টিআইএন॥ স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়কালের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘জিয়া নামে যে একটা লোক আছে, আমি তোফায়েল আহমদ জানতাম না। বঙ্গবন্ধু যখন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন তখনও জিয়া নামে কোনও মানুষ আছে বলে আমরা জানতাম না।’
পাকিস্তান হাই কমিশনের ফেসবুক পেজে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে ভিডিও দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সচিবালয়ে এমন মন্তব্যের কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বলেছেন। এটা কি স্বাধীনতার ঘোষণা না?’ তোফায়েল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে না থেকে যদি পাকিস্তানে থাকত, অথবা ঢাকায় থাকত; তবে তিনি পাকিস্থানের পক্ষাবলম্বন করতেন। কারণ তিনি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন না। তার বড় প্রমাণ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে সংবিধানকে তিনি তছনছ করেছেন।’
বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি প্রাপ্তির বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ শুধু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়কেই নাড়া দেয়নি, এ ভাষণটি সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। আজকে মনে হচ্ছে, এই ভাষণ ছিল পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ ভাষণ। কারণ একটি ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি একটি জাতিকে একটি মোহনায় দাঁড় করিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।’
তোফায়েল আরও বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণটি যে একদিন আন্তর্জাতিক বিশ্বে শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে রূপান্তরিত হবে এ বিশ্বাস ও আস্থা আমাদের ছিল। একটা ভাষণের মধ্য দিয়ে একটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা, একটা ভাষণের মধ্য দিয়ে নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত করা- এটিই ছিল ৭ মার্চের ভাষণের মূল চালিকাশক্তি।’
বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এ নেতা বলেন, ‘এটা কোনও লিখিত বক্তব্য ছিল না। এই বক্তব্য ছিল তাঁর (শেখ মুজিব) হৃদয়ের গভীরে যে বিশ্বাস সেই বিশ্বাস থেকে উৎসারিত। সেদিন আমাদের মনে হয়েছিল- যেন এই দিনটির জন্যই বঙ্গবন্ধু অপেক্ষা করছিলেন।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খুব সতর্কতার সঙ্গে তাঁকে সেদিন ভাষণ দিতে হয়েছিল। কারণ একদিকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন, আরেক দিকে যাতে তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে আখ্যায়িত না করা হয় সেই ব্যাপারেও তিনি সজাগ ছিলেন। হৃদয়ের বিশ্বাস থেকে যার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছিলেন তিনি তাঁর ভাষণে সেসব কথাই উল্লেখ করেছিলেন।’