পাবনায় গিয়ে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী, না খেয়েই চলে এলেন

আপন, পাবনা প্রতিনিধি॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসি মুখেই দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কংক্রিট ঢালাই কাজের শুভ সূচনা করেন। কিন্তু নানা কারণেই পাবনায় এসে ক্ষুব্ধ হন তিনি। যে কারণে দুপুরে না খেয়েই প্রধানমন্ত্রী পাবনা ত্যাগ করেন বলে জানা গেছে। সূত্র : সংবাদ                                                                                                                       pm engree in pabna
খাবারের দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর না খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে খাবারের দায়িত্বে থাকা পাবনা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যান তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী আসার আগের দিন বুধবার দুপুরে কয়েকজন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় গিয়ে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে তমাল শরীফের হাতে লাঞ্ছিত হন। খবরটি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কানে পৌঁছায়। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হন তিনি।
জানা গেছে, প্রকল্পের মূল কাজ উদ্বোধনের পর এই নিয়ে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর কাছে জানতে চান তিনি। এ সময় রোষালন থেকে বাঁচতে তার পুত্র পাগল বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান।
সত্য গোপন করায় ভূমিমন্ত্রীর ওপর নাখোশ হন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পাগল হলে কেন তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করেননি? এ সময় সরকারের উন্নয়ন কারও দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এর আগেও মন্ত্রীপুত্র তমাল শরীফ স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করেন। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তার এসব কর্মকান্ড ফলাও করে প্রকাশ পায়। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।
সুধি সমাবেশে স্থানীয় মন্ত্রী হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। তবে, তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করার চেষ্টা থাকলেও দীর্ঘ বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি তাকে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে সুধি সমাবেশে আমন্ত্রিতদের দুপুরের আপ্যায়নের ব্যবস্থা আছে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
ঐতিহাসিক এই প্রকল্প উদ্বোধনের পর আগত অতিথিরা ঘোষণা মোতাবেক দীর্ঘক্ষণ খাবারের জন্য অপেক্ষা করার পর জানতে পারেন, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীসহ হাতেগোনা কয়েকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এরপর আমন্ত্রিত অতিথিরা খানিকটা বিব্রত হয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। শুধু তাই নয়, ঢাকা থেকে আগত এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের জন্যও ছিল না আপ্যায়নের কোন আয়োজন।
বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজর এড়ায়নি। যিনি কোন অনুষ্ঠানে নিজে খাওয়ার আগে সাংবাদিকদের খাবার দেয়া হয়েছে কি-না তা জানতে চান, সেই প্রধানমন্ত্রী এমন অব্যবস্থাপনা দেখে দুপুরে না খেয়েই ঢাকায় রওনা হন বলে অনেকের ধারণা।
এমন একটি মেগা প্রকল্পের মূল কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকরা যেখানে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করবেন, সেটি না করে উল্টো নানা অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন তারা। আয়োজকদের এমন উদাসীনতায় শুধু স্থানীয় সংবাদকর্মীরাই নয়, ঢাকা থেকে আগত সাংবাদিকরাও সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। আপ্যায়নের আয়োজন না করেও প্রধানমন্ত্রীর সামনে আপ্যায়নের ঘোষণা দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার অপচেষ্টা করা হয়েছে বলেও মনে করেন অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.