টিআইএন॥ সদ্য উদ্বোধন হয়ে গেলো ডিজিটাল ওয়াল্ড ২০১৬। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন কলে সময়ের প্রয়োজনীয়তা এবং নতুন প্রজ¤েœর চাহিদার যোগান দিয়ে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছার বার্তা দিলেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের তৈরি মানবিক রোবট ধ্রুব’র অনুরোধে সাড়া দিয়ে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করার আগে ইংরেজিতে কিছু কথা বলে রোবট ধ্রুব। প্রধানমন্ত্রী রোবটের এসব কথা উপভোগ করছিলেন। রোবটের অনুরোধ শেষে বুধবার থেকে রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে প্রধান বাটন চেপে তথ্যপ্রযুক্তির এই মহাযজ্ঞ উদ্বোধন করেন।
রোবটটি তৈরি করেছেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির চার শিক্ষার্থী। তারা হলেন ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. রাকিন সরদার, সৈয়দ দিলশাদ হোসেন, বায়েজিদ আহমেদ ও মো. আছির আহসান। তত্ত্বাবধানকারী ছিলেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ। রোবটটি পরে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’-এর ইনোভেশন জোনে দেখানো হয়। এই রোবটটি দেখতে সারাক্ষণই ভিড় লেগে আছে সংশ্লিষ্ট জায়গাটিতে। এই জোনে উড়ছে ড্রোন, দাঁড়িয়ে আছে ডিবোট নামের রোবটসহ অনেক কিছু।
বুধবার থেকে রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে শুরু হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির সবচেয় বড় প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’। চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ এর আয়োজক। প্রদর্শনীতে ‘রূপকল্প: ২০২১’-এর‘ ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের পথে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়। এতে সরকারের ই-সার্ভিসের নানা দিক তুলে ধরা হবে। এ বছর ৪০টিরও বেশি স্টল সরকারের ই-সার্ভিসের বিষয়গুলো তুলে ধরছে।
ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের এবারের প্রতিপাদ্য ‘নন স্টপ বাংলাদেশ।’ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী মেলা ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি ৫টি মোবাইল প্রশিক্ষণ বাসের উদ্বোধন করেন। এই বাসগুলোর মাধ্যমে আগামী তিন বছর আড়াই লাখ গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত নারী প্রশিক্ষণ পাবেন। বাস ৫টি তৈরিতে সহযোগিতা করেছে আইসিটি বিভাগ, মোবাইলফোন অপারেটর রবি ও প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে।
‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’-এর প্রথম দিনে আকর্ষণীয় পর্ব ছিল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স। মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশসহ ৮টি দেশের মন্ত্রী অংশ নেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে এই কনফারেন্সে অংশ নেওয়া মন্ত্রীরা আইসিটি খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রসংশা করেন।
মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ।’ এ খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম গন্তব্যস্থল হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে বিশ্বে অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যা অনেকরেই ধারণার বাইরে ছিল। ভবিষ্যতে এই ধারাকে আরও উন্নত করতে কাজ করছে বর্তমান সরকার।’
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আউটসোর্সিং খাতে বাংলাদেশ অচিরেই ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে। সেই লক্ষ্যে আইসিটি খাতকে প্রাধান্য দিচ্ছে বর্তমান সরকার।’
সৌদি আরবের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপমন্ত্রী খালেদ বিন ফারেজ আল ওতাইব, নেপালের তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী সুরেন্দ্র কুমার কারকি, উগান্ডার তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী নান তাবা আইদা এরিওস, ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী লাইওনপো ডিএন ধুংইয়েল, সুরিনামের যোগাযোগ ও পর্যটনমন্ত্রী আন্দোজো রুশল্যান্ড, ভিয়েতনামের তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার হোয়াং বিন বাও ও মালদ্বীপের অর্থ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আশমালী এই কনফারেন্সে অংশ নেন।
প্রথম দিন বিকালে ছিল ই-কমার্স নিয়ে সেমিনার। ‘হাউ টু এক্সপান্ড ই-কমার্স টু রুরাল এরিয়াস’ শিরোনামের এই সেমিনার আয়োজন করে ই-ক্যাব। সেমিনারে শহুরে এলাকার পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় কিভাবে ই-কমার্স সেবা সম্প্রসারণ করা যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। বক্তারা ইন্টারনেট সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে কিভাবে ই-কমার্সের আওতায় আনা যায়, সে বিষয়ে কৌশল ও উপায় খুঁজতে বলেন উদ্যোক্তাদের। তারা মনে করেন, ইন্টারনেট সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর মাঝে ই-কমার্সের বিপুল চাহিদা রয়েছে।