যে বুলেট শেখ হাসিনাকে এতিম করেছে, সেই বুলেটই কিন্তু খালেদাকে বিধবা করেছিল

টিপু, ষ্টাফ রিপোর্টার॥ সড়কপথ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয় বাংলাদেশে আইসিটি বিল্পবের আর্কিটেক্ট, মেয়ে আটিজম নিয়ে কাজ করে বিশ্ব দরবারে সাড়া জাগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হিসেবে নয়, নিজেদের যোগ্যতায়, পড়াশোনা করে তারা ওই জায়গায় গিয়েছেন। শেখ রেহেনার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী বৃটিশ পার্লামেন্টে সাড়া জাগানো তরুণ বক্তাদের একজন। তারা হাওয়া ভবনও গড়েননি, খাওয়া ভবনও করেননি, লেখা পড়া করেছে। যোগ্যতা দিয়ে জীবনকে চালিয়ে যাচ্ছে, তারা আজ পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত।
শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বিএসএমএমইউ শাখা এই আলোচনার আয়োজক। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, পলাশী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত মীর জাফর আলী খা, ইয়ার লতিফ-তাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন, তাদের কারও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। এমনকি ঘষেটি বেগমেরও। আমার বিশ্বাস- বাংলার মাটি এই রক্ত হজম করবে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, এ যাবৎ যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের কারও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। অন্যেরা পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কাজেই ইতিহাসেরও একটা বিচার আছে। ইতিহাসেরও আদালত আছে। সে আদালতে নেপথ্য অপরাধীদের, বেঈমান- বিশ্বাসঘাতকদের বিচার হবে, ক্ষমা হবে না। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের যারা পুনবাসিত করেছে, পুরস্কৃত করেছে, তাদের বাংলার মাটি হজম করবে না। তাদের কারও কারও বিচার হয়েছে, হবে। ইতিহাস বেঈমান বিশ্বাস ঘাতকদের ক্ষমা করবে না। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা। যে বুলেট শেখ হাসিনা-শেখ রেহেনাকে এতিম করেছিল, সেই বুলেট কিন্তু খালেদা জিয়াকে বিধবা করে দিয়েছিল। জনাব জিয়াউর রহমান যদি খুনিদের পূনর্বাসিত পুরস্কৃত না করতেন, সতবে আরেকটা ষড়যন্ত্রের বুলেট জিয়াউর রহমানকে হত্যার দু:সাহস পেত, এটা আমাদের বিশ্বাস। হত্যা হত্যাকে ডেকে আনে, খুন খনকে ডেকে আনে। তারাই খুনের রাজনীতি বাংলাদেশে ইনষ্টিউশন করেছে, এখানে আবেগ নেই সত্য আছে।
মন্ত্রী বলেন, ৭৫’র এরপর কী দুর্বিষহ জীবন-যাপন, ইন্দিরা গান্ধী যদি আশ্রয় না দিতেন, কী দুর্দশাই না হতো শেখ হাসিনার। শেখ রেহেনা এসিস্ট্যান্ট লাইব্রেরিয়ানের চাকরি করতো! কোনো রকমে একটা ঘরের মধ্যে থাকতেন। ধন-সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে, চরিত্র হননের ছোরা দিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হত্যা করতে চেয়েছিল, আমি আজ চ্যালেঞ্জ করছি ৪১ বছর পর, তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোথাও কী বঙ্গবন্ধু পরিবারের নামে কোনো সম্পদ, কোনো অর্থ কী পাওয়া গেছে? কোথায় সোনা, কোথায় টাকা, কোথায় সম্পদ? বদনাম তো কম করেনি। কতভাবে এই পরিবারকে ছোট করা, অবমূল্যায়নের ছোরা দিয়ে ছোট করার চক্রান্ত করা হয়েছে। বিএসএমইমইউ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএসএমএমইউর ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সিনিয়র চিকিৎসক নেতা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বিএসএমএমইউর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আলী আসগড় মোড়ল প্রমুখ বক্ততা প্রদান করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, কারা এদেশে খুনের রাজনীতি শুরু করেছে? যে জন্য আজ ঝয়জনকে পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদেরকে বাইরে যাবার অনুমতি কে দিয়েছিল? এ সত্য কেন প্রকাশ করা হয় না? কারা ইনডিমিনিটি জারি করে এই খুনীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিল। সে ইতিহাস কি আমাদের অজানা? ১৫ আগষ্ট না হলে একুশে আগষ্টও হতো না। যারা ১৫ আগষ্টের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তারাই ২১ আগষ্টের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ছিল। একই ষড়যন্ত্রের ধারাবিহকতা। ২১ বার এটমপ্ট নিয়ে ২১ আগষ্ট তাকে চিরতরে শেষ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালানো হয়েছি। আল্লাহ শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছে, আইভি রহমানসহ ২২টি প্রাণ প্রদীপ নিভে যায়। আমরা আহত। নামাজের সেজদাহে যেতে কষ্ট হয়, চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে হয়। নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.