শেখ কামাল সুমন॥ আওয়ামী লীগের ইতিহাস দেখিয়ে শেখ রেহানা বলেছেন, ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পর থেকে যোগ্যতা এবং নেতৃত্বের গুণেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব বদল হয়েছে। সব কিছুই হয়েছে জনগণের অভিপ্রায়ের বহি:প্রকাশ থেকে। পরিবারের কাউকে উত্তরাধিকার সূত্রে নেতা বানাতে হবে এমন ভাবনা আওয়ামী লীগ কখনোই লালন করে না।’
সম্প্রতি লন্ডনে স্থানীয় কয়েকজন বাঙালির সঙ্গে আলাপচারিতায় এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা। তিনি আগত প্রবাসীদের বলেছেন, ‘প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশগ্রহণের কোনো ইচ্ছা আমার নেই। বুবু (শেখ হাসিনা) আব্বার স্বপ্ন পূরণের কাজ করছেন। মেয়ে ব্রিটিশ এমপি। তাঁদের সহযোগিতা করাই আমার কাজ।’ স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাঁকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করলে, তিনি তার জবাব এভাবেই দেন।
ওই আলাপচারিতায় শেখ রেহানা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এটা কোনো পরিবারতান্ত্রিক দলও নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই জনগণের আকাক্ষা থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া একটি দল। যে দলটি প্রকৃত অর্থেই বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন।’
তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর ৮১ তে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতা হয়েছেন কর্মীদের আকাক্ষার প্রতিফলন হিসেবে। আরোপিত ভাবে নয়। আওয়ামী লীগের কর্মীদের দাবির মুখেই শেখ হাসিনা সেদিন আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছিলেন।’
শেখ রেহানা মনে করেন, ‘শেখ হাসিনার পর দলের কর্মীরা যাকে তাঁদের পরবর্তী নেতা হিসেবে পছন্দ করবেন তিনিই হবেন পরবর্তী নেতা। এটা বঙ্গবন্ধু পরিবারের বাইরেও কেউ হতে পারে। রাজনৈতিক ইস্যুতে আওয়ামী লীগের মৌলিক পার্থক্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি বা উপমহাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মৌলিক পার্থক্য এখানেই। শুধুমাত্র পরিবারের সদস্য এজন্য দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী হলেও তাঁকে নেতৃত্বে রাখতে হবে এমন নীতিতে বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন না, শেখ হাসিনাও বিশ্বাস করেন না।’
পরিবারের সদস্যদের রাজনীতিতে আসা নিয়ে শেখ রেহানা বলেন, জয়, পুতুল, ববি কিংবা অন্য কেউ আওয়ামী লীগের পরবর্তী নেতা হবেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে, জনগণই এই সিদ্ধান্ত নেবে। উপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে হবে না। এটাই আওয়ামী লীগের গৌরব, এটাই আওয়ামী সৌন্দর্য।
আগামী দিনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়ে তিনি বলেন, জনগণের স্বতস্ফূর্ত আকাক্ষার প্রতিফলনই ঘটবে আওয়ামী লীগের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচনে। মিষ্টি হেসে বলেছেন, ‘এটা তোমাদের নিশ্চিত করতে পারি, সেই নেতা আমি না।’