আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ দেশের ভেতর এবং বাইরে বিরাজমান অস্থিরতা আর অনিশ্চয়তার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের তরুণরা। সম্মানিত করছে নিজেদের, উজ্জ্বল করছে মা-বাবার মুখ, বিশ্বজুড়ে তুলে ধরছে বাংলাদেশের নাম। জগৎজুড়ে নানা শাখায় আজ সাফল্যের সাক্ষর রাখছে বাংলাদেশের এই তরুণরা। এমনই আলোকিত একটি নাম ময়মনসিংহের মেয়ে সওগাত নাজবিন খান।
বাংলাদেশের মেয়ে সওগাত নাজবিন খান জাতিসংঘ ঘোষিত সাসটেইনেবঃল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) এর সমর্থনে কাজ করছেন এমন ১৭ তরুনের একজন। কিন্তু জাতিসংঘের মতো জায়গায় তো আর এমনি এমনি গিয়ে হাজির হওয়া যায় না। নাজবিনও তা পারেনি। ১৮৬টি দেশ থেকে আসা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১৮ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগীর মধ্যে লড়াই করেই ১৭ তরুন নেতার একজন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন আমাদের নাজবিন। ১৯ থেকে ৩০ বছর বয়সের ১৮ হাজারের বেশি আবেদনকারীদের মধ্য থেকে এসডিজির ১৭টি মৌলিক লক্ষ্যে অবদান রাখার জন্য ১৭ জন তরুণকে বাছাই করে জাতিসংঘ। নজবিনসহ এই ১৭ তরুণ নেতা সম্পর্কে জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ওই তরুণ নেতারা ৭১ তম সাধারণ অধিবেশনে বেশ কয়েকটি হই লেভেল বৈঠক এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। তারা জাতিসংঘ এবং তারমিত্রদের বিভিন্ন প্রকল্পেও অংশগ্রহণ করবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের যুব বিষয়ক প্রতিনিধি আহমদ আলহেনদাওই বলেন, ‘আমরা গর্বের সঙ্গে ঘোষনা করছি যে, এই তরুণ বিশ্ব নাগরিক দলটি তাদের সম্প্রদায়ের অগ্রগতিতে বিশেষ অবদান রেখেছে।’ তিনি আরও বলেন, এই তরুণরাই এসডিজির লক্ষ্য অর্জনের মধ্যদিয়ে বিশ্বকে বদলে দিতে পারে। এর আগে কমনওয়েথ যুব পুরস্কারও জিতেছিলেন ময়মনসিংহের মেয় সওগাত নাজবিন। কমনওয়েলথভূক্ত ৫৩টি দেশের মধ্য থেকে মাত্র চারজন জিতেছেন কমনওয়েথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডস ২০১৬। নাজবিন কমনওয়েলথ এশিয়াইয়াং পারসন অব দ্যা ইয়ার ২০১৬ নির্বাচিত হন।
নাজবিন ভিকারুনসিনা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এস এস সি ও এইচ এসসি শেষ করে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) তেকে ইলেকট্টিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্টনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ অনার্স সম্পন্ন করেন। এরপর ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি দূষণমুক্ত জ্বালানি (গ্রীন এনার্জি) বিসয়ে মাষ্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ময়মনসিংহে এইচ এ ডিজিটাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন, যেখানে আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছেলে-মেয়েদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পড়ানো হয়।
ঘোষিত এই ১৭ তরুণ নেতাদের অন্যরা হলেন:- তৃষা শেট্টি (ভারত), অঙ্কিত কাওয়াত্রা (ভারত) অ্যান্তনি ফোর্ড শুব্রুক (ব্রিট্রেন), রিটা কিমানি (কেনিয়া), রেইনিয়ারম্যালেল (ডমিনিকান রিপাবলিক), ইদ্দা হামার (আইসল্যান্ড/ অষ্ট্রেলিয়া), ভিনসেন্ট লোকা (ইন্দোনেশিয়া) সামারসামির মেজঘান্নি (তিউনিশিয়া/ ইরাক), লুতফি ফাদিল লোকমান (মালয়েশিয়া), ক্যারোলিনা মেদিনা (কলম্বিয়া), জ্যাকাহরোইটজ (যুক্তরাষ্ট), করণ জোরাথ (যুক্তরাষ্ট্র) স্যামুয়েল মালিঙ্গা (উগান্ডা). সাফাথ আহমেদ জহীর (মালদ্বীপ), নিক্কিফ্রেজার (কানাডা), টেরে গনাজালেজ গার্সিয়া (মেস্কিকো)
নাজবিনের এই অর্জন আমাদেরও আর্জন। তার এই অর্জন আমাদের আশান্বিত করে, স্বপ্ন দেখায়। বিশ্বাস করতে শেখায় যে, আমাদের তরুণরাই আগামীতে পথ দেখাবে বিশ্বকে।