জেলখানার দিনগুলি

jailhanar dingoloচলমান…
আমি বলি, আমি নিজেও লোনা আপাকে ভোট দিয়েছি এবং সম্পর্ক খুবই ভাল। তাই তিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন না। আমি এইটা বিশ্বাস করিনা এবং ভবিষ্যতে ও করব না। নিউজ সর্ম্পকে বলি ওই নিউজটি হ্যাক করে ভুল তারিখে পোষ্ঠ দিয়েছিল। ৩০ তারিখ রাতের ঘটনা ২৪ তারিখের পোষ্ট; হ্যাকার পাবশিষ্ট করে; কারন অনলাইন ফরমেট টি ছিল সাম্পাহিক তাই ৩১ তারিখ ছাড়া ঐ নিউজটি পাবলিক হতো না। ৩১ তারিখ সকাল বেলা আইন ন্ত্রী মহোদয়ের এপি এস জীবন ভাই আমাকে ফোনকরে শাসালেন এবং বললেন তারাতারি ঐ নিউজটি মুছ ও মন্ত্রী মহোদয়কে ফোন দাও। মন্ত্রী মহোদয় তোমার উপর রাগ করেছে। আমি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে বলি আমি এসব করিনি এবং পড়িওনি। তারপর দৃশ্যমান ঐ সংবাদটি মুছে দেই। অনেক কষ্টে মন্ত্রী মহোদয়কেও ফোন করে কথা বলি এবং ওনাকে পাশ করানোর প্রতিশ্রুতি পূণ:ব্যক্ত করি। কারন লোনা আপা মন্ত্রী মহোদয়ের আপন খালাতো ভাইয়ের বউ এবং মন্ত্রী মহোদয়ের খুব ¯েœহের। সবই শেষ হলে আমি বেসিস ক্যানবাসে গিয়ে প্রথমেই লোনা আপার সাথে কথা বলি এবং ভুল হওয়ার ব্যাপারে দু:খ প্রকাশ করে বলি যে, মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং জীবন ভাইয়ের মাধ্যমে আমি এই বিষয়টি জানতে পেরেছি ও মুছে দিয়েছি। দু:খুতি আপা এই অনাকাঙ্খিত সংবাদের জন্য। আমি আপনাকে শতভাগ নিশ্চয়তা দেয় যে আপনি পাশ করবেন এবং আমি এই লক্ষ্যেই কাজ করছি। আবারো অনাকাংখিত সংবাদা প্রকাশের জন্য দুঃখ প্রকাশ করি। ভোটে জয় হওয়ার পড়ে লোন আপাকে কনগ্রেচও করি। নতুন ইসি ইনষ্টল অনুষ্ঠানের দিনও লোনা আপার সঙ্গে কথা বলি এবং ঐ অনুুষ্ঠান থেকে একই সঙ্গে বের হই। আমাদের সর্ম্পকে কোন সমস্যানেই এবং ছিলও না। আগামী দিনেও থাকবে না। এই মামলাটি আমার জীবনের জন্য একটি শিক্ষা এবং বড় বোনের কাছে থেকে ছোট ভাইয়ের শাসন আর কি। ইতিমধ্যে থানায় হাজির হল বেসিস মেম্বার মোস্তাফা রফিকুল ইসলাম (ডিউক) ভাই, ফারহানা আপা, দিদারুল আলম সানি, শোয়েব ভাই সহ অনেকেই আসল ও বিভিন্ন শান্তনা বানী শোনাল এমনকি দুঃখ ও প্রকাশ করল। থানায় বসে আমি আমার স্ত্রীকে ঘটনা জানায় এবং চাচাত ভাই যুগ্ম সচিব তাজু ভাইকে ঘটনা বলি। বন্ধু ড: ইকবাল (এস পি) কে ঘটনা জানাই। বন্ধু মোস্তফা জব্বারকেও ঘটনাটি জানানো হয়। বন্ধু এমজি হাক্কানী (যুগ্ম আহবায়ক, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ), সবশেষে আমার মোবাইলটি জমা দেয়অ হয় থানার হেফাজতে। থানাতে থাকাবস্থায় নাকী কারো সঙ্গে কথা বলা নিষেধ। যাক আইনকে শ্রদ্ধা করি।
কিন্তু আমার রাত পার হলো থানা হাজতে; রাতে আমার ফোন, ঘড়ি, মানি ব্যাগসহ যাবতীয় যোগাযোগ মাধ্যম নিয়মানুযায়ী নিয়ে নেয়া হল। শুধু গায়ের ফতোয়া এবং পেন্ট ও চশমাটা সঙ্গী হল। থানায় দারোগা সাহেব ভাল ব্যবহার করে ভদ্রভাবে থানা হাজতে নোংরা পরিবেশে প্রবেশ করালো যা মেনে নিতে পারিনি। তাই সারা রাত শুধু দাড়িয়ে ও চেয়ারে বসে অঘুমা অবস্থায় কাটিয়ে দেয়। রাতে মাঝে মাঝে অনেক পুলিশ ভাইয়েরা এসে খোজ খবর নিয়েছে আবার মহিলা পুলিশ এসে পিঠানোর খায়েশ প্রকাশ করে অপমান ও করেছে। সবই ছিল নিয়তির বিধান।
সকালে এসে কেউ দেখা না করায় চিন্তিত হয়ে পড়ি। ১০টার দিকে দারোগা সাহেব এসে বলে আপনাকে কোর্টে চালান করে দিবে, প্রস্তুত হন। কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে চলে আসবেন। আমার বংশের চৌদ্দগোষ্ঠির কারো জেলে বা কোর্টের অভিজ্ঞতা নেই; আর আমার তো নেই-ই একহাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে আসামী ভ্যানে উঠানো হলো। নতুন এক অভিজ্ঞতার জার্নী শুরু হলো। গাড়ীর ভিতরে এসে কলিজাটা ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। রাগে ক্ষোভে অপমান যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছি। গরমে দেহ থেকে প্রান বের হয়ে যাচ্ছে। সামান্য একটু বাতাসের জন্য ছোট জানালার ফাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে চেষ্ঠা করে দুর্বল দেহ নিয়ে দাড়িয়ে আছি। পুলিশকে ৫০০ টাকা দিয়ে ফোন করানোর চেষ্টা হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। শত চেষ্টা করেও পানি পাওয়া যায়নি। শেষতক একটি সস্তা দামের আইসক্রিম পাওয়া গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published.