চপল লন্ডন প্রতিনিধি॥ গত ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পাতাল রেলে বোমা হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজনের তালিকায় তারেক জিয়ার নাম আছে। লন্ডন পুলিশ গত ১৮ সেপ্টেম্বর তারেক জিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পুলিশের অনুমতি না নিয়ে তাঁকে কোনো বৈঠক বা দেখা সাক্ষাৎ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
লন্ডন হামলার মাত্র কদিন আগেই যুক্তরাজ্য সরকার সেদেশে দাউদ ইব্রাহিমের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে। দাউদ ইব্রাহিম বিভিন্ন নামে যুক্তরাজ্যে এই সম্পদ কিনেছিল বলে যুক্তরাজ্য ট্রেজারি বিভাগ দাবি করেছিল। যাদের নামে দাউদ ইব্রাহিমের এই সব সম্পদ ছিল তাদের সঙ্গে তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানা গেছে।
পাতাল রেলে হামলা এবং দাউদ ইব্রাহিমের সম্পদ বাজেয়াপ্তের কোনো যোগসূত্র আছে কিনা লন্ডন পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তারেক জিয়ার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা। ২০০৮ সালে লন্ডনে যাবার পর তারেক জিয়ার সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের একাধিকবার টেলিফোনে আলাপ হয়েছে বলে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডনের পাতাল রেলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ওই দিন সকালে লন্ডনের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের ফুলহাম এলাকায় পারসনস গ্রিন স্টেশনে ‘ডিস্ট্রিক্ট লাইন’ ট্রেনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ২৯ জন আহত হন।
ঘটনার দায় আই এস স্বীকার করলেও লন্ডন পুলিশ বলেছে যেকোনো ঘটনা ঘটলেই ঘটনার দায় স্বীকার তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। পুলিশ তদন্তে বেশ কিছু কারণ প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি দাউদ ইব্রাহিমের সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ। মত্র দুই দিন আগে ব্রিটিশ ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট যুক্তরাজ্যে দাউদ ইব্রাহিমের বেনামে রাখা
১৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে। এসব সম্পদের মধ্যে ছিল মিডল্যান্ডের একটি বাড়ি, ইয়ার্কশায়ারে আবাসিক হোটেল। দাউদ ইব্রাহিম যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির নামে এসব সম্পত্তি কিনেছিলেন। তারা প্রত্যেকেই দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে।
দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠদের অন্যতম আসলাম ওয়ারসি। যিনি ইয়ার্কশায়ারের হোটেলের পোষাকী মালিক ছিলেন। আসলাম ওয়ারসির সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
ওয়ারসি বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করেছেন। তারেকের সঙ্গে ওয়ারসির ঘনিষ্ঠতার একাধিক প্রমাণ লন্ডন পুলিশের কাছে আছে। এই ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরেই ‘রাজনৈতিক আশ্রয় প্রাপ্ত’ তারেক জিয়াকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
লন্ডন পুলিশ, তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে চলমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা নিয়েও প্রশ্ন করেন। তারেক জিয়া ওই মামলার অন্যতম আসামি। এছাড়াও তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের পরোয়ানা রয়েছে।
লন্ডন পুলিশ প্রায় ৪৫ মিনিট তারেক জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাকে ‘চলাফেরার সীমিত করণ’ নির্দেশনাও জানিয়ে দেন। ফলে, তারেক জিয়া এখন লন্ডনে নজরদারির মধ্যে থাকবেন।