গোলাম নবী॥ সৌদি আরবের রিয়াদে ৪১টি মুসলিম দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী সম্মেলন। আজ সকালে রিয়াদের একটি হোটেলে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এ সম্মেলনের মুল থিম হচ্ছে “সন্ত্রাস বিরোধী সহযোগিতা”।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিভিন্ন দেশ থেকে সন্ত্রাসবিরোধী সম্মেলনে যোগ দিতে আসা প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের স্বাগত জানান। বাংলাদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা (অবঃ) মেজর জেনারেল তারিক আহম্মেদ সিদ্দিকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল সম্মেলনে যোগদান করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ডঃ এম. ডি. নজরুল ইসলাম ও ডিফেন্স এ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহআলম চৌধুরী ও সম্মেলনে যোগ দেন।
সৌদি যুবরাজ বিন সালমান সম্প্রতি মিশরে মসজিদে বোমা হামলায় প্রায় ৩০০ মুসলিম নিহতের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় যুবরাজ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ও শক্তিশালী উপায় খুঁজে বের করার সময় এসেছে বলে জানান।
মূলত মতাদর্শ, যোগাযোগ, জঙ্গি-সন্ত্রাসী অর্থায়ন এবং সামরিক এই চারটি বিষয়ে জোটের সদস্য দেশগুলো সন্ত্রাস বিরোধী প্রচেষ্টাকে একত্রিত ও সমন্বয় করার জন্য কাজ করবে। সন্ত্রাসবাদের হুমকি যা মুসলিম ও অমুসলিম দেশগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং ইসলামের ভাবমূর্তিকে বিকৃত করছে তা নিয়ে কাজ করবে জোটের সংগঠন -আইএমসিটিসি।
সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের প্রধান (অবঃ) মেজর জেনারেল তারিক আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ তার ভূখন্ড ব্যবহার করার অনুমতি দেয় না।
তিনি সম্প্রতি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনুপ্রবেশের বিষয়টি উত্থাপন করেন। রোহিঙ্গাদের তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদের মুল কারণ উদঘাটনের বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেন।
প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা সৌদি আরবকে জোট গঠনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশের নীতি ও সামর্থ্য অনুযায়ী অন্যান্য অ-সামরিক খাতে তথ্য ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া, গবেষণা ও সহযোগিতার মাধ্যমে জোটে অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মেদ বিন সালমান বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার সবচেয়ে বড় বিপদ আমাদের প্রিয় ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ অপপ্রচার ছড়ানো, আমরা এটা ঘটতে দিব না। বিগত বছরগুলোতে সন্ত্রাসবাদ প্রায় প্রতিটি দেশে বিস্তার লাভ করেছে, এখন থেকে এই জোট সদস্য দেশগুলোর সাথে একত্রে কাজ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
যুবরাজ বিন সালমান আরও বলেন, এই সম্মেলন একটি স্পষ্ট সংকেত পাঠাচ্ছে যে, তারা এখন থেকে “সামরিক, আর্থিক, গোয়েন্দা এবং প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য একসাথে কাজ করবে”।
বৈঠকে আইএমসিটিসি’র ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদুল্লা আল-সালেহ জোটের কৌশল, শাসন, কার্যক্রম এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনাগুলি তুলে ধরেন।