দিন বদলের মেরুকরণে রাজনৈতিক দলগুলো

Tajul Pictureআগামী নির্বাচনকে ঘীরে শুরু হয়েছে দল বদলের মেরুকরণ। এই দল বদলের মেরুকরণে আবার যুক্ত হয়েছে জোট বদলের মেরুকরণ। বিভিন্ন নামকরণে জোট গঠন এবং দলে ঘাপটি মেরে থেকে ফায়দা লোটার মহোৎসব যেন নির্বাচন আসলেই শুরু হয়। এই হিসেব নিকেশকে ইনভেষ্টমেন্ট হিসেবে দেখছেন অনেকেই। সবাই যার যার হিসেব নিকেশ নিয়ে এখন ব্যস্ত। এই নির্বাচন নিয়ে আবার স্বঘোষিত সুশিলরাও ব্যস্ত যদি কোন ফায়দা হাসিল করা যায়।
এই যদি হয় হালচাল তাহলে নির্বাচনের কি প্রয়োজন? যারা এখন জনগনকে নিয়ে ভাবছে এবং দৃশ্যমান উন্নয়ন ও অবকাঠামোর ক্রমন্নোতি চোখে পড়ার মত করে দেখিয়েছে তাদেরকেই বিনা নির্বাচনে আগামী ১০ বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হউক। এতে করে ব্যক্তি স্বার্থের হিসেব নিকেশটা বন্ধ হবে; পাশাপাশি রাষ্ট্রিয় সম্পদ ও অর্থ সাশ্রয় হবে। এই উন্নয়ন ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনে দরকার বর্তমান সরকার এবং জনগণও এই সরকারেরই প্রতিছায়া। আগামীতে জনগণ সেই নিরুঙ্কুস রায় দিয়ে এই সরকারকেই ধারাবাহিকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে সুযোগ দিবে।
দেশীয় মেরুকরণের সঙ্গে আবার বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতাও পরিলক্ষিত হয়। এই অপতৎপরতায় পানির সঙ্গে ঘী মিশিয়ে তাল যোগাচ্ছে এদেশীয় তাবেদারগণ। সুতরাং সাবধান। বিগত দিনগুলির অভিজ্ঞতা নিয়ে সামনের দিকে অতি সতর্ক থেকে সাবধানে এগুবেন। পিছনের দরজা এখনও বন্ধ হয়নি। সুযোগ পেলেই ঘাপটি মেরে থাকারা সামনে চলে আসবে।
দলীয় ঐক্য এবং তৃণমুলের শক্তি মিশ্রিত জোয়ারে ঐ ঘাপটি মেরে থাকারা যেন দেশ থেকে চিরতরে পালিয়ে যায় সেই দিকে লক্ষ রেখে এগিয়ে যেতে হবে। নতুবা উন্নয়ন এবং গনতন্ত্র ও স্বাধীনতা এমনকি স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হবে। যাতে জাতিকে চরম মূল্য দিতে হবে। মোট কথা ঐ মেরুকরণে যেন আমরা সাধারণ মানুষ বিলীন না হয়। মেরুকরণের হাতিয়ারস্বরূপ যেন আমাদেরকে ব্যবহার করতে না পারে সেইদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঐ মেরুকরণে পারদর্শীতার জন্য যারা তড়িঘড়ি করে সামনের কাতারে ঘুরাঘুরি করছে তাদেরকে চিনে রাখুন। আগামী দিনে তাদের সকল কিছু জনগণ দ্বারা পরিক্ষিত করে সরকারী ব্যবস্থার হাতে তুলে দিতে হবে।
সর্বশেষ আশা ও আশ্রয় বাংলার মানুষের যিনি ঐ মেরুকরণে ঢলে পড়েন না এবং সহজে ঐ চক্রান্তকারীদের ছেড়ে দেন না; সেই মহীয়সী নারী বাংলার অহংকার ও দলের গর্ব বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা তাঁর বিচক্ষনতা ও তীক্ষè মেধা দিয়ে মোকাবিলা করে বাংলার জনগণের অধিকার, স্বাধীকার এবং ন্যায়-পরায়নতা এমনকি উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতার অব্যাহত রাখবেন। সব দৌঁড় যাপই বিফলে যাবে শেষ পর্যন্ত। সেই বিশ্বাস রয়েছে এবং বাংলার মানুষ সেই আশায় ঐক্যের শক্তি প্রদর্শন করে আগামীর পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ঐ এক্যে যেন কোন ফাটল বা চুল পরিমাণ ত্রুটি বিচ্যুতি না ঘটে সেইজন্য এখন সজাগ দৃষ্টি দিয়ে পরিচালনা এবং ভালবাসা প্রদর্শণ করতে হবে। তাহলে আর দলবদল এবং ঐক্যের মেরুকরণে সরকার এবং আওয়ামী লীগের কোন বিপর্জয় ডেকে আনবে না।
আন্তর্জাতিক লোভ লালসার স্বীকারে পরিণত হয়ে বাংলার স্বাধীনতা এবং উন্নয়নকে বিসর্জন দেয়া যায় না। তাই সকলে মিলেই ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। ঐ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে দেশীয় যারা যুক্ত তাদেরকে এখনই চিহ্নিত করার সময়। তাই চোখ কান খোলা রেখে চিহ্নিত করুন এবং অবৈধ সকল পথ বন্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করুন। জনগণ রয়েছে ঐক্যের এবং উন্নয়নের পক্ষে। আশা করি বর্তমান ধারাবাহিকতা বিনষ্ট করার কাজে লিপ্ত সকল অপশক্তি দেশীয় সাজে এবং বিদেশী মদদে অথবা অর্থের লোভে গাঁ ভাসানোর দিন শেষ। যারাই গাঁ ভাসাবেন তাদেরই মহা বিপদ সংকেত বাজবে আগামী দিনে।
বিগত দিনের মত আর ভাবার সময় ও সুযোগ নেই; তবে মাঝে মাঝে বোকামির এবং ভূল বোঝাবোঝির জন্য বিপর্যয় ডেকে বা নেমে আসতে পারে। তাই সচেতনতা এবং সহিষ্ণুতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যারা ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করে যাচ্ছি তাদেরকে আরো সচেতন এবং সহযোগীতাপ্রবন হতে হবে। নেতা ও কর্মী এবং সমর্থকদেরকে আগলে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। কোনভাবেই কাউকে হেয় বা বিপদে ফেলা যাবে না বরং বিপদ থেকে রক্ষা করাই এখন সময়ের দাবি। তাই সতর্ক হয়ে সামনে এগুবেন এটাই প্রত্যাশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.