বর্তমানে মিডিয়াতে গুজব এবং হলুদ সাংবাদিকতা একাকার হয়ে সত্যের আবরণে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেক গুজব ও মিথ্যা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। বহুল এই প্রচারের জন্য তাদের চাহিদাও বেড়েছে এবং চড়ম উন্মাদনার সৃষ্টি হচ্ছে। অস্থিরতা নির্ভর সমাজ ব্যবস্থায় ঝাকুনি দিয়ে সব তছনছ করে দিচ্ছে। অনলাইন ভিত্তিক বহুল প্রচারিত ও প্রচলিত সংবাদপত্রগুলি এমনকি অননোমোদিত নিউজ পোর্টালগুলি মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে যার সত্যতা এবং বাস্তবতা কোনটিই খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু এই মিথ্যা ভাইরাসগুলো সমাজে জায়গা করে নিচ্ছে সত্য হিসেবে বা মানুষের মনে সন্দেহের দোদুল্যমান অবস্থান হিসেবে।
এইতো সেদিন রচিত হলো প্রবির সাহেবের কল্প কাহনী যা আনন্দ বাজার পত্রিকাসহ বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমের গরম মসলাদার খবর হিসেবে চাউর হয়েছিল। এমন মিথ্যা সংবাদ কিভাবে একজন জনগুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক নেত্রীর সম্পর্কে প্রকাশিত এবং প্রচারিত হলো তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। এই সংবাদের পক্ষে আবার সাফাই গেয়েছেন আমাদের দেশের স্বনামধন্য একজন দাপুটে মন্ত্রী। পাশাপাশি আরেকজন মন্ত্রী তা ভিত্তিহিন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেও এর ভিত্তিহীনতার জন্য জনমনে গুজব না ছড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। সেদিন আবার বিভিন্ন দেশের দুতাবাস থেকে তাদের নাগরিকদের হোশিয়ারও করেছিলেন। যেন তারা বাসা থেকে বের না হয়। আমি আমার এক বিদেশী বন্ধুর মাধ্যমে এই খবরটি পাই এবং এর সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে বলি এটা সত্যি নয়।
ঘটনাটি হলো গত ২৪ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এস এস এফ কর্তৃক হত্যা ষড়যন্ত্র। এটি একটি গুজব কিনা জানি না তবে এই ধরণের গুজবের পিছনেও আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। যা ঐ সংবাদদাতাকে জিজ্ঞাসা করলে হয়তো বিশদ জানা যাবে। তবে আমরা যাই মনে করিনা কেন? বিশ্বাস করতে হবে এই গুজবের পিছনে কোন রহস্য বা পরিকল্পনা রয়েছে। তা হয়তো বিশ্বস্ত বাহিনীর মধ্যে ফাটল অথবা দেশবাসীর মধ্যে মৃধু গুঞ্জন সৃষ্টি। অথবা কোন আগাম সংকেত বা আগামীতে এমন অন্য কোন ষড়যন্ত্র হওয়ার ইঙ্গিত। এমনও হতে পারে সরকার প্রধান নিরাপদ নন এবং এদেশের বিভিন্ন বাহিনীর দ্বারা তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
যাই হোক মোর্দাকথা হলো আমাদের দেশের প্রধান মন্ত্রী এক মুহুত্বের জন্যও নিরাপদ নন। দেশে এবং বিদেশে সব জায়গাই তিনি মৃত্যুর মুখোমুখো দাড়িয়ে। দেশীয় শত্রু এবং বিদেশী শত্রু মিলে একাকার হয়ে আছে। যদি এক সেকেন্ডের জন্য কোন সুযোগ পায় তাহলে এই দেশের উন্নয়ন এবং বিশ্ব শান্তির দিক নির্দেশনাকে স্তব্দ করে দিবে। কিন্তু সেই সুযোগ পায়ওনি এবং পাবেওনা। কারণ তাঁর পাহাড়া তিনি নিজেই দেন এবং আশে পাশে যারা আছে তারা ও এই দেশের জনগণ তাকে অতন্দ্র প্রহরির মত চোখ ও কান খুলে পাহাড়ায় রাখেন। সর্বোপরি মহান খোদা তাকে নিয়োজিত করেছেন বাংলাদেশ তখা বিশ্বের নির্যাতীতি ও অশান্ত অবস্থায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে এমনকি সঠিক দিক নির্দেশনায় জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। একেই বলে… রাখে আল্লা মারে কে। সৃষ্টিকর্তার পাহাড়াই সবচেয়ে চৌকষ এবং নিশ্চিত সুরক্ষা কবজ। তাই তিনি আছেন এবং থাকবেন।
হলুদ সাংবাদিকতা এবং পয়জন হিসেবে সকল সংবাদ মাধ্যমকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমের যে মহতি উদ্দেশ্য, সেই উদ্দেশ্যকেই বিনষ্টের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে। যে কোন সংবাদ পত্রিকায় বা টেলিভিশনে ততক্ষণ যাবে না যতক্ষণ না ঐ সাংবাদিকের পকেটে টাকা যায়। এই টাকাই এখন সকল সংবাদ প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তবে কিছু কিছু সং ও সাহসি নির্ভিক নি:স্বার্থ্য সাংবাদিকদের জন্য আজও এই মাধ্যমগুলো টিকে আছে। তবে ঐ হলুদাভ কিন্তু দিন দিন গ্রাস করে নিচ্ছে বৃহৎ অংশকে। আমি নিজেও চেয়েছি অনেক সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে যা পারিনি এবং পেরেছি যখন টাকা খরচ করেছি। তাই বর্তমানে অন্ধকারই সকলের সামনে আলোর মত জ্বলে। আলো এখন অনেক দুরে নিভু নিভু করে জ্বলতে যা দেখতে এবং খুঁজে পেতে কষ্ট হয়।
চিলে কান নিয়েছে, তাই কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে না ছুটে আগে কানে হাত দিই এবং তারপর ব্যবস্থা নিই। যেহেতু একটি গুজব রটিয়েছে সেইহেতু এই গুজবের বা হলুদ সাংবাদিকতার রহস্যাভেদ এখন সময়ের দাবি। মাঝে মাঝে দেখা যায় যাহা রটে তাহাই বটে। তবে এখন আমাদের চোখ কান খেলা রেখে যাচাই বাছাই করে সামনের দিকে এগুতে হবে এবং বিশ্বনের্তৃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের পাহাড়ার ব্যবস্থাটুকু নিশ্চিদ্র করে খোদার দেয়া দায়িত্বটুকু পালন করতে হবে।
অনেক ভেজালের মাঝে সত্যকে বা নির্ভেজালকে খুজে বের করতে হবে এবং সকল হলুদ সাংবাদিকতাকে ঘৃণায় পরিণত করে বাস্তবে হলুদের এমনকি মিথ্যার কুফল ও এর প্রকাশ দৃশ্যমান করে তুলে ধরতে হবে। আসুন আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে এই মহৎ কাজটুকু করে যার যার দায়িত্ব পালন করি। আমাদের সমাজ থেকে হলুদ এবং ভেজালকে দুর করি।