রজনীতিবিহিন যেমন দেশ চলে না ঠিক তেমনি করে রাজনীতিতে জনভোগান্তী দুর করাও দরকার। কারণ রাজনীতি হলো জনগণের জন্য। কিন্তু বর্তমান রাজনীতির বেশীরভাগ অংশই হলো রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তি বা নেতাদের জন্য। তারপরও বলব রাজনীতি এবং জনভোগান্তি যেন একসূত্রে গেঁথে না থাকে। যদিও বর্তমান সময় রাজনীতি এবং জনভোগান্তি একটি সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। কিছু হলেই জনগণের ভোগান্তির আর অন্ত থাকেনা। জনতা নিষ্পেষিত হয় ভোগান্তির নিষ্পেষনে। যন্ত্রণায় ছটফট করে জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। কিন্তু কি কোনদিন আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় ও আদরের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রিগণ এমনকি দলগুলো এ জনভোগান্তি নিয়ে চিন্তা করেছেন? না করেননি এবং করবেনও না? এটাই হলো বর্তমান অধুনা বিলুপ্ত রাজনীতির নতুন আবিস্কার। যত ভোগান্তি বাড়বে ততই রাজনীতি বাহরম্বও পরিধির আহাম্মকি এবং শক্তিধরতা প্রখর ক্ষমতা বাড়বে। আর এই অবস্থা সৃষ্টিটাই হলো বর্তমান রাজনীতির একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
জনঅসন্তোস বা জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক কর্মসূচীগুলো যেন আলোকিত থেকে আলোকচ্ছটা হয়ে প্রাণপ্রদীপের ন্যায় ঘুরেফিরে মনুষ্য যন্ত্রণায় কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত। আমরা মানুষ এবং রাজনীতির ভাষায় জনগণ আর এই জনগণ দৈনন্দিন জীবনের চাকা সচল রাখতে গিয়ে সকল ক্ষেত্রে জনদূর্ভোগের যাতাকলে পিষ্ট হতে হতে এখন চিরস্থায়ী গন্তর্ব্যরে পথে দৌঁড়াচ্ছি। সংসারের যাতাকল দিয়ে শুরু তারপর রাস্তায় যানযটের যাতাকলে প্রায় পিষ্ট এমনিতেই তার উপর শুরু হয়ে থাকে অতিরিক্ত মনুষ্যসৃষ্ট যাতাকল; যেমন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, অতিথী অর্ভ্যর্থনার মাধ্যমে সৃষ্টি যাতাকল, সবংর্ধনা এবং রাজনৈতিক মিটিং মিছিল ও অকল্যাণকর অবরোধ ও হরতালের যাতাকল। সবই যেন এই জনগণের উপর চাপানো মরার উপর খারার গায়ের সমান। এর থেকে নিস্কৃতি কবে তারও কোন ইয়াত্তা নেই।
জনগণের জন্য যদি সবই করেন তাহলে একটু জনগণকে নিয়ে ভাবুন এবং জননিস্কৃতি দিয়ে জনগণের হৃদয়ের ভালবাসাটুকু গ্রহণ করুন। জনগনকে সুযোগ দিন নিজথেকে ভালবাসা প্রকাশ করতে। আপনারা জনগণের সম্পদে পরিণত হউন এবং জনগণ আপনাদেরকে যতœকরে পাহারা দিয়ে বাচিঁয়ে রাখবে আগামী প্রজন্মের পর প্রজন্মের তরে। কাউকে আঘাত দিতে এই লিখা নয় বরং বিবেক ও চিন্তায় পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যেই এই লিখা।
আমাদের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী বা কর্তাব্যক্তিদের শব্দচয়নে এখন জরুরী ভিত্তিতে সতর্কতার সহিত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আমরা হরহামেশাই দেখে শব্দচয়নে অপরিনামদর্শীতা এবং বেহায়পনার আভির্ভাব। এই যে, নেতা নেত্রী এমনকি আত্মীয়-স্বজনের আগমনে প্রিয়জন ও পরিচিতজন অথবা আত্মীয়স্বজন ছুটে যায় বিমান বন্দরে অভ্যর্থনার সহিত গ্রহণ করতে বা ইংরেজীতে রিসিভ করতে। এটাই স্বাভাবিক। আর এই স্বাভাবিক অবস্থাকে স্বীকৃতি দেয়ায় আমাদের সকলের কাজ। তবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি নয় বরং আইনের সকল নিয়ম অনুসরণ করে রিসিভ করাই আমাদের ঐকান্তিক কাম্য। তবে রিসিপশনকে সম্বর্ধনা বলে চালিয়ে দেয়া একটি বোকামী আর কি? আমাদের আহাম্মকিরতো শেষ নেই তাই রিসিপশন আর সংবর্ধনা বা গণ সংবর্ধনা এখন একাকার হয়ে গেছে। দুটোর অর্থও যেমন দুই ঠিক তেমনি দুটোর মহাত্ম ও আলাদা। আমরা আহাম্মক বলেই ঐ দুটো শব্দকে সঠিক জায়গায় ব্যবহার করতে পারিনা। তবে সচেতন হলে বর্তমান প্রজন্ম ভবিষ্যতে পারবে বলে আমার মত আহাম্মকের বিশ্বাস।
এইতো কয়দিন আগে আমাদের দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাটুর চিকিৎসা শেষে তিনমাস পরে দেশে ফিরেছেন এবং বিমান বন্দরে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে মানুষকে বা রাজনীতির ভাষায় জনগণকে ভোগান্তি দিয়ে ম্যাডামকে স্মরণ করতে বা মনে রাখতে সাহায্য করেছে মাত্র। ভাল; মাঝে মাঝে আমাদের মত জনগণকে কষ্ট দিয়ে নিজেদের সুখভোগও করতে হয় এটাও প্রমানিত যা তিনি দেখিয়েছেন অতিতে। তবে এই যাত্রায় জনগনের ভোগান্তিতে মত্ত ম্যাডাম নিজেও ছিলেন তবে এসির হাওয়র কারণে হয়ত সম্পূর্ণ ভোগান্তি উপলব্দি করতে পারেননি। যাই হোক বিনা পুলিশী বাধায় ভাড়া করা লোকের গেরিলা কায়দায় সমাগম কিন্তু কোন প্রয়োজন ছিল না। আর গেরিলা কায়দায় এই গনজমায়াত তেমন কোন অর্থ বহন করে বলেও মনে হয় না। তবে বলা যায় এই রিসিভ করার পিছনে যদি সরকার ও দেশবাসীকে কোন ম্যাসেজ দিতে চেয়ে থাকেন সেটা আসলে পুরোপুরি বিফলেই গেল এযাত্রায় বলা যায়। তবে স্যোসাল মিডিয়ায় যে ইস্তেমার ছবি দিয়ে ম্যাডামের রিসিপশন বোঝাতে চেয়েছেন তা কিন্তু অন্ধকারের মধ্যে আলোতে আলোকিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে। সন্ধার আদো আলোতে যে ছবিগুলো ছিল তা ছিল বিশৃঙ্খলায় ভরপুর।
শৃঙ্খলা শিখানো এবং পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন এই উপলব্দিগুলো এখন থেকেই রাজনীতিতে কাজে লাগানো দরকার। ভাষগত হুমকি, ধমকি, হুংকার এবং কাদা ছোড়াছোড়ি ছেড়ে সময়ের সাহসি পদক্ষেপে অংশগ্রহন করুন। একে অন্যকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্রহণ করুন। সে এইটা করেছে, বা ওমুকে এইটা করেছে তাই আমাকেও করতে হবে এই অসম প্রতিযোগীতা থেকে বের হয়ে আসুন। বরং যা ভাল, উপযুক্ত, সৎ এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে মনযোগ দিয়ে কাজ করুন। ডিজিটাল যুগে বাকোয়াজ বন্ধ করুন। আগামীর বিশ্ব নের্তৃত্ব দেয়ার দৌঁড়ে নিজেকে প্রস্তুত করুন। বিশ্ব নের্তৃত্বের যে দ্বার বাংলাদেশের সামনে এসেছে সেই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য সমন্বিত পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়দৃপ্ত অঙ্গিকার গহণ করুন। কারো সমালোচনায় বা অবহেলায় নয় বরং সকলে মিলেই এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো সম্বৃদ্ধির পথে, আর বিশ্ব নের্তৃত্বের শুন্যস্থান দখল করে আগামী নের্তৃত্ব দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।