এস কে কামাল॥ বড় আফসোসের বিষয় হলো সময় থাকতে এই কথাটি বুঝতে না পাড়া। সময় সব সময় একই গতিতে প্রবাহমান নয়। তাই সময় থাকতেই হাল ধরতে হবে শক্ত করে। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে সঠিক বিষয় এবং অভাববোধটি বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু তাও আবার জেলখানাতে বসে। তাই বলতে হয় সময় থাকতে সাধন কর হে মন। সময়ের একফোর আর অসময়ের দশফোর সমান। এখন সময় আছে আগামীর জন্য যদি সঠিকভাবে দিকনির্দেশনা দিয়ে দলকে পুর্নঘটন করে দিয়ে যেতে পারেন। তবে অবস্থাদৃষ্টে তা মনে হচ্ছে না। কার এখন তার নিজের ঔরষজাত সন্তানই বড় শত্রু হিসেবে আভির্ভূত হয়েছেন দল ও পরিবারের জন্য।
একজন পাগলকে নিয়ন্ত্রন করা যায় কিন্তু সুস্থ্যমস্তীর্কের সাজানো পাগলকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। আর যাও হয় তা এক নিমিষেই ঘুরেবালি করে দিতে দ্বিধাবোধ করে না এ স্বঘোষিত সাজানো পাগল। আজতে আমার দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এমনকি কতিপয় দেশী ও বিদেশী মানুষের শ্রদ্ধার এমনকি ভালবাসার মানুষ বিএনপির চেয়ার পার্সন খালেদা জিয়ার। তাই তিনি নিজেই আফসোস করে বলেছেন নিন্মোক্ত উক্তিটি।
বেগম খালেদা জিয়া দু:খ করে বলেছেন, ‘আমার দলে কোনো জিল্লুর রহমান নেই, কোনো মোদাচ্ছের আলীও নেই। থাকলে এতোদিন, এভাবে জেলে থাকতে হতো না।’ নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে একজন ডেপুটি জেলারের কাছে তিনি ঐ মন্তব্য করেন। ডেপুটি জেলার বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে তার পছন্দের চিকিৎসকদের নামের তালিকা জানতে চেয়েছিলেন। নামের তালিকা দেওয়ার সময় বেগম জিয়া ঐ মন্তব্য করেন। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করেন। সে সময় জিল্লুর রহমান দলের হাল ধরে দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন। আর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে তার সুচিকিৎসার জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন। চোখের চিকিৎসক হয়েও অধ্যাপক মোদাচ্ছের আলী শেখ হাসিনার সার্বিক স্বাস্থ্য নিয়ে নিয়মিত কথা বলতেন। তার উদ্যোগেই ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, ডা. এ.বি.এম আবদুল্লাহ এবং ডা. শায়লা খাতুনের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছিল। ঐ মেডিকেল বোর্ড শেখ হাসিনার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছিল। শেখ হাসিনাকে সুচিকিৎসা না দেওয়ার প্রতিবাদে ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী একাই তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টাকে স্বারক লিপি দিতে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনা গুলো স্মরণ করে, বেগম জিয়া ডেপুটি জেলারকে বললেন, ‘আমার কাছে তো এরকম নি:স্বার্থ নেতা নাই, ডাক্তারও নাই। আছে শুধু স্বার্থপরের দল।’
পরে অবশ্য বেগম জিয়া কয়েকজন চিকিৎসকের নাম দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষ। চিকিৎসকরাও বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত পছন্দের চিকিৎসক হিসেবেই তাকে দেখেছেন। কিন্তু আশা আর পুরন হলো না। শুধু দল এবং দেশের বাইরে সুপুত্রের কারণে। এখন তিনি জেল খানাই বসে অনুসুচনা বা অনুতপ্তের মাধ্যমে আগামীর চিন্তা বা পরিকল্পনা করতে পারেন। মনোবল না হারিয়ে আগামীর পরিকল্পনা করাই উচিত। তবে আগামীতে মুক্তি এবং ক্ষমতায় আসতে হলে প্রয়োজন হবে জিল্লুর রহমান ও মোদ্দাচ্ছেরের মত নিস্বার্থ মানুষদের। আছে কি কেউ? আপাত দৃষ্টিতে পরখ করার পরে খুজে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। কারণ নিজের ঔরসজাত সন্তানই যখন হতে পারলো তবে অন্যরা হবে কি করে। হ্যা হতে পারতো যদি ঐ সন্তান সেই স্বাধীনতা দিয়ে অন্যদের সুযোগ দিত এমনকি অন্যদের কাজ ও পরিকল্পনাকে মেনে নিয়ে অগ্রসর হত। যা অতীর ও সুদুর পরাহত বিষয় তা নিয়ে ভাবা ও লিখারও যথেষ্ট সময় নেই কারো হাতে। কারণ সবই এখন অবিশ্বাস এবং অশ্রদ্ধার বেড়াজালে আবদ্ধ।