ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মনবাড়িয়ার কসবায় গত বুধবার সন্ধ্যায় কায়েমপুর ইউনিয়নের কালতা এলাকায় মো.হারুন মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। এদিকে তার পরিবারের দাবী পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করে রেল লাইনের পাশে ফেলে রেখেছে। নিহত হারুন মিয়া উপজেলার ধ্বজনগর গ্রামের মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে। সে কসবা পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডে শান্তিপাড়ায় নিজ বাড়িতে বসবাস করত। নিহত হারুন মিয়া সিআইডি সহ বিভিন্ন সংস্থার সোর্স হিসেবে কাজ করত। রেলওয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করেছে।
জানা যায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা- চট্রগ্রাম রেলপথের কসবা উপজেলার কালতা এলাকায় রেল লাইনের পাশে হারুন মিয়ার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে ¯’ানীয় লোকজন ধারনা করে ট্রেনের ধাক্কায় হারুন মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ১১ টায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের স্ত্রীর হাসিনা আক্তার জানায়, তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ট্রেনের সাথে ধাক্কা লেগেছে বলে হত্যাকারীরা গুজব রটিয়ে রেলওয়ে পুলিশকে ভূল তথ্য দিয়েছে। তিনি জানান, সিআইডি পুলিশের দারোগা আলী আজমের ফোন পেয়ে তার স্বামী আছর নামাজের পর কালতায় গিয়েছে। সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর নিহত হারুন মিয়ার মোবাইলের মাধ্যমে ফোন করে তার পরিবারকে নিহতের খবর জানানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধ্বজনগর গ্রামে তার পৈতৃক ভিটেমাটি ভ’মিদস্যুরা দখল করে রেখেছে। অপরদিকে তার পৌর এলাকার হাকর গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ীর জায়গা জমি নিয়েও ভূমিদস্যুদের সাথে তার বিরোধ রয়েছে। এ ছাড়াও বায়েক ইউনিয়নের কাশিরামপুর গ্রামের জনৈক জাহিদ নামে এক ব্যক্তির কাছে ১০ লাখ পাওনা টাকা নিয়ে চলমান এক মামলায় সে স্বাক্ষী হিসেবে রয়েছে। ¯’ানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ধারনা করছেন চোরা চালানের গড ফাদাররা তার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারে।
সহকারী স্টেশন মাষ্টার মো. লুৎফর রহমান জানান, রাত নয়টায় খবর পেয়ে সে আখাউড়া জিআরপি পুলিশকে জানায় কালতা নামক স্থানে রেল লাইনের পাশে একটি অজ্ঞাত মৃতদেহ পড়ে আছে।
ট্রেনের চালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান কসবা থেকে মন্দাবাগ পর্যন্ত সান্টিংয়ের সময় ইঞ্জিনের সাথে কোনে মানুষের ধাক্কা লেগেছে বলে আমার চোখে পড়ে নাই।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি শ্যামল কুমার জানান, রাত নয়টায় কসবা রেলওয়ে স্টেশন ম্ষ্টাার লুৎফর রহমানের পাঠানো বার্তায় জানতে পেরে আমরা রাত ১১ টায় মৃতদেহ উদ্ধার করি। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠাই।
বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার পরিবারের মধ্যে চলছে শোকের মাতম। নিহত হারুনের জৈষ্ঠ পুত্র আলমগীর জানায়, তার বাবাকে পেছন থেকে আঘাত করেছে বলে ধারনা করা হ”েছ। হত্যা করে রেলের ইঞ্জিনের সাথে ধাক্কা লেগেছে বলে অপপ্রচার চালিয়েছে হত্যাকারীরা। কসবা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মনির হোসেন জানান, হারুন মিয়া পরিকল্পিত হত্যার শিকার, এ বিষয়ে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন জানান, এটি হত্যাকান্ড, হত্যাকারীদের খুজে বের করে বিচারের দাবী জানাচিছ।