তাজুল ইসলাম নয়ন॥ বেসিস নির্বাচন অনেকটা তীরে এসে তরী ডুবার মতো ঘটনা ঘটলো। অনেক প্রতিকুলতার পর আগামী ৩১ মার্চ বেসিস নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হচ্ছে না।
২১ মার্চ মধুমতি টেকের প্রোপাইটার রকিবুল মিনাসহ ১১ জনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২ মার্চ বেসিস নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব সৈয়দা নাহিদা হাবিবা।
কেন এই নির্বাচন বন্ধ হলো? এখানে রহস্যই বা কি? উত্তর জানতে অনেকের সাথেই যোগাযোগ করা হলেও কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
তবে বেসিসের সাবেক এক প্রেসিডেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, বেসিস নির্বাচন পরবর্তী যে কমিটি গঠন করা হয় সেটা জয়েন স্টক থেকে গ্যাজেট করতে হয়। যুগান্তরের মাধ্যমে জানতে পারি এই তথ্যাটি।
শামীম আহসানের কমিটির পর এখন পর্যন্ত আর কোন গ্যাজেট প্রকাশ হয়নি। ফলে শামীম আহসান এখনও আগের গ্যাজেট অনুযায়ী কাগজে বেসিস প্রেসিডেন্ট! তিনি বলেছেন, মোস্তাফা জব্বার ও আলমাস কবীর বেসিসের যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন সেটি মূলত অবৈধ। তাঁর ভাষায়, অবৈধ নির্বাচন কমিশনের কর্মকান্ডগুলো তো অবৈধই হবে।
বেসিসের গঠনতন্ত্রে কিছু ভুল আছে উল্লেখ করে ২০১৭ সালের ২৫ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সংশোধন করার জন্য একটি চিঠি দেয়া হয়। সংশোধন পরবর্তী অনুমোদন নিয়ে নির্বাচন করার কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল। এ জন্য গত বছর ৩১ অক্টোবর বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) করে একটি অংশ সংশোধন করে বেসিস।
ওই ইজিএমের ১ এর ২ ও ১ এর ৩ নং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরেকটি ইজিএম করে আরও যেসব বিষয় ঝুলে আছে সেগুলো সংশোধন করে নির্বাচন করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু বর্তমান বেসিস বোর্ড ওই ইজিএম স্থগিত করে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। আগের সিদ্ধান্তগুলো ডিটিওতে দেয়ার পর জয়েন স্টক থেকে গ্যাজেট করতে বলা হয়। কিন্তু সেটাও করা হয়নি। সংশোধনের অংশটুকু ডিটিওতেও জমা দেয়া হয়নি।
এসব বিষয়গুলো ডিটিও’র নজরে এনে বেসিস সদস্য মধুমতি টেকের প্রোপাইটার রকিবুল মিনাসহ ১১ জনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২ মার্চ বেসিস নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
চিঠিটি আজ মঙ্গলবার দুপুরে হাতে পেয়েছে বেসিস নির্বাচন কমিশন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব সৈয়দা নাহিদা হাবিবা স্বাক্ষরিত চিঠিতে লেখা হয়েছে, ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর যে ইজিএম হওয়ার কথা ছিল সেটা শেষ করে এবং এখন পর্যন্ত বেসিস যেসব বিষয় সংশোধন না করে ঝুলিয়ে রেখেছে সেগুলো সংশোধন করে পুনরায় তফশিল করে নির্বাচন করা যাবে। একই আদেশে বর্তমান কমিটির মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে ৬ মাস।
এই হালহকিকত কি শুধু আমাদের সরলমনা মানুষের জন্যই না কোন খেলার মাঠের পারদর্শী চৌকষ খেলোয়ারদের জন্য তা বোঝার ত্রিকোণমীতি আমাদের জানা নেই। তবে যাই হউক বেসিস তার সন্মান এবং জৌলুস ফিরে পাক এটাই কামনা করি। সকল বেসিস সদস্যগণ এক কাতারে অবস্থান করুন এবং সাম্যের গীত রচনায় নিমঘ্ন থাকুক