রবিউল, কক্সবাজার প্রতিনিধি॥ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদীকে পুলিশ খুঁজছে। তাকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই আটক করা হবে। গত শুক্রবার দুপুরের পর থেকে শামীম সাঈদীকে খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল।
জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়িতে আশ্রয় নেওয়া নির্যাতিত মুসলিম রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করাচ্ছেন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী। তিনি এসব স্থানে বিনা অনুমতিতে ত্রাণও বিতরণ করছেন। সেই সাথে জামায়াত-শিবির ও রোহিঙ্গা নেতাদের সাথে গোপন বৈঠক করারও অভিযোগ উঠেছে।
এমনকি কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করাচ্ছেন। শামীম সাঈদী নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধনের পর শুক্রবার ও আগেরদিন বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী, টেকনাফের হ্নীলা, হোয়াইক্যং, সাবরাং ও শামলাপুর এবং বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়িতে নতুন রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করানো হয়। এরপর শুক্রবারও টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং নামক স্থানে জামায়াত নেতাদের স্থাপিত রোহিঙ্গা শিবিরে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করাতে দেখা গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, মূলত ত্রাণ দেওয়ার নামে জামায়াত নিজেদের উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করাচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ বিতরণের কথা বলে জামায়াত এই নিবন্ধন কার্যক্রম চালাচ্ছে। ছাত্রশিবির কক্সবাজার শাখার নেতাকর্মী ও ফুলকুড়ি আসরের কর্মীরা রোহিঙ্গাদের এসব নিবন্ধন কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন কার্যক্রমের বাইরে গিয়ে শামীম সাঈদীর এই নিবন্ধন কার্যক্রমকে উদ্দেশ্যমূলক বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদত হোসেন জুয়েল বলেছেন, সাইদী পুত্র শামীম টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াত নেতা নুর আহমদ আনোয়ারির সাথে গোপনে টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে চষে বেড়াচ্ছেন। অথচ স্থানীয় প্রশাসনসহ পুলিশের কোন খবর নেই।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। তাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হচ্ছে। এর বাইরে গিয়ে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীপুত্র ও জামায়াত-শিবিরের আলাদাভাবে রোহিঙ্গা নিবন্ধন উদ্দেশ্যমূলক। তিনি অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গাদের সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্যই দলটি এই কাজ করছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, রোহিঙ্গাদের মাঝে সাঈদীপুত্রের নিবন্ধন ও ত্রাণ বিতরণের খবর তারা পেয়েছেন। সরকারি নিয়ম মেনে এই ত্রাণ দেওয়া হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।