শেখ হাসিনা বিশ্বের ৩য় সৎ সরকার প্রধান

তাজুল ইসলাম নয়ন॥ সততার দৃষ্টান্তে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এর শুরুটা হলো আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বে সৎ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। উল্লেখিত ছবিতে (বাঁ থেকে) জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লং, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলাবার্গ, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

hasina in 3rd honest leader in world

ছবি: সংগৃহীত
প্যারাডাইস পেপারস আর পানামা পেপারস নিয়ে যখন কলঙ্কিত বিশ্ব রাজনীতি। রাজনীতির সঙ্গে যখন দুর্নীতি আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যাচ্ছে, তখন তার আশ্চর্য ব্যাতিক্রম কয়েকজন। পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস, বিশ্বের ৫ জন সরকার রাষ্ট্রপ্রধানকে চিহ্নিত করেছেন, যাদের দুর্নীতি স্পর্শ করেনি, বিদেশে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, উল্লেখ করার মতো কোনো সম্পদও নেই। বিশ্বের সবচেয়ে সৎ এই পাঁচজন সরকার প্রধানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্ব রাজনীতিতে যাদের সৎ ভাবা হতো, যাদের অনুকরণীয় মনে করা হতো- তাদের অনেকেই কলঙ্কিত হয়েছেন পানামা পেপারস এবং প্যারাডাইস পেপারসে। রানি এলিজাবেথ থেকে শুরু করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডার নাম এসেছে অনৈতিক আর্থিক লেনদেনে। পানামা পেপারস এর ধাক্কায় মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন নওয়াজ শরিফ, আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ডুর ডেভিড গুনলাগসন। তথাকথিত সৎ দেশগুলোকে কাঁপিয়ে দিয়েছে গোপনে কর স্বর্গে বিনিয়োগের ফাঁস হওয়া তথ্যভান্ডার।
বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স’ এই প্রেক্ষাপটে সৎ নেতার সন্ধান করেছে। ৫ টি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নেতৃত্বের সততার মান বিচার হয়েছে। প্রথম প্রশ্ন ছিল, সরকার/রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে তিনি কি তাঁর রাষ্ট্রের বাইরে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, ক্ষমতায় আসীন হবার পর তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদ কতটুকু বেড়েছে। তৃতীয় প্রশ্ন ছিল, গোপন সম্পদ গড়েছেন কিনা। চতুর্থ প্রশ্ন সরকার/রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ আছে কিনা। আর পঞ্চম প্রশ্ন ছিল, দেশের জনগণ তাঁর সম্পর্কে কী ভাবেন?
এই ৫ টি উত্তর নিয়ে পিপলস অ্যান্ড পরিটিক্স ১৭৩ টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করেছে। এই গবেষণায় সংস্থাটি এরকম মাত্র ১৭ জন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান পেয়েছেন যাঁরা শতকরা ৫০ ভাগ দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৭৩ জন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ও সৎ সরকার প্রধান হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। ৫ টি প্রশ্নে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৯০। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লং, ৮৮ পেয়ে সৎ সরকার প্রধানদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন। ৮৭ নম্বর পেয়ে এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮৫ নম্বর পেয়ে বিশ্বে চতুর্থ সৎ সরকার প্রধান বিবেচিত হয়েছেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলাবার্গ। আর ৮১ নম্বর পেয়ে এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্সের গবেষণায় দেখা গেছে, শেখ হাসিনার বাংলাদেশের বাইরে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। সংস্থাটি গবেষণায় দেখেছে, বেতন ছাড়া শেখ হাসিনার সম্পদের স্থিতিতে কোনো সংযুক্তি নেই। শেখ হাসিনার কোনো গোপন সম্পদ নেই বলে নিশ্চিত হয়েছে পিপলস অ্যন্ড পলিটিক্স। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ৭৮ ভাগ মানুষ মনে করেন সৎ এবং ব্যক্তিগত লোভ লালসার উর্ধ্বে। তবে, তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে কিছু দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে সংস্থাটির গবেষণা প্রতিবেদেন উল্লেখ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.