মার্চ, প্রতিশ্রুতি ও প্রতিজ্ঞার এবং রূপদানের

Vector-Smart-Objectমার্চ মানে অনেক প্রতিশ্রুতি ও প্রতিজ্ঞার এবং এর বাস্তব রূপদানের একচ্ছত্র চলমান ও দৃশ্যমান রুপরেখার; যা ১৯৬৯, ’৭১ এবং ’৭৫ পরবর্তী সময়ে দেখা দিয়েছিল। কখনো কখনো সুনিশ্চিতভাবে লক্ষ্যে পৌঁছা গেছে আবার কখনো কখনো রণে ভঙ্গও হয়েছে। তবে বিশালাকার ভাবে বলতে গেলে লক্ষ্যে পৌঁছার পাল্লাই বেশী ভারী।
আমরা এই মার্চেই ওয়াদা করি যেন আগামীর প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারি। সেদিন প্রাধনমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া যে রূপরেখা: আগামীর জন্য প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা দিয়েছেন তার অক্ষরে অক্ষরে পালন বা বাস্তবায়কল্পে এখন থেকেই কাজ করে যেতে হবে। পিছুটান বা পিছপা হলে চলবে না। প্রতিশ্রুতি রক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে হবে। সেদিন যেভাবে বঙ্গবন্ধুর আদেশ ও হুকুম পালন করেছিল সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী তা বিশ্ববাসী দেখেছে এবং এর বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে চির সবুজ এর মাঝে রক্তে বহমান বাংলাদেশ।
সেদিনের রেইসকোর্স ময়দানে যে কবিতা আবৃত হয়েছিল এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটি যে আদেশ দিয়েছিল তা পুরণ হওয়ার এখন প্রায় দ্বারপ্রান্তে। আর এই চূড়ান্ত অর্জনটুকু ঘরে তোলার জন্য শেখ হাসিনা এইবার সেই রোইসকোর্স এবং বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে আদেশ, হুকুম এবং পরিকল্পনা ও কাজের ছক দেখিয়েছেন তা যে আমরা আক্ষরে অক্ষরে পালন করি এবং সেদিনের ন্যায় আগামীতেও প্রতিশ্রুতী, ওয়াদা এবং আগামীর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করে ফসল ঘরে তুলতে পারি।
প্রশ্ন হলো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় এবং তাঁরই সুযোগ্য তণয়া ও সোনার বাংলার এই শ্যমলিমার দামাল ছেলেরা আজ বিশাল দায়িত্ব নিয়ে ১৬০০মিটার দৌঁড় প্রতিযোগীতাকে পিছনে ফেলে ন্যানো যুগের প্রতিযোগীতায় অবতীর্ণ হয়েছে। শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে নয় বরং বিশ্বকে সামনে নিয়েই দৌঁড়াচ্ছে।
বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্যতা এবং সক্ষমতা অর্জনের প্রায় দ্বাড়প্রান্তে এখন আমাদের দেশ ও এই দেশের রত্মগর্ভা সন্তান ও মা যিনি ইতিমধ্যেই বিশ্ব নেতৃত্বের শ্রেষ্ঠ শিখরে পৌঁছেছেন এবং অর্জন করে নিয়েছেন, সততার, সিদ্ধান্তগ্রহণের, কঠোর পরিশ্রশের, ক্ষমা এবং ভালবাসার, মানবিকতার সহ আরো অন্যান্য অনেক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। যা কিনা দেশ ও দেশবাসির মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশাল দায়িত্ব নেয়ার ক্ষেত্রে পরিক্ষীত দাবিদার মাত্র।
সারা বিশ্ব যেখানে হানা-হানিতে ও বাদা-বাদিতে লিপ্ত সেখানে বাংলাদেশ দেখিয়েছে শান্তির প্রতিচ্ছবি এবং ভালবাসা ও উদারতার জলন্ত এক উজ্বল দৃষ্টান্ত। অভিবাসী এবং নির্যাতিত, নিগৃহীত ও নিপিড়িত মানুষের যেখানে কোন আশ্রয় ও ঠায় নেই, সেখানে বাংলাদেশ দেখিয়েছে এক চমক। বিশাল জনসংখ্যা গ্রহণ করেছে এবং তাদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে মৌলিক অধিকার সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। নিজ চক্ষে না দেখলে বিশ্বাস এমনকি অনুধাবন করা যাবে না।
প্রাকৃতিক বিপর্যন মোকাবিলায় পারদর্শীতা এবং তৎপরবর্তী সময় রিকাভার এর চমৎকার নৈপূণ্যতা আজ বিশ্বদরবারে দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। সবাই আসছে বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে। শুধু তাই নয় সন্ত্রাস যেখানে অনিরাময়যোগ্য ব্যাধী হিসেবে সাড়া পৃথিবীতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এবং রক্তের বণ্যায় ভেসে যাচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত সভ্যতা ও বুদ্ধি এবং বিচক্ষণতা। বাংলাদেশই একমাত্র বিনা রক্তক্ষরণে বিনা বাধায় নিরাপদভাবে ঐ ব্যাধিকে মোকাবেলা করে পুর্ন নিশ্চয়তা দিয়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজমান রেখেছে। এখানেও বিশ্বনেতারা কৌশল শিখার আশায় ধর্ন্যা দিয়ে যাচ্ছে এই দেশের সরকার তথা জনগণের দ্বারে দ্বারে।
এখানেই নয় বিশ্ব অর্থনীতির মন্দাবস্থায় বাংলাদেশের অগ্রসরতা এবং উন্নয়ন আজ বিশ্ববাসীর চোখ বড় এবং মাথা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হিসেবে দেখা দিয়েছে। সকলেই বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে মুখিয়ে আছে আরো কি আছে তা দেখার জন্য। বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যায়গুলো আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গভেষণা শুরু করে দিয়েছে যাতে তারা এই মুলমন্ত্র আয়ত্ব করে তাদের দেশকেও এগিয়ে নিতে পারে। সেই ’৭১ যা শুরু করেছিল তা আজও ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাচ্ছে সেই চেতনা ও মূলমন্ত্রের রুপরেখার পরিচালনায়। পৃথিবীর ১ম সারির নেতারা আসছে এবং শিখছে আর বাংলাদেশ নতুন চমক নিয়ে ধাধায় ফেলে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন দেশে সহযোগীতার জন্য এদেশিয় বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যে বিচক্ষণতার স্বাক্ষর রেখেছে তা সারা পৃথিবী হন্যহয়ে দেখে এবং এই দেশের সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ, নেভি এবং বিজিবি সদস্যদের কাছ থেকে শিখে এবং দেখে দেখে অন্যদেশের বাহীনীগুলো কাজে লাগাচ্ছে।
তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এখন বাংলাদেশ বিশ্ব নের্তৃত্ব নেয়ার দৌঁড়গোড়ায় রয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের সরকার তথা তাঁর প্রতিনিধি এসেছে সেবা এবং পরিকল্পনা ও পরামর্শ নেয়ার জন্য। আমারা স্ইে আঙ্গিকে কাজ করে যাচ্ছি এবং বিভিন্ন দেশের চাহিদার যোগানও দিয়ে যাচ্ছি। এই ক্ষেত্রে গুরুতুল্য ভাব বিসর্জন দিয়ে সেবার মান ও সেবকের দায়িত্ব আরো যতœশীলভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
দুর্নীতি করলে আর পার পাওয়া যাবে না এই কথার যথার্থ বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পাচ্ছি বেগম খালেদা জিয়ার মত শক্তিশালী ক্ষমতার অধিকারীনিকে জেলখানায় আটক রাখার মাধ্যমে। মানবতা বিরোধীদের রায় কার্যকরের মাধ্যমে। জেল হত্যার রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার মাধ্যমে।
যত ষড়যন্ত্রই আসুক না কেন তা সহজে মোকাবেলা করে নতুন কোন পরিকল্পনায় দেশকে এগিয়ে নেয়ার দ্রুত কৌশলী শেখ হাসিনা তাঁর অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছবেই এতে কারো কোন দ্বিমত থাকার কথা নয়। এখনও যারা এই সত্যটি উপলব্দি করতে পারেন নি তাদের আর বোকার স্বর্গে বসবাস করা মানায় না। তাই ঘর থেকে বের হয়ে আসুন এবং সকল সত্যকে মেনে নিয়ে সামনে অগ্রসর হউন। মিথ্যাকে পরিহার করুন। আগামীর জন্য নিজের জীবনের খোরাক সঞ্চয় করুন যা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্রহন ও ব্যবহার করতে পারেন।
যেখানে মানবতা বিপন্ন সেখানেই শেখ হাসিনা। বিপন্ন মানুষের পাশে থেকে এগিয়ে যাওয়া এবং এগিয়ে নেয়াই আমাদের মুল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য হিসেবে বাস্তবায়নাধীন অবস্থার বিরাজমান। “মানুষ মানুষের জন্য এবং জীবন জীবনের জন্য” এখানে মুজিব থেকে মুজিব কন্যা বিপন্ন মানবতার পাশে এবং নিপিড়ীত ও নির্যাতিত অসহায়ের পাশে সহায় সম্বল নিয়ে সমান্তরালে এগিয়ে যাচ্ছেন। এখানেই পার্থক্য আমাদের রাজনৈতিক নেতা এবং উপরস্তরের মানুষদের বৈচিত্রময় রহস্যঘেরা জীবন। যাদের জন্য এবং যাদের কথা বলে কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো। এই নীতি থেকেই মুক্ত হয়ে আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এখান থেকে পিছপা হবার নয় বরং এগিয়ে যাবার।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা এবং কৃষক, জেলে, মুচি ও কুমোড় সকলের এখন এক আশা ও ভরসার জায়গা হলো মুজিব তনয়া শেখ হাসিনা। আর হাসিনাই মমতাময়ী মার্তৃত্ব গুণে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশ এবং জাতিকে। অন্ধকার, কুসংস্কার, অভাব ও অনটনের অবসান ঘটিয়ে শান্তি, স্থিতি, নিশ্চয়তা এবং নূন্যতম মৌলিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জয়ী হয়ে বাকি জীবন স¦াচ্ছন্দ ভোগ করে যাওয়ার প্রয়াসে।
এই দেশের মানুষ মার্চ মাসে দেশ স্বাধীন করার ওয়াদাব্ধ হয়েছিল। আর আজ এই মার্চ মাস থেকেই চলমান উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার অঙ্গিকার নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সেই বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা এবং সেই সুখ ও দু:খের বহমান ¯্রােতে ভাসমান তরি থেকে পাড়ে উঠে এই মজবুত ভিত্তি ঘেড়ে যা আদেশ ও হুকুম দিয়েছেন তা সকলেই বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করা আবশ্যকীয়। ঐক্য এবং ঐক্যবদ্ধতা বজায় রাখার কোন বিকল্প নেই।
আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত যদি থাকে ঐক্য। দশে মিলে করি কাজ হারি যেতে নাহি লাজ। এই কথাটি যথার্থই বাস্তবধর্মী। এর মধ্যেদিয়েই আমাদেরকে আগামীর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। পুনরায় বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিরোধী দল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ বিনির্মানে এগিয়ে আসতে হবে। বিরোধিতা করার অভ্যাস বদলাতে হবে। জনগন এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে সামনে এগুতে হবে যাতে কোন একদিন খোদার নিরূপিত সময়ে দেশ সেবার সুযোগ পাওয়া যায়। নিজের চেষ্টায় লাফালাফি না করে বরং সেবার মনোভাবে পরিচ্ছন্ন উন্নতি সাধন করতে হবে। সেবকের ভূমিকায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে।
খোদা চাইলে যে কোন সময় সুযোগ দিতে পারে। কিন্তু সুযোগ নেয়া এবং সেবা করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। নিজের জন্য নয় বরং অন্যের জন্য কাজ করে যেতে হবে। একটি কথা বলতে হচ্ছে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তিনি সকালে রাজা এবং বিকেলে ফকিরে পরিণত করে থাকেন। তাই আমরা যেন পরিক্ষায় না পড়ি এবং সকালে রাজা ও বিকেলে ফকির এই মতো না হয়। আমরা চাই খোদার আকাঙ্খা ও প্রয়াস আমাদের জীবন ও কর্মের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে তাঁর গুনগান ও গৌরব প্রশংসা করতে।
মার্চ হউক আমাদের প্রতিশ্রুতি, প্রতিজ্ঞা ও এর সঠিক রাস্তব রূপদান এবং আগামী প্রজন্মের জন্য নিয়ামতস্বরূপ মান্না ও ছালুয়ার চেয়েও মহান কিছু রেখে যাওয়ার প্রত্যায় ব্যক্ত করার। চাহিদার যোগানের চেয়ে চাওয়া ও পাওয়ার হিসেবে নিকেশ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে করে এগিয়ে যাব আগামীর তরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.