এই দিন দিন না আরো দিন আছে

Vector-Smart-Objectচারিদিকে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার মধ্যেই আবর্তিত হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গতি। এই গতিরোমন্থনে মাঝে মাঝে স্থবিরতা কাজ করে বিভিন্ন কারণে। কিন্তু সেই স্থবিরতা কাটিয়ে উঠাও একটি বিজয় বা স্বাধীনতা ভোগ করার নৈমত্তিক উপাদান। এইতো চলমান উন্নয়ন গতি এবং এর গতিশীলতার ধারাবাহিকা অব্যাহত রাখতে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে দেশের উন্নয়নকামী মানুষগুলো প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে উন্নয়ন সংগ্রাম। আর এই সংগ্রামে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, অর্থনীতি, সমাজ, সংসার এবং সর্বোপরি ভাবমুর্তী। এই ভাবমূর্তীকে নষ্ট করার লক্ষ্যে এবং উন্নয়ন সংগ্রামকে স্তব্ধ করে দিতে নানান চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে দেশ বিরোধী চক্র। দেশী ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই কুটচালের মহড়ায় পিষ্ট হয়ে আমরা কখনো কখনো থকমে দাঁড়াই এবং পরক্ষণেই দ্বিগুন শক্তি, সাহস, মনোবল এবং জ্ঞান ও বুদ্ধি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং উন্নয়কামী জনতা এখন সক্রিয় তাই কোন অপঘাতই বা ষড়যন্ত্রই আমাদের থামাতে পারে না। দাবিয়ে রাখতে পারে না আমাদের অগ্রগামিতার গতিকে। তাই এই দিন দিন-না আরো দিন আছে……. এইদিনের নিয়ে যাবে সেই দিনেরও কাছে। হ্যা সত্যিই চমৎকার এই কথামালাটি। একজন অন্যায় করে, লুটপাট করে পার পেয়ে যাবে এটা কখনো হয় না। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ছিল অন্যায় এবং দুর্নীতি ও মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের মুখোমুখিা লড়াইয়ে জয় পড়াজয়ের দিন। শেষতক মিথ্যা পরাজিত হয়েছে এবং সত্য জয়যুক্ত হয়েছে। জাতির ভাগ্যাকাশ থেকে কালো মেঘ দুর হয়েছে। ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। মিথ্যার আবরণে যে কালো মেঘ দেখা দিয়েছিল সমগ্র দেশে; অপশক্তির হুংকারে পিন পতন নিরবতায় ছিল যে বাংলাদেশ; কিন্তু না সেই অপশক্তির হুংকার আর মিথ্যার কালোমেঘ কেটেগিয়ে আজ প্রাশান্তির প্রলেপে দেশ ও জাতি। হ্যা কিছু যে মনোবেদনা ও জ্বালা যন্ত্রনা হচ্ছে না তা কিন্তু নয়; ঐ যে অপশক্তির কালো মেঘ এবং মিথ্যার কথামালায় বিদ্ধ অবুঝ ও অন্ধবিশ্বাসে বিশ্বাসি সরলমনা আবেগপ্রবণ মানুষগুলো এখনও চৈতন্য ফিরে না পেয়ে দিশেহারা। কিন্তু তাদের সেই পৌড়ানের কথায় এখনও নিমজ্জিত রয়েই গেল- যে চিলে কান নিয়েছে শুনা মাত্র চিলের পিছনে ছুটা…. নিজের কানে হাত না দিয়েই অন্ধকারের ঘোরে থাকা মাত্র। কানে হাত দিয়ে যাচাই বাছাই করার বালাই এখনও তাদের জীবনে আসে না। হয়ত আসবে সামনের দিনে। এই মানুষগুলোর জন্য আমার মায়া হয় কারণ এরানা তাদের সর্বস্বদিয়ে এখন পথের কাঙ্গাল বা পথে বসার মত অবস্থা। একটি ঘটনা মনে পড়ে আমার, ছোট বেলায় দাদা বলত আহাম্মক। আর আহাম্মকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য একদিন একটি গল্পও বলেছিল যা দাদারই কোন এক দাদার মাধ্যমে ঘটেছিল। গল্পটি হলো এমন যে, দাদার ঐ দাদা বর্ষাকালে পাটের আশ ছড়ানোর পর পানিতে ধূঁয়ে পরিস্কার করছে। এমন সময় যে নৌকাটিতে পরিস্কার করা পাটগুলো রাখছে সেই নৌকাটি বাতাসে একটু দূলছে; সেই দেখে ঐ দাদার দাদা রেগে গেল এবং বলল নৌকা তোমাকে আমি মজা দেখাচ্ছি। এই বলেই নৌকার খুটি বা লম্বা বাশের লাঠিটিকে চখুইর বলে আমাদের গ্রামের ভাষায়; ঐ চখুরই নিয়ে দীর্ঘ ৫-৬ মাইল নৌাকাটিকে নিয়ে ঘুরে আসলো। যাতে করে ওনার ২ ঘন্টা সময় এবং শারিরিক শক্তির অপচয় হলো। কিন্তু তিনি কি ভাবছেন জানেন; ঐ নৌকাটির শাস্তি হয়েছে, পরিশ্রম হয়েছে। আহারে বেচারা দাদার দাদা।
শৈশবে ঐ গল্প শুনেই আমার অনেক খারাপ লাগছিল ঐ দাদার দাদার জন্য। কারণ ওনি কত বোকা বা সহজ সরল ও আবেগ প্রবন ছিলেন। যা বাস্তবতার সঙ্গে কোন মিলই ছিলনা। সেই দাদার দাদারা এখনও আছেন; যার জন্য তারা একটি জলন্ত অন্যায়কে, চুরিকে বা দুর্নীতিকে চোখে দেখতে এমনকি কানে শুনতে অথবা হৃদয় দিয়ে বুঝতে অক্ষম। তাই এই ডিজিটাল যুগে পদার্পনের পুর্বে এই ধরনের অন্যায় করা সহজ ছিল। আর অন্যায় করে মিথ্যার আবরণে পার পেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আজ এই উন্মুক্ত জামানায় ডিজিটাল যুগে আর সেই দাদার দাদাদের মাধ্যমে অন্যায় করে পার পাওয়া যাবে না। ধরা খেতে হবে এবং শেষতক অন্যায়ের শাস্তি নিয়ে শেষ ঠিকানা শ্বশুর বাড়ির প্রথমদিকের আড়াইউল্লার মত জেল-হাজতে বসবাস করতে হবে। এইতো আমাদের দেশের তিন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিশাল ক্ষমতার মালিক, দাম্ভিক ও অহংকারী ব্যক্তিটি কি ভাবছিল যে দাদার দাদারাও চেতনা ফিরে পেতে পারে এবং সেই জাগ্রত চেতনার ধারক ও বাহকদের দ্বারাই আইনের হাতে আত্মসমর্পন করতে হবে। হ্যা হয়েছে…. ক্ষমতার শীর্ষ ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাস্তার ভিক্ষক বা অন্ধ, আতুর, লোলা সকলের ক্ষেত্রেই ইহকালের আইন নামক দুনিয়াবী বিচারের কড়া হাতছানি দিচ্ছে। পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তার বিচারও অপেক্ষা করছে; সুতরাং সাধু সাবধান। দুই বিচারের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে সততায় পূর্ণ হয়ে শান্তির আবরণে প্রশান্তি বিলিয়ে আগামির দিনগুলি অতিক্রান্ত হউক আমাদের সকলের।
এই ঐতিহাসিক রায় নিয়ে কারো তামাসা বা তাচ্ছিল্ল করার কোন কারণ নেই, উ””সিত, উল্লসিত এবং মর্মাহত হওয়ারও কোন কারণ এর অবকাশ নেই। কারণ পৃথিবীতে আসছি একা এবং যাব একা। এই দৃুইদিনের জিন্দিগিতে সমস্ত ভাল এবং খারাপ কাজের হিসার ও দায়বন্ধতা নিজেকেই নিতে হবে। বাবা-মা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, আত্মিয়স্বজনের কেউই আমাদের নিজের দায় কাধে নিতে পারে না। দুনিয়ার বিচারেও না আখেরাতের বিচারেও না। এইতো দেখলেই আপনারা। তাই কেন এই বোকামী। কেন এই স্লোগান, আন্দোলন এবং আশান্তি সৃষ্টি। আসুন শান্তির জন্য রাস্তা খুজে সেই রাস্তা দিয়ে অগ্রসর হই। যাতে ইহকাল ও পরকাল উভয় ক্ষেত্রেই নিজের সৌভাগ্য রুপিত হতে পারে। দৃষ্টান্ত থাকতে পারে ন্যায়, সততার এবং ঘোষিত হতে পারে খোদা বা সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা, গৌরব ও মহিমা।
ধন-সম্মান, জ্ঞান এইগুলো আল্লাহর কাছ থেকে আসে; আর আল্লাহর কাছ থেকে আসা ধন, জ্ঞান ও সম্মান চিরস্থায়ী ও শান্তিময়। দুনিয়ার কাছ থেকে আসা ধন, সম্মান, জ্ঞান অস্থায়ী এবং অশান্তির। তাই সময় থাকতে মনা হুসিয়ার। এই মুজিব পরদেশীর গানের লাইনটিও বাস্তবধর্মী। তাই আসুন আমরা সবাই মিলেমিশে পথ চলি শান্তি বিলিয়ে জীবনের শেষ দিন পার করি এবং পরকালীন জীবনের শুভ যাত্রা শুরু করি এই ইহকাল থেকেই। দু:খ বেদনার মাঝে খুজে ফিরি জীবনের আসল ও প্রকৃত শান্তি, নিশ্চয়তা এবং পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের শান্তির উৎস। এখান থেকেই নিশ্চয়তা নিয়ে চিরস্থায়ী জীবনে পা দিই। এই দিন দিন না আরো দিন আছে এবং এই দিনেরে নিয়ে যাবে সেই দিনেরও কাছে। হ্যা সেই দিনের প্রত্যাশাই হউক মঙ্গল, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিশ্চয়া নিয়ে পরকালীন খোদার আরশে মহল্লায় চিরস্থায়ী বসবাসের স্থান বেহেস্তে গমন। সকলেরই বেহেস্ত নসিব কামনা করে সেই দিনের প্রত্যাশায় এই দিনের আজকের লিখার ইতি টানলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published.