“উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে ‘রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা”।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৫৬তম অধিবেশনে একথা বলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।
অধিবেশনের প্রাক্কালে জাতিসংঘ মহাসচিবের উত্থাপিত রিপোর্টে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনশীলতা, খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, অতি দারিদ্র্য হ্রাস, মেয়েদের স্কুলে ভর্তি ও মেধার উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নে পোষাক শিল্পের ভূমিকা; নবজাতক, শিশু ও মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যের উন্নয়নে বাংলাদেশ যে সফলতা অর্জন করেছে তা বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে। রিপোর্টটিতে বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত উন্নয়ন তুলে ধরার জন্য রাষ্ট্রদূত মাসুদ তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান।
দারিদ্র্য নির্মূলের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন- বাংলাদেশের প্রাধিকারভুক্ত একটি উন্নয়ন কৌশল উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ফলে মানব উন্নয়ন সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দারিদ্র্য বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। দারিদ্র্যের হার কমে ২৩.২ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ১৯৯১ সালে ছিল ৫৬.৭ শতাংশ। জিডিপি হার প্রায় এক দশক যাবৎ আমরা ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশের উপরে রাখতে পেরেছি। এ হার ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দাঁড়িয়েছে ৭.২৮ শতাংশ। মাথাপিছু আয় বৃৃদ্ধি পেয়ে ১৬১০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরে ছিল ১৪৬৫ মার্কিন ডলার।
মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্য-পুষ্টি-সেবা, খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, মানবিক উন্নয়নে বিনিয়োগ, সফলভাবে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি, শিশু মৃত্যু হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে অব্যাহত সাফল্য বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নের উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “এসকল উন্নয়ন সত্ত্বেও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ফলে আমরা আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি, যা আমাদের চলমান উন্নয়ন প্রচেষ্ঠায় একটি বড় বাধা।