বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড মাত্র ২.৬ ডিগ্রি! ৬ জনের মৃত্যু

টিআইএন॥ শীত এবং শীতের তীব্রতা বরাবারের ন্যায় এবারও উপভোগ করে যাচ্ছে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ। শীতের সময়ে শীত আর গরমের সময়ে গরম এই দুটিই যেন উত্তরাঞ্চলের মানুষের প্রান এবং স্পন্দন হয়ে জড়িয়ে রয়েছে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে সেখানে গত সোমবার সকালে তাপমাত্রা ছিলো মাত্র ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অঞ্চলে এর আগে এত কম তাপমাত্রার কোনো রেকর্ড নেই।  Record cold in bd
গত ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। দেশের উত্তরের শেষ প্রান্ত পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে ১৯৬৮ সালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। সৈয়দপুর ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর থেকে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানান, শৈত্যপ্রবাহ এখনো পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে দুএকদিনের মধ্যে কমতে শুরু করবে। গত কয়েকদিনের তীব্র শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ প্রায় সব জায়গাতেই চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষজন। ইতিমধ্যেই একজনের মৃত্যুর খবরও এসেছে।
নীলফামারীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে সৈয়দপুর ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। রাজধানী ঢাকায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরও দু-এক দিন এই শৈত্যপ্রবাহ থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, সৈয়দপুর ও ডিমলায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারা দেশে আরও দু-এক দিন এমন পরিস্থিতি থাকবে। এরপর থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
গত রোববার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপরে রাজশাহীতে ঠান্ডা ছিল বেশি। সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারের টেকনাফে ২৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তরের রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল ও সীতাকুন্ড অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
তীব্র ঠান্ডায় আর ঘনকুয়াশায় কনকনে শীতে কাহিল সারাদেশ। সূর্য মামার দেখা নাই, তাই ঘন কুয়াশা চারপাশ জুড়ে উড়েছে ধোয়া হয়ে। যানবাহনগুলো হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। শীতের তীব্রতা যেন কুয়াশার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কুয়াশা ও শীতকে হার মানাতে বইছে শীতল বাতাস। সব মিলিয়ে ঘন কুয়াশা তীব্র শীতের পাশাপাশি শীতল বাতাসে কাহিল হয়ে পড়েছে সারাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.