টিআইএন॥ পদত্যাগ একটি স্বাধীন মতামত প্রকাশের পথ ও মত এবং অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগ হওয়া ভাল এবং সময়ের প্রয়োজনে এই অধিকার প্রয়োগ দৃষ্টান্তও হতে পারে। কিন্তু কখনো কখনো এই অধিকার প্রয়োগ একটি বিরুপ ধারনারও জন্ম দেয়। আমাদের দেশে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘটনা বিরল। তারপরও যা যৎ সামান্য তাই বা কম কি। কিন্তু এই যে বিচারপতিদ্বয়ের পদত্যাগ তা কিন্তু যথোপযুক্ত বা শুভ দৃষ্টিতে দেখার নয়।
কারো প্রতি অসম্মান প্রদশর্নের উদ্দেশ্যে এই লিখা নয় বরং সম্মান ও আগামীর পাথেয় হওয়ার নিমিত্তেই এই লিখা। কিছুদিন আগে আমাদের একজন বিতর্কিত বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। তিনি পদত্যাগ করার মত যথেষ্ট উপাদান থাকা সত্তেও পদত্যাগ করেননি বরং বেহায়াপনার সমস্ত কিছুই করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন হামছে বড়া কোন হে। আসলে বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতার প্রথমেই যেই দিকটি দেখা প্রয়োজন সেখানে ঠান্ডা মস্তিঙ্কের অধিকার এবং নি:লোভ ও পরোপকারী ন্যায়বিচারক সুলভ মনোভাবাপন্ন মানুষ। এর ব্যতয় ঘটলে যা হয় তাই দেখিয়েছেন সদ্য বিদায়ী বিচারপতি সিংহা সাহেব। ওনার শুরু থেকে শেষটা পর্যন্ত বিতর্ক রেখেই ইতিহাস সৃষ্টি করে গেলেন। বিচার বিভাগ এমন অতিকথক ও ক্ষমতা দেখিয়ে বাগারম্বর দেখানো বিচারপতি আর দেখবে কিনা তা সন্দেহ আছে।
ওনি দেশবাসির ইচ্ছা ও আকাঙ্খাকে জলাঞ্জলি দিয়ে বিতর্কিত কাজগুলো করে গেলেন এবং জন্ম দিলেন এক পদত্যাগ নাটকের বিরল দৃষ্টান্ত। ওনার লোভ ও লালসা এবং ষড়যন্ত্রের সকল নীলনকসা প্রকাশিত হওয়ার পরই তিনি মরনকামড় দিয়েছিলেন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে; কিন্তু বাস্তবতা তাঁর পক্ষে সায় দেয়নি। ওনি যে দৃষ্টান্তগুলি রেখেগেছেন তা যেন আর কেউ অনুসরণ না করে এটাই হউক আমাদের আগামীর প্রত্যাশা। কিন্তু নিজের চাওয়া ও পাওয়ার হিসেব নিকেশ সবারই থাকে এবং থাকাটা স্বাভাবিক। জৈষ্টতা এবং দায়িত্ব পাওয়া ও বিশ্বস্ততা অর্জন করাও একটি সম-সাময়িক প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভরশীল।
সচিবদের সর্বোচ্চ এবং সর্বশেষ পদোন্নতি হলো অতিরিক্ত সচিব। কিন্তু কি সবাই পুর্ন সচিব হন? না হন না কারণ এটাও নির্ভর করে পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক আস্থা ও বিশ্বাসের উপর। এতে কি সবাই অসন্তুষ্ট হয় ….. হয়ত কেউ হয় আবার কেউ হয় না। কিন্তু দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তার প্রতিফলনতো কেউ দেখান না। এমনকি বিরাগভাজন হয়ে পদত্যাগও করেন না। কিন্তু এই যে না পাওয়ার বেদনায় আমাদের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি মহোদয় পদত্যাগ করলেন তা কিন্তু একটি নেতিবাচক দৃষ্টান্তই বহন করে। ওনি পদত্যাগ না করলেও পারতেন। আর এটাই ছিল স্বাভাবিক ও বিচার বিভাগের অতীতের রীতি ও রেওয়াজের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। কিন্তু এই তাৎক্ষণিক পদত্যাগই কিন্তু সিংহা কাতারে দাঁড় করাতে সুযোগ সন্ধানীরা চেষ্টা করবে এবং সুযোগ পাবে।
রাগ, আকাংখা এবং পদোন্নতির প্রত্যাশা সবারই থাকবে; একজন রক্তে মাংসে গড়া মানুষের জীবনে। তবে এর উদ্ধে উঠতে পারাই হলো মহৎ এবং দায়িত্বশীল মানুষদের কাজ। আর এই কাজে উর্ত্তীর্ণ হতে পারার কারণের আজ তারা বিচারপতি এবং রাষ্টের গুরুত্বপূর্ণ কাজে অধিষ্ঠিত। ঐ অধিষ্ঠিতরাই এখন যা দেখাচ্ছেন তা কাম্য নয়। বরং তাদের আরে পরিশিলিত এবং পরিমার্জিত ও ধৈয্যশীল আর ক্ষমার দৃষ্টান্তে উদার হওয়া যুগের দাবি। আগামী দিনে আমরা এই আশাটুকু করতেই পারি। আশা করেই আগামির শুভ কামনা করছি।