বিএনপির যাত্রা…উত্থান ও পতন

তাজুল ইসলাম নয়ন॥ বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মস্বীকৃতি পেয়েছিল এবং জনতার মনে নিজেদেরকে জোর করে ঠায় দিয়েছিল। আর এর পিছনে ছিল মিথ্যা আর পাপের পসরা। আর ধীরে ধীরে সেই ঠায় পাকাপোক্ত হয়েও গিয়েছিল। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস এবং ইতিহাসের বিচার ও সৃষ্টিকর্তার উপহাস অগনিত মানুষের আত্মার অভিষাপ একহয়ে যেন আজ প্রতিশোধের ঘ্যারাকলে নিস্পেষিত। বিএনপি হত্যা, ক্যু এবং মিথ্যা রটিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখল করে জনগণকে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়েছিল। যা দিনে দিনে ইতিহাস এবং ডিজিটাল যুগের কল্যাণে ও বৈশ্বিক সততায় স্বষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে মানব মনের গভীরে কেটে বসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় উত্তরাধিকারী হিসেবে স্ত্রী ও সন্তানদের অপরাজনীতি ও লোভ এবং অনাচার সবই যেন মিলে শিশে একাকার হয়ে গিয়ে বিবেকবান সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ঘৃণার জন্ম দিয়েছে। সেই ঘৃণা এবং হীনমন্যতা দিনে দিনে সেই দলের প্রতি আকর্ষণ এবং অনুপ্রেরণা ও স্পৃহা শুন্যের কোটায় নেমে এসেছে।  tajul Islam kutubpalong
পাশাপাশি পরিপক্ক একটি দলের কৌশলের বলি হয়ে দিন দিন তাদের অপকর্মের প্রকাশ এবং প্রতিনিয়ত নেতিবাচক অপকর্ম চালিয়ে মিথ্যা দিয়ে শাক ঢাকার পায়তারা ধরাশায়ী হয়ে ধীরে ধীরে নিমজ্জ্বিত হয়েছে মাত্র। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিজ্ঞ ও সুদুরপ্রসারী কৌশলী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সঙ্গে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং এর প্রকাশও আজ বিএনপির মৃত্যুর জন্য দায়ী। সমর্থক এবং নেতাকর্মীরা মিথ্যাকে মিথ্যা জেনে, অন্যায়কে অন্যায় জেনেও দলের প্রতি ভালবাসায় সকল নেতিবাচক কর্মতৎপরতা এবং মিডিয়া বক্তব্যও একটি উপকরণ যার জন্য নবজাগরণের বিষবাষ্প এখন অপমৃত্যুতে নিমজ্জ্বিত হতে সহায়তা করে যাচ্ছে মাত্র।
দেশের কথা, জনগণের কথা না ভেবে শুধু দলীয় প্রধান এবং দলের কথা মিথ্যা বুলির মাধ্যমে আওড়িয়ে যাওয়াও একটি কারন। লড়াদশা শুরু হয়েছিল যখন হাওয়া ভবন এর যাত্রা তখন থেকেই আর তা মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সমুলে বিনাশ করার কাজটুকু করেছে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির সহায়তায় মাত্র। আরো একটি পরাজন হলো অপরিপক্ক ও অরাজনৈতিক এবং নেতিবাচক জ্যানের অন্ধকারের রাজার হাতে একক ক্ষমতা দেয়ার জন্য। তিনি জাতির ইতিহাসকে যেদিন থেকে বিকৃত করা এমনকি সম্মানীত মানুষদেরকে অসম্মান করা শুরু করেছিল সেদিন থেকেই প্রকারান্তরে পরাজয় এবং মৃত্যুর করাল ঘ্রাসে পতিত হয়ে অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত হয়েছিল মাত্র। শুধু তাই নয় আরো ছিল হামছে বড়া কন হ্যা ভাব নিয়ে প্রকৃত শিক্ষার বাইরে যে অপবাদ রয়েছে সেই ঠুলে অনার্স ডিগ্রী। যার গরিমায় তিনি সকল মত ও পথ এবং মুক্তচিন্তা, অগ্রগামী চিন্তার সুত্রগুলোকে স্তব্ধ করে একক চিন্তায় মনোনিবেশ করেছিল সেদিন থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনা আরো একধান এগিয়ে গিয়ে দ্রুতলয়ে প্রস্থানের যাত্রারম্ভ হয়েছিল মাত্র।
পার্সেন্টিজ বানিজ্য বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গিকে আতঙ্কিত করেছিল এবং এর ফলশ্রুতিতে মৃত্যুর প্রহর গুনা জরুরী করে তুলেছিল। লোভে পাপ পাপে মৃত্যৃ কথাটি পোড়খাওয়া সত্যে পরিণত করার লক্ষেও আজকের অবস্থান জরুরী ছিল। ইতিবাচকতাকে পরিহারও একটি কারণ ছিল। নেতিবাচকতাকে গ্রহণ এবং সেই অনুযায়ী এ্যাকশন একটি অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নানা পরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়ন দৃশ্যমান ও প্রমানিত সকলই মৃত্যুর পরে দাফনে সহায়তা করেছিল। দুর্নীতির সঙ্গে সন্ত্রাস কার্যক্রম প্রকাশীত হওয়ার পর আবার নুতন করে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা এবং এর প্রকাশ ছিল দাফন হওয়া দলের কঙ্কাল দুরীকরণের একটি মহৌষধ মাত্র।
তারপরও বলব সবই করেছিল কিন্তু আরো আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল যখন একটি সফল সরকারের সকল কর্মকান্ডকেই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে মোকাবিলা এবং বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে সকল অর্জনকে স্থীমিত করার পায়তারা। কিন্তু তা যখনই প্রকাশ হয়েছিল তথনই জনমনে ক্রোধের সৃষ্টি হয়ে সমর্থন বিমুখতার কবলে পরে একা হয়ে পড়েছিল, যা একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ধ্বংসের জন্য। স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে পরিকল্পনা এবং জোট গঠনও একটি অন্যতম কারণ। তবে যুগের চাহিদার প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে বরং এর বিরোধীতাও একটি কারণ। যুদ্ধাপরাধীদের সাজা বা শাস্তি কার্যকরে নেতিবাচক ভুমিকাও একটি কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল। নিজেদেরকে স্পষ্ট করে জাতির চাহিদা এবং ¯্রােতের বিপরীমুখী অবস্থান আজ তাদেরকে দেশদ্রোহী বা দেশ ও জনগনের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে মাত্র।
আমি বলব না যে সমর্থক নেই কিন্তু বলতে চাই সমর্থকদের স্বর নীচু হয়ে দিন দিন শুন্যের কোটায় নিমজ্জিত… যা এখন দৃশ্যমান। কৌশলে আজকের আওয়ামীলীগকে পরাজিত করার যথেষ্ট সুযোগ ছিল কিন্তু সবই গুড়েবালিতে পরিণত হলো অন্যায়, দুর্নিতী এবং সন্ত্রাস ও নৌরাজ্য জঙ্গিপনাসহ কুশিক্ষার কারণে। যেখানে ন¤্রতা, ভদ্রতা, জবাবদীহিতা, অন্যকে প্রাধান্য দেয়ার রেওয়াজ নেই সেখানে সফলতার আড়ালে বিফলতা ছাড়া আর কিছুই নেই। হাম্বলনেছ এবং সাবমিশন একে অন্যের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ন উপাদান এবং একজন অন্যজনকে বিশ্বাস ও আস্থা একটি মুখ্য ভুমিকা পালন করে। কিন্তু এক্ষেত্রে শতভাগ বিফলতাই করুন পরিণতির জন্য দায়ী।
কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না এমনকি চেইন অব কমান্ড বিতাড়িত হয়ে হযবড়ল আকার ধারণ করে সকলেই নেতা হিসেবে নিজেকে জাহিরে ব্যস্ত হওয়ায় আজ এই পরিণতির কারণ বলে বিবেচ্য। ঐক্যের বিকল্প নেই এবং ঐক্যে ফাটল ধরলেই সমূহ বিপদ এবং বিপদ থেকে উতরানো কঠিন হয়ে পড়ে। তাই হয়েছে বৈকি। তবে একটি দুইটি সমস্যা মোকাবেলা সহজ কিন্তু লক্ষ্য কোটি সমস্যায় জর্জরিত দলে যখন যুক্ত হয় মেধাশুন্যতা এবং সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গী কর্মকান্ডের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রমানিত বদনাম; তখন কিন্তু আর বের হয়ে আসার কোন সুযোগ থাকে না। কারণ যার উপর ভর করে বের হয়ে আসবে সেই জনগণ আর সঙ্গে থাকে না বা জীবন বাজীও রাখে না। এই দশার সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে দলের গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন। যেখানে, দুর্নিতী ও সন্ত্রাস এবং অন্যায়- কুসংস্কারসহ সকল কিছুকে বৈধ করার হয়েছে। রাতের আধারে এই কাজটিও একটি মরণঘাতি ব্যাধি হিসেবে কাজ করেছে। তারপরও শেষ মরন প্রেরক ঠুকা হলো দন্ডিত চিহ্নীত সন্ত্রাসী ও দুর্নীতি এবং জঙ্গী সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে দলের দায়ীত্ব দেয়ায়। পরবাসী পলাতক মেরুদন্ডহীন এবং ক্যুজ্ঞানী লোককে কিভাবে দলের ক্ষমতা দেয়া হলো তা সমর্থকের ও নিরপেক্ষ সাপোর্ট এমনকি বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গির সহযোগীতায় কুঠারাঘাত করেছে মাত্র। এই থেকেই চরম বিশৃঙ্খলা ও ধান্দাবাজির ধোয়ায় ভুমিষ্ট হওয়া বিএনপির পতন ঘটলো। সবই নেতিবাচক একটি দৃষ্টান্তের জন্ম দেয়া এক আমাবর্ষার রাতের গহীণ অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত কাহীনি মাত্র। কাহিনীর হয়তো আরো বাকি রয়েছে যা সময় ও সুযোগ করে জনগণের সামনে উপস্থাপিত হবে আরো কোন ভিন্ন আঙ্গিকে এবং সময়ের জোরালো দাবীর প্রেক্ষিতে।
দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published.