হবিগঞ্জ প্রতিনিধি॥ পতাকার বদলে বিছানার চাদর বিছিয়ে এক মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে। হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ৮নং খাগাউড়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল হককে এভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনে অবহেলা ও গাফলতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ সচেতন মহল।
মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল হকের পুত্র মো. মিজানুর রহমান এর প্রতিকার চেয়ে ডাক যোগে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি অভিযোগ প্রেরণ করেছেন। অভিযোগের একটি কপি তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমেও পাঠিয়েছেন।
উল্লেখ, গত শনিবার সকাল ৭টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল হক তাঁর নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। বিকেল ৩টায় ইমামবাড়ী তাজপুর গ্রামে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর ৩টা ১০ মিনিটে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা (গার্ড অব অনার) দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানকালে জাতীয় পতাকা দিয়ে কফিন আচ্ছাদিত করার কথা থাকলেও জাতীয় পতাকার পরিবর্তে বিছানার চাদর দিয়ে কফিন আচ্ছাদিত করা হয়। এই এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের বর্তমানে কোন কমিটি নেই। সেই ইউনিটের দায়িত্বে রয়েছেন বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার সিংহা। রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের দায়িত্বে থাকা ইউএনও উপস্থিত ছিলেন না বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগের কপি প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান, সচিব মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার সিলেট, হবিগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার ও উপ-পরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয় হবিগঞ্জ বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান অভিযোগকারী।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার সিংহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কোন সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অবহেলা করি না। মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে আমরা সব সময় আন্তরিকতার সাথে কাজ করি। মরহুম মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. রজব আলীকে দায়িত্ব দেয়া হয় এবং তিনি উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়।
জাতীয় পতাকার বিষয়ে তিনি বলেন, বানিয়াচং থানা পুলিশকে বলা হয়েছিল পতাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য কিন্তু ভুলক্রমে তারা পতাকা নেননি। এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল।