টিআইএন॥ বাংলাদেশের সুনাম অর্জনের পাশাপাশি দুর্নামও সৃষ্টি হয় আমাদের কৃতি সন্ত্রানদের দ্বারা। কখনো মেধাবীরা দুর্নীতি করতে পারে না কিন্ত প্রতিনিয়তই দুর্নিতী করে যাচ্ছে। যেখানে আমাদের মেধাকে কাজে লাগানো উচিত সেখানে না লাগিয়ে দুর্নীতি করার লক্ষে কাজে লাগিয়ে এই দুর্নাম ও অপস্বীকৃতি অর্জন করে আমাদের মাথা ও নাক কাটার ব্যবস্থা করছে। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার সংগঠনটির আয়োজনে ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি অনলাইন মিডিয়ায় ‘দুর্নীতির দায়ে ফেঁসে যাচ্ছেন বেসিসের রাসেল-উত্তম-রাশিদুল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
নিউজ প্রকাশের পর বাংলাদেশে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডের সাথে সংশ্লিষ্টরা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ঘটনা পরবর্তী বেনামে বেসিস সদস্যদের মেইলে কয়েকটি চিঠি চালাচালি হয়েছে। যার শিরোনাম ছিল আবদুর রহিম। বিশেষ করে এই রহিম কে? সচরাচর মেইল আসবে নিজস্ব আইডি থেকে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা হবে আগমী দিনে। যাক সেই কথা আবদুর রহিম ঠিকানা থেকে প্রেরিত মেইলটি বিশেষত দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজনের যে কোন একজন যোগসাজসে যে করেছেন তা বুঝার যথেষ্ট জ্ঞান মেম্বারা রাখেন। এই মেইলের বার্তায় বলা হয়েছে রাসেল টি আহমেদ, এম রাশিদুল হাসান এবং উত্তম কুমার পাল এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে ছিলেন না জানিয়ে ৯টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ‘বেসিস সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান অ্যাপিকটা সংক্রান্ত সকল চেকে স্বাক্ষরের মাধ্যমে টাকা প্রদন করেন এবং তারপর নিজেই অডিট ফার্ম নিয়োগ করেন’ বলে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দীর্ঘ ওই চিঠিতে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর এই সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিবাদ চিঠি না পাঠানোর কারণে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সংবাদটি বেসিস সদস্যদের মেইলে পাঠানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে লেখা হয়েছে, তথাকথিত অনলাইন পত্রিকা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মাত্র একদিনে তৈরি করে এ সংবাদ আপলোড করেছে। যার তত্ত্বাবধানে এই অনলাইন পত্রিকাটি তৈরি করা হয়েছে তার প্রমাণাদিসহ বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরের কাছে দেয়া হয়। কিন্তু তিনি একটি প্রতিবাদ চিঠি পাঠানোরও উদ্যোগ নেননি। আমরা বেসিস ও সমগ্র আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির সম্মান রক্ষার্থে বাইরে এ বিষয়ে কোন কথা বলিনি। পরবর্তীতে সংবাদটি যখন সকল সদস্যদের কাছে ইমেইল করা হয়, আমরা এই বিষয়ে আপনাদেরকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করে ‘পাবলিকলি’ প্রকাশ না করে আপনাদের কাছেই লিখছি। এ বিষয়ে সত্য ঘটনা ও বিস্তারিত জানার অধিকার আপনাদের আছে। কারণ আপনাদের মাধ্যমেই আমরা নির্বাচিত হয়েছি। আপনার সমর্থন পেয়েই সমগ্র কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।
বেসিস সকল সদস্যদের কাছে পাঠানো ওই মেইলে লেখা হয়েছে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহল থেকে স্বীকৃত এবং দেশে বিদেশের সংবাদ মাধ্যমে দারুনভাবে সমাদৃত একটি সফল আয়োজন সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচার সৃষ্টি করা হয়েছে। এই অপপ্রচারের নগ্নতা আমার, আপনার, বেসিসের তৎকালীন সভাপতি ও আজকের মাননীয় মন্ত্রী জনাব মোস্তফা জব্বার এবং সর্বোপরি বেসিস সবার জন্যই লজ্জাস্কর। কারণ ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থেই এই আয়োজন হয়েছে। যেখানে সকল সম্মানিত সদস্যদের অংশগ্রহণ ছিলো স্বতঃস্ফূর্ত।
সব শেষে দুঃখ প্রকাশ করে মেইলে লেখা হয়েছে, আজ অনেক দুঃখ নিয়েই আপনাদের লিখছি আমরা। আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে, ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের স্বার্থে বেসিসকে প্রয়োজনীয় সময় দিয়েছি আমরা। আর এখন আমাদেরকে হেয় করার জন্য নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নানা মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছেন গুটিকয়েক ব্যক্তি, যা আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে চরম লজ্জাজনক বিষয়। ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে আইনগতভাবে না গিয়ে বা পাবলিকলি প্রকাশ না করে আমরা আপনাদের কাছেই এই মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে এ ধরণের মিথ্যা প্রচারণা যাতে ছড়িয়ে পড়ে ইন্ডাস্ট্রির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে না পারে সেই বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড কেলেঙ্কারির বিপক্ষে ৯ যুক্তি : চিঠিতে ‘অ্যাপিকটা সম্পর্কিত কিছু তথ্য’ সাব ক্যাটাগরিতে ৯টি যুক্তি উপস্থাপন করে রাসেল টি আহমেদ, এম রাশিদুল হাসান এবং উত্তম কুমার পাল নির্দোষ এবং বেসিস সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান অ্যাপিকটা সংক্রান্ত সকল চেক লেনদেন করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেসিসের বর্তমান সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর নিজের স্বার্থ চরিতার্থে লিপ্ত আছেন বলে বলা হয়েছে। নিম্নে পাঠকদের জন্য তথ্যগুলো হুবহু দেয়া হলো-
১. অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস এর বাজেট ছিলো প্রায় ৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে আইসিটি ডিভিশন জিটুজি পদ্ধতিতে ৩ কোটি টাকা সরাসরি সংশ্লিষ্ট ভেন্ডরদের পরিশোধ করবে, ফলে সেই অর্থ বেসিসের অ্যাকাউন্টে আনার কোন সুযোগ নেই। আর, বেসিসের নিজস্ব তহবিল এবং অন্যান্য স্পন্সরশিপ আয় থেকে বাকী ১ কোটি টাকা খরচের সিদ্বান্ত হয়। উভয় ক্ষেত্রেই বেসিসের তৎকালীন সভাপতি জনাব মোস্তাফা জব্বারের ভূমিকা এবং অবদান অনস্বীকার্য। একজন যোগ্য নেতা হিসেবে তিনি সরকারের সাথে নেগোসিয়েশন ও বেসিস থেকে ফান্ড দিয়ে আয়োজনটিকে সফল করতে কাজ করেন ও করার নির্দেশনা দেন।
২. বেসিসের তৎকালীন সভাপতি জনাব মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী সভায় বেসিসের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। উক্ত সভার মিনিট ইতিমধ্যেই সাধারণ সদস্যদের অবহিত করা হয়েছে।
৩. আপনারা অবশ্যই জানেন, সকল ভেন্ডরদের বিল চেকের মাধ্যমে কার্যনির্বাহী কমিটির সংশ্লিষ্টদের অনুমতি ও স্বাক্ষরের মাধ্যমেই প্রদান করা হয়। সেখানে বাড়তি অর্থ খরচের কোন সুযোগই নেই। অ্যাপিকটা আয়োজনের সকল চেক বেসিসের সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান স্বাক্ষর করে প্রদান করেন। ফারহানা এ রহমান হচ্ছেন বেসিসের সকল ব্যাংক একাউন্টের “ম্যান্ডেটরি সিগনেটরি” যার স্বাক্ষর ব্যতীত বেসিসের ব্যাংক একাউন্টের একটি টাকাও খরচ করার কারো এখতিয়ার নাই।
৪. অ্যাপিকটার এই আয়োজনে রাসেল টি আহমেদ আহ্বায়ক এবং উত্তম কুমার পাল ও এম রাশিদুল হাসান সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
৫. নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার সাথে সাথেই সৈয়দ আলমাস কবীর অ্যাপিকটার হিসাব অডিট করানোর পরিকল্পনা করেন এবং অ্যাপিকটা সম্পর্কিত সকল কাগজপত্র নিজ তত্বাবধানে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বেসিসের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল এবং এবারই প্রথম কোনও ইভেন্টের পর সেটি আলাদাভাবে অডিট করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
৬. বেসিস সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান অ্যাপিকটা সংক্রান্ত সকল চেকে স্বাক্ষরের মাধ্যমে টাকা প্রদন করেন এবং তারপর নিজেই অডিট ফার্ম নিয়োগ করেন। অতঃপর উক্ত অডিট ফার্মকে বারবার তাগাদা দিয়ে অডিট রিপোর্ট ‘ম্যানিপুলেট’ করার চেষ্টা করেন যার তথ্য ও প্রমাণাদি বিদ্যমান।
৭. আমাদের জানামতে, অডিট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ৪/৫ বার অডিট রিপোর্ট লিখিয়ে আনা হয়। অডিট রিপোর্টে কোনভাবেই অ্যাপিকটা আয়োজনে কোনপ্রকার আর্থিক অনিয়ম বা অবৈধভাবে অর্থ খরচের কোন বিষয় পাওয়া যায়নি।
৮. আমরা চাই সঠিক অডিট রিপোর্ট মেম্বারদের কাছে প্রকাশ করা হোক। অডিট রিপোর্টটি সবার সামনে প্রকাশ করার জন্য সভাপতিকে বারবার তাগিদ দিলেও সেটি প্রকাশ করার কোনপ্রকার উদ্যোগ উনি নেননি। বরং অডিট রিপোর্ট লুকিয়ে রেখে ও আমাদের নামে মিথ্যা অপবাদকে উসকে দিয়ে আলমাস কবির এবং ফারহানা রহমান কি স্বার্থসিদ্ধ করতে চাইছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।
৯. বেসিস বর্তমান সভাপতি জনাব আলমাস কবীর দায়িত্ব গ্রহণের সাথেসাথেই বেসিসের টাকায় অডিটর নিয়োগ করে, অডিট রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ না করে এবং মিথ্যা অপপ্রচারকে ইন্ধন যুগিয়ে বেসিস বোর্ডের ইমেজ, বেসিসের অন্যতম সফল প্রকল্প, প্রকল্পের সাথে জড়িত জনবলের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সর্বোপরি এই প্রকল্প কালীন সময়ে তৎকালীন সভাপতি আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতা মোস্তফা জব্বার ভাইয়ের নেতৃত্ব – সবকিছুকেই বৃদ্ধা্গংুলি দেখিয়ে নিজের কোন স্বার্থ চরিতার্থে লিপ্ত হয়েছেন, সেই প্রশ্নের উত্তর কেবল উনিই দিতে পারবেন।
ফারহানা এ রহমানের জবাব : মেইলে বেসিস সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান এই অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে আভাস দেয়া হয়েছে। সে বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া কি? জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরের কাছে এবং বেসিস মেম্বারদের মেইলে ও আমাদের প্রশান্তি প্রতিনিধিকে লিখিত জবাব দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি অ্যাপিকটার খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বেনামি ই-মেইল দেয়া হয়েছে। বিষয়টি বেসিস নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য করা হয়ে থাকতে পারে। যেহেতু আমি ৩১ মার্চে বেসিস নির্বাচনের একজন প্রার্থী; তাই যেকোন বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য বেসিস সদস্যদের নিকট কিছু তথ্য জানানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করেছি।
১. বেসিসের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্পন্সরের টাকা পেতে দেরি হবে বিধায় শুধুমাত্র জরুরী ব্যয় নির্বাহে ৬০ লক্ষ টাকা অ্যাপিকটার আহবায়ক রাসেল টি আহমেদকে দেয়া হয়েছে। যার হিসাব এখন পর্যন্ত বেসিসে দেয়া হয়নি। বরং বারবার তাগাদা দেয়া হলেও তা পাওয়া যায়নি।
২. অন্যান্য মেলার মত অ্যাপিকটা ইভেন্টের প্রতিটি খরচ কনভেনর করে থাকেন এবং পরে তার হিসাব বেসিসে জমা দেন। ফলে অ্যাপিকটার খরচের হিসাব না পাওয়া পর্যন্ত বেসিস কার্যনির্বাহী কমিটির কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া সম্ভব নয়।
৩. বেসিস অফিসে অনেক পাওনাদার অ্যাপিকটার খরচের অপরিশোধিত অর্থ চাওয়ায় একটি বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাপিকটা ইভেন্টের প্রকৃত আয় ব্যয় বিবরণী বের করা প্রয়োজন।
৪. বিদায়ী বোর্ড সদস্য হিসাবে আর্থিক হিসাব বিবরণী নিরীক্ষা (অডিট রিপোর্ট) করা প্রয়োজন। যাতে পরবর্তী বোর্ডকে নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব বিবরণী প্রদান করা সম্ভব হয়। এই অডিট রিপোর্টটি এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি। বিদায়ী বোর্ডের অংশ হিসাবে আমাদের সময়কালের সমস্ত হিসাব পরিপূর্ণভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা এই বোর্ডের কাজ।
আমরা বিশ্বাস করি, বেসিস সদস্যদের স্বার্থ রক্ষার্থে আর্থিক স্বচ্ছতা চাওয়ায় কারও এই বিষয়ে আপত্তি থাকার কথা নয়। বেসিসের আর্থিক ব্যবস্থাপনা তদারকি করার বিষয়টি আমার সংশ্লিষ্ট থাকায় এর স্বচ্ছতা রক্ষার খাতিরেই প্রতিটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
নিউজে কী ছিল : ১৪ মার্চ ‘দুর্নীতির দায়ে ফেঁসে যাচ্ছেন বেসিসের রাসেল-উত্তম-রাশিদুল’ শিরোনামে প্রকাশিত নিউজটি লেখা হয়, অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের ফান্ড লুটপাটের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ সফটওয়ার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস বেসিসের আগের ইসি কমিটির রাসেল টি আহমেদ, উত্তম কুমার ও রাশিদুল হাসান। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বেসিসের সভাপতি হওয়ার পর তাদের নানান আর্থিক দুর্নীতি সামনে আসতে থাকে। সম্প্রতি এক অডিট রিপোর্টে সরাসরি টাকা লুটপাটের বিষয়টি সবার নজরে আসে।
গত ডিসেম্বরে ঢাকায় আয়োজিত হয় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক আন্তর্জাতিক ইভেন্ট অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড। অনুষ্ঠানটি সফলভাবে আয়োজন করার জন্য সরকারের আইসিটি ডিভিসন বেসিসকে ৩ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়। আয়োজক কমিটির আহবায়ক রাসেল টি আহমেদ, উত্তম কুমার ও রাশিদুল হাসান অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে আরও ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা বেসিস ফান্ড থেকে নিয়ে নেয়। সম্প্রতি বিষয়টি বেসিস কার্যনির্বাহী কমিটির অডিটে ধরা পড়ে। তবে রাসেল টি আহমেদ, উত্তম কুমার ও রাশিদুল হাসান এর কোন সদুত্তর অডিট কমিটিকে দিতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বেসিস সদস্য জানান, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডসহ বেসিসের নানান ইভেন্টের মাধ্যমে গত এক দশকে প্রায় দুইশত কোটি টাকা বেহাত হয়েছে। অতীতের মত এই অসাধু চক্র বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইলেও এবার তা পারেননি। আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য বেসিস নির্বাচনে রাসেল উত্তমরা তাদের অপকর্ম ঢাকার জন্য এবং নতুন করে বেসিসকে তাদের দখলে রাখার জন্য বিএনপি নেতা ফাহিমের নেতৃত্বে একটি প্যানেল দিয়েছে। তবে বেসিসের ভোটাররাও এবার বুঝে শুনে ভোট দিবেন বলে এই সদস্য জানান।
অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড কী? :::— এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বৃহত্তম সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স (অ্যাপিকটা)। এই অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি অ্যাপিকটা সম্ভাবনাময় ও সফল উদ্যোগ, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার স্বীকৃতি দিতে প্রতিবছর অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করে থাকে।
বেসিস ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথমবারের মত এই অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করে। চারদিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় অ্যাপিকটাভুক্ত ১৮টি দেশ অংশ নিয়েছিল। তাইওয়ানের তাইপেতে ২০১৬ সালে ৫ ডিসেম্বর সমাপ্ত অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৭ সালের আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ছাড়াও অ্যাপিকটার সদস্য দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনেই দারুসসালাম, চীন, চীনা তাইপে, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং নেপাল।