কামাল নূর, দুবাই প্রতিনিধি॥ ছবিটিতে মা এর শরীরের যে অংশের দিকে আপনাদের চোখ সবার প্রথমে গেছে সেটাকে শুদ্ধ বাংলা ভাষায় স্তন বলে, যা অনেকের কাছে মাংসের দলা হতে পারে, অনেকের কাছে নারীকে ধর্ষণ করার একটা কারন হতে পারে, অনেকের কাছে তা হলো নারীকে মাল বলার কারন! আবার অনেকের কাছে, ভীড় বাসে/ ট্রেনে একটু আলতো করে স্পর্শ করে মজা নেয়ার জন্য একটা নরম বল হতে পারে৷
কিন্তু মায়ের কোলে শুয়ে থাকা শিশুটির কাছে এগুলোর কিছুই না৷ তার কাছে স্তন গুলো বেঁচে থাকার সম্বল। ছোট্ট চারা গাছ যেমন মাটি থেকে তথা ধরিত্রী থেকে প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে বেড়ে ওঠে তেমনিভাবে এই শিশুটির কাছেও তাই৷ তখন তার কাছে ‘মা’ হল ধরিত্রী, যিনি তার সন্তানের জন্মের পর থেকে তাঁর চারাগাছ তথা তার সন্তানকে খাদ্য সরবরাহ করে বড় করে তোলে৷ আপনি-আমি, আমার সবাই আমাদের মায়ের স্তন পান করেই বেঁচে থেকেছি, ছোট থেকে বড় হয়েছি।
কিন্তু সেই পুত্র শিশুই বড় হয়ে কোনো না কোনো নারীর বক্ষ দেখে তাকে ধর্ষন করার ইচ্ছা পোষন করে, তাকে উদ্দেশ্য করে নোংরা ইঙ্গিত করে, বাজে কথা বলে কিংবা নিজেদের শরীরে যৌন সুড়সুড়ি অনুভব করে, ভুলে যায় তার অতীতের কথা৷…. ….at first thanks aradha islam nipa approved this post 😊 😊 😊 😊 😊 😊 😊 😊
নারীকে নারী দিবসের শ্রদ্ধা জানাতে হবে না, নারীর নির্যাতন বন্ধ করার জন্য মানববন্ধন করতে হবে না, নারীকে ধর্ষিতা হওয়ার অশংকা নিয়ে ঘরের বাইরে বের হতে হবে না; যেদিন পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া নারীর বুকের দিকে পুরুষ জাতি লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকাবে না, তার শরীর দেখে নোংরা ইঙ্গিত করবে না, নারীর শরীরকে খাদ্যদ্রব্য না ভেবে নারীকে মানুষ ভাববে। যেদিন পুরুষ নিজেকে পুরুষ না ভেবে মানুষ ভাবতে শুরু করবে, সেটাই হবে পুুরুষ জাতির জন্য অনেক বড় অর্জন।
পরিশেষে বলি, আপনি নারীর যে অঙ্গ দেখে উত্তেজিত হয়ে পরেন, নোংরা মন্তব্য করেন, নিজের অজান্তেই মানসিকভাবে আপনি পশুতে রূপান্তরিত হন; ভাই ওই অঙ্গের নাম স্তন, যা না থাকলে পৃথিবীর মানব সভ্যতা ৫০ হাজার বছর পার করতে পারত না। গুহাবাসী আদিম শিশু গুহাতেই মারা যেত, পাথরে পাথর ঠোকার প্রস্তর যুগই শুরু হতো না।
আরও সোজা বাংলায় বলি, আপনার-আমার জন্ম হতো না, মানব জাতির বিকাশ বন্ধ হয়ে যেত। তাই নারী জাতিকে সম্মানের চোখে দেখুন, তাদের মানুষ ভাবতে শিখুন- কারন আপনার মা, বোন, কন্যাও নারী….। তাদেরও স্তন আছে, তাদের দেখেও অপনার মত অন্য পুুরুষের মনে নোংরামী করার ইচ্ছা জাগ্রত হতে পারে!
অতএব, পরিবর্তন শুরু হোক নিজের থেকেই। নিজে বদলে যান, নোংরা মানসিকতা ত্যাগ করুন, দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন করুন; দেখবেন দুনিয়াটাই বদলে গেছে।