জিয়া পরিবারের সৌদি অর্থ হালাল

ছানাউল্লা সুমন, সৌদি প্রতিনিধি॥ যাহা রটে তা বটে। এই সংবাদ শিরোনামে যে লেখা শুরু হয়েছিল তা অধ্যায় এখন শেষ প্রান্তে। কিন্তু যে দু:নার্ম অর্জন হয়েছে তা কিন্তু শেষ হবার নয়। যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় এই অপবাধের যন্ত্রনা ভোগ করে যেতে হবে। আর এই অপবাদ সয্য করতে হবে খোদ বিএনপি নেতা ও কর্মী এবং সমর্থকদের পর্যন্ত। কারণ তারাই দুর্নাম অর্জনে সহায়তা করেছিলেন। সৎ পাত্রে কণ্যা দান যে বিষয়টি রয়েছে তা কিন্তু বাই পাস করিয়েই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। আর এর দায়িত্বের ফলই হলো আজকের এই দুর্নাম।
সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের ৫০০ কোটি টাকা জব্দ হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫০ কোটি টাকা জরিমানা দিয়ে জব্দকৃত অর্থের বাকি ৩৫০ কোটি টাকা বৈধ করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের আল-তামিমি অ্যান্ড কোং ল ফার্মের উদ্যোগে সম্প্রতি এই অর্থ হালালকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে সৌদি আরবের একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।   jia poribar money clear
সৌদি আরবের একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সৌদি দুর্নীতি দমন বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সৌদি রাজপরিবারসহ কয়েকজন বিদেশির সেখানে লগ্নিকৃত অর্থ বৈধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। ৩০ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে সৌদিতে অবৈধ অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এই সুযোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি অর্থ বৈধ করেন সৌদি প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালাল। আর বিদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জরিমানা দিয়ে সৌদিতে অর্থ বৈধ করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। এর পরই আছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তিনিও বড় অংকের জরিমানা গুনেই অর্থ বৈধ করেছেন। আর ৩০ শতাংশ হারে ১৫০ কোটি টাকা জরিমানা দিয়ে অর্থ বৈধ করেছে জিয়া পরিবার। জরিমানার পরিমাণ বিবেচনায় জিয়া পরিবারের অবস্থান তৃতীয় সর্বোচ্চ।
অর্থ বৈধ করা বিষয়ক দুর্নীতি দমনের কমিটিতে অংশ নিয়ে জিয়া পরিবারের নিয়োজিত ল ফার্ম আল-তামিমি অ্যান্ড কোং জানায়, বেগম জিয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে দেশের জনগণ খুশি হয়ে জিয়া পরিবারকে ওই অর্থ দিয়েছে। তবে নিরাপত্তার কারণে এবং বাজেয়াপ্তের আশঙ্কায় ওই অর্থ সৌদিতে এনে বিনিয়োগ করেছে জিয়া পরিবার। জানা গেছে, ৩০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে বৈধ করা অর্থ সৌদিতেই লগ্নি করতে হবে। জিয়ার পরিবারের নিয়োজিত ল ফার্ম জরিমানা দিয়ে সৌদিতে অর্থ লগ্নি রাখার শর্তও মেনে নেয়।
গত ৩০ নভেম্বরে ‘সৌদিতে জিয়া পরিবারের ৫০০ কোটি টাকা জব্দ‘ শিরোনামে প্রতিবেদনে জিয়া পরিবারের সৌদিতে অবৈধ সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। এর আগেই অবশ্য বিশ্ব গণমাধ্যমে সৌদি আরবে প্রিন্সসহ বিদেশি বিভিন্ন রাজনীতিবিদের অবৈধ অর্থ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। আর জিয়া পরিবারের অবৈধ অর্থের খবর অনেক গণমাধ্যমে এলেও তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করে বিএনপি। তবে বিএনপির ওই দাবি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যেই জিয়া পরিবারের সৌদি অর্থ রক্ষায় ল ফার্ম নিযুক্ত করার খবর গণমাধ্যমে আসে। এই বিষয়ে ‘জিয়া পরিবারের অবৈধ অর্থ রক্ষায় ল ফার্ম’ । ডিসেম্বরের শুরুর দিকেই জিয়া পরিবারের নিযুক্ত হওয়া ল ফার্ম আল-তামিমি অ্যান্ড কোং তাদের নামের প্রতি সুবিচার করে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে মাত্র মাসখানের মধ্যেই সৌদিতে জিয়া পরিবারের অবৈধ অর্থ বৈধ করতে সক্ষম হলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.