং বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের আনাগুনা। সব মিলিয়ে যেন হাসপাতাল আর হাসপাতাল নেই যেন এক শাষণের বা প্রশিক্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সাধারণ রোগীদের বা সেবা প্রত্যাশিদের জীবন এখন সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে এই সকল আয়োজন ও পদক্ষেপের জন্য। রোগীরা সময়মত তাঁর ডাক্তার পাচ্ছেন না। ডাক্তাররা এমনিতেই মেডাম জিয়াকে নিয়ে ব্যক্ত আবার অতিরিক্ত ঝামেলাগুলোর কারণে রোগীদের শরীর দিন দিন খারাপের পথে এমনকি মৃত্যুর পথে পর্যবসীত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কাকে দোষারোপ করব আর কার দিকে আঙ্গুল তূলব, সবই তকদির এবং নিরুপায় হয়ে আর ভেবে ভেবে মেনে নেয়া ছাড়া আর কিইবা করার আছে। তবে এই লিখার মাধ্যমে সকলকে অনুশোচনা এবং পরবর্তী নির্বিঘ্ন সেবার পরিবেশ রক্ষায় কার্যকরী ভুমিকা রাখতে সহায়ক হবে বলে বিশ্বাস। এভার কেয়ার সৃষ্টিলগ্ন থেকেই সেবার মান ও আন্তরিকতা আর নিষ্টার সাথে রোগী ও রোগী স্বজনদের দায়িত্ব নিয়েই সুনাম রক্ষা করে এসেছে। সবাই তাদের সেবায় শতভাগ আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে ঘরে ফিরেছে। শুধু এইবারই ব্যতিক্রম। তাই এই ব্যতিক্রম পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে উত্তরণের পথে এগিয়ে যেতে পারবে বলে বিশ্বাস করি। আমি ভোক্তভোগী এবং আমার রোগী এর স্বীকারে গভীর সংকটাপন্ন। তাই করজোরে বিনীত আহবান জানাই এই বিষয়গুলোর দিকে সদয় দৃষ্টিদিয়ে আগামীর করণীয় ঠিক করার জন্য। আশাকরি এই অপুরনীয় ক্ষতি থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর ক্ষতি পোষানো সম্ভব হবে। ডাক্তারদেরও ব্যস্ততা এবং রোগীর প্রতি সময় না দেয়া বা সময় বের করতে না পারার অভিজ্ঞতাগুলো ভবিষ্যতে সন্নিবেশিত করে এভারকেয়ার তার শ্রেষ্ঠত্ব এবং ঐতিহ্যধরে অগ্রসর হবে এই আমার চাওয়া ও প্রত্যাশা। আমার মন খারাপ সকল রোগীদের জন্য আর মাননীয় মেডামের জন্য। আমি করজোরে মহান রবের নিকট মিতনি করি তিনি যেন সবাইকে সুস্থ্য করে স্ব স্ব অবস্থানে ও পরিবারে এবং কর্মক্ষেত্রে আর দেশসেবায় মনোনিবেশ করতে সহায়তা করেন। আসুন আমরা নিজেরা সংশোধন হই, সচেতন হই, অতিরিক্ত উম্মাদনা এমনকি ভিভিআইপি চিন্তা ভাবনা বন্ধ করি। দেশের সবাই সমান এবং সবার জন্য দেশ এবং দেশের সকল সুযোগ সুবিধা। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন এবং আগামীর বাংলাদেশে সাধারন জনগণকে বিজয়ের বিড়ম্বনা থেকে মুক্ত রাখুন।