রক্তাক্ত এবং আক্ষেপের আগষ্ট

আগষ্টকে ঘীরে বাঙ্গালীর অনেক হতাশা ও দু:খ এমনকি আক্ষেপের কমতি নেই। এই আগষ্টেই বাঙ্গালী জাতীর স্বপ্নকে হত্যা করা হয় আবার এই আগষ্টেই এই হতভাগা জাতীর স্বপ্নকে জাগিয়ে তোলার জন্য বা পুনরুজ্জ্বিবীত করার কাজে যারা ব্রতী নিয়ে এগিয়েছেন তাদেরকে শেষ করার চক্রান্তও বাস্তবায়ন করা হয় যার আংশিক বাস্তবায়িত হওয়ার কারণে অন্ধকারের কীটদ্বয় পুরোপুরি অন্ধকারের চাদরে শেখ মুজিবের রক্তে রাঙ্গানো বাংলাদেশকে আবৃত করতে পারে নাই। তাঁরই কণ্যার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের সোনার বাংলা তাঁর অভিষ্ট লক্ষ্যে। কথা হলো আক্ষেপ নিয়ে: আইভি রহমানসহ সেইদিনের নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচার আজো জাতী দেখতে পাইনি। একটি দেশের বিচার ব্যবস্থা কতটুকু স্বাধীন হলে বিচার ব্যবস্তার দীর্ঘসুত্রীতা ঘটে তারও একটি প্রমান এই আক্ষেপেই। শ্রদ্ধেয় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তাঁর জীবদ্দশাই প্রীয়তমা ্স্ত্রীর বিচার দেখে যেতে পারেন নি। ক্ষমতার কি কোন কমতি ছিল? তিনিতো ছিলেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি এবং তাঁরই দল ক্ষমতায়? আক্ষেপ ছিল আছে এবং থাকবে কিন্তু এই আক্ষেপ নিয়েই আমাদের পথ চলতে হবে। তবে আক্ষেপ থেকে কিছু শিক্ষাও আমাদের নিতে হবে। কারণ বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা এবং স্বাধীনতার বাস্তবায়নের জলন্ত দৃষ্টান্ত হলো এইসকল মামলার বিচার এর দীর্ঘসূত্রীতা। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিচার এখনও চলমান। সরকার ইচ্ছ করলেই বা ক্ষমতা প্রয়োগ করলেই অতি দ্রুত সময়ে এই ফয়সলা হয়ে যাবে। কিন্তু প্রশ্ন এখানেই … বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং এই স্বাধীনতা সরকার হস্তক্ষেপ করেনি এবং করবে না তাই বিচারের গতিও স্বনিয়মেই চলবে। শুধু ইতিবাচক আক্ষেপগুলো হজম করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
শ্রদ্ধেয় জিল্লু ভাইয়ের পরিবার প্রতি সমবেদনা এবং সহানূভূতি জানিয়ে বলছি আমরাও এই বিচার দেখে যেতে চাই এবং ধৈর্য্যধরে অপেক্ষা করে আছি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার আশু ফল দেখার আশায়। দেশের ন্যায়ের প্রতিক সম্মানীত বিচারকগণকে বলছি আপনারা যে দায়িত্ব পেয়েছেন এই দায়িত্ব একমাত্র আল্লাহর হাতেই রেখেছেন এবং তিনি রোজ হাসরে কিয়ামতের দিন এর সর্বোচ্চ প্রয়োগ করবেন। যেহেতু সিম্বলিক হিসেবে পৃথিবীতে আপনারা এই বিচার করছেন তাই আপনাদের প্রতি অনুরোধ আপনাদেরও একজন বিচারক আছেন ভেবে আপনারা সমস্ত বিচারগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করুন যাতে বিচার প্রার্থীরা তাদের জীবদ্দশাই আপনাদের ন্যায়ের দন্ডের প্রকাশিত ফল দেখে নিশ্চিত গন্তব্যের পথে ফিরে যেতে পারে। পাশাপাশি মানুষের আক্ষেপ এবং রক্তাক্ত পরিস্থিতির অবসান ঘটে।
দায়িত্ব আসলে আল্লাহর কাছ থেকেই আসে বিভিন্ন মাধ্যমে। আর সেই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে হতে হয় স্বচ্ছ, আন্তরিক, জবাবহিতাপূর্ণ ও বিশ্বস্ত। আমরা দেখেছি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ২১ আগষ্টের ঘটনায় আওয়ামী মানব বর্ম এবং মাহবুব তার দায়িত্ব কিভাবে পালন করে দেখিয়ে গেছেন আমাদেরকে আগামী দিনের প্রস্তুতি নিতে। হাজারো সালাম মাহবুবসহ সেদিনের সকল বীর সেনানীদেরকে। যাদের বিনিময়ে ফিরে এসেছেন নতুন জীবনে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজকের আসনে। সেইসকল নেতা-কর্মীদের ত্যাগের মহিমা ভুলার নয় এবং তাদেরকে জাতীয় বীর সেনানী হিসাবে ঘোষনা করা হউক। তারা জীবন দিয়ে কেউ জীবন বাজী রেখেই বাংলাদেশের অস্তীত্বকে টিকিয়ে রেখেছেন যেমনি করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পথ দেখিয়েছিলেন। আজকে তাদেরকে বিশেষ মর্যাদায় রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হউক। সততা এবং বিশ্বস্ততা ও ত্যাগ স্বীকার দেখিয়েছেন মুহিত ভাই যিনি আজ আর নেই কিন্তু তাঁর সেই ত্যাগ, সততা, বিশ্বস্ততা আছে আমাদের মাঝে। তাকেও সম্মানীত করা হউক এবং তাঁর আদর্শকে বাঙ্গালী জাতীর কাছে পৌঁছে দেয়া হউক। কারণ এই জাতি আগামী দিনে গঠিত হউক নির্লোভ মুহিতুলদের আদলে। ক্ষমতার সর্বশিখরে থেকেও যারা এই স্বচ্ছ ও সাধারণ জীবন উপভোগ করে যাচ্ছেন তাদের দৃষ্টান্ত থেকেই তৈরী হবে আগামীর বীরত্বগাঁথা মানব ও মানবীদ্বয়।
আক্ষেপের জায়গাতো অনেক আর তা প্রকাশ করার মতো ক্ষমতা বোধহয় আমার নেই। এই জাতীর আক্ষেপের শেষ নেই যেখানে সেখানে আবার নতুন আক্ষেপের যোগ হলো এই আগষ্টেই। এইতো সেদিন বিবিসি সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম আমার দেশের গরীব মানুষের রক্ত বিক্রির টাকা অনুদান হিসেবে চলে গেল যাদের টাকার প্রয়োজন নেই সেই ব্যক্তির ফাউন্ডেশনে। কি চমৎকার? গ্রামীন ব্যাংকের প্রশ্নবোধক ফাউন্ডার হিসেবে আমাদের শ্রদ্ধেয় ড. ইউনুছ সাহেব অনেক সুনাম অর্জন করেছেন নিজের জন্য। সম্পদশালী হয়েছেন এবং অনেককে করেছেন তারপরও তিনি ক্ষান্ত হননি সেই জাগতিক লোভ থেকে। যদিও আমার কোন যোগ্যতা নেই নোবেল কমিটি সম্পর্কে কথা বলতে তারপরও আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে বলছি কি কারণে এবং কি লক্ষ্যে এই নোবেল দেয়া হলো আমাদের হিরো জনাব ড. মোহাম্মদ ইউনুছ সাহেবকে জানিনা। আমাদের দেশেতো এর চেয়ে অনেক বড় অর্জন করা অনেক কৃতিসন্তান ছিলে এবং আছে তারার প্রতি কেন এই বিরুপ আচরণ তাও বোধগম্য নয়। যাক সেই কথা। যিনি অন্তত দেশের জন্য একটি কাজ করেছেন এই নোবেল সম্মান অর্জনের মধ্যদিয়ে। গরীব দু:খী মানুষে সংসার বিনাশ করে, সামাজিক বিশৃংখলা সৃষ্টি করে হয়েছেন বিশাল সম্পদের মালিক এবং দেখিয়েছেন গোলক ধাধার চমৎকার খেলা। জনাব ইউনুছ এই বাংলাদেশের চরম হতাশার সময় এমনকি রাজনৈতিক সংকটের সময় কোথায় ছিলেন এবং এর ভূমিকা ছিল কি? আমার প্রশ্ন উনিই শান্তির দূত এবং শান্তিতে নোবেল পাওয়া ব্যক্তি বা রক্তে মাংসে গঠিত মানুষ। আর যদি তাই হতেন, তাহলেতো বাংলাদেশের কঠিন সময়য়ে বিশেষ করে আগুন সন্ত্রাস চলাকালীন সময়ে অন্তত কিছু একটা করার চেষ্টা করতে পারতেন? আথবা বাংলাদেশের প্রয়োজনে তিনি নিজেকে নিবেদিত প্রাণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু কি করছেন বা ভবিষ্যতে কি করার কোন ইচ্ছা তার আছে? হ্যা একসময় দেখেছিলাম তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করেছিলেন যেমনি রূপে জিয়া করেছিলেন। তিনি কিন্তা তা পারেননি এবং আগামী দিনে পারবেনও না। জাতি তাকে কিভাবে বর্জন করবে তা দেখা শুধু সময়ের ব্যাপর। মানব সেবা একটি মহৎ গুণ এবং এই গুণটি আসে মহান রাব্বুল আলআমীনের কাছ থেকে। শ্রদ্ধেয় ইউনুছ সাহেবের সেই গুনটি বোধহয় মহান খোদা দেননি। তাই তিনি সেটি না করে শুধু নিজের আখের গোছাতে চেষ্টা করেন। এইতো এবারের বন্যায় অনেক ক্ষমিগ্রস্ত মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করেছেন; কিন্তু সরকার এবং বেসরকারি কিছু সংস্থা, ছাত্র, সামাজিক কিছু বিত্তশালী লোক পাশে দঁড়িয়েছেন। যা আমরা গৌরবের সঙ্গে বলতে পারি। কিন্তু জনাব ইউনুছ সাহেব কি করলেন তিন তাঁর অবৈধ অর্জন গরীব মানুষের হক অনুদান হিসেবে দান করলেন আগামী দিনের আমেরীকার প্রেসিডেন্ট হিলারী ক্লিনটনকে। তার ফাউন্ডেশনে দান করার মধ্যেদিয়ে জানান দিলেন তার পাহারসম টাকার মালিকানার কথা। আর এই অসলে কিভাবে আসলো? আসলো আমাদের গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের ঘাম এবং রক্তঝরা আয়-রোজগার থেকে। কার টাকা কে দান করে? কি দারুন ব্যাপার বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে অনুদান যায় ইউএসএতে। তবে বলতে পারি আমরাতো মধ্যম আয়ের দেশে রয়েছি এখন এই অনুদানের মাধ্যমে এও জানানো হলো বাংলাদেশ এখন উচ্চ আয়ের দেশে পৌঁছে যাচ্ছে। যাক ভাই ইউনুছ আমাকে ক্ষমা করুন কিন্তু আপনার যদি বিবেক থেকে থাকে এবং উপলব্দি করার অনুভূতি থাকে তাহলে দেশের এবং জনগণের কথা ভাবুন এবং আগামী দিনে কিভাবে এই দেশের মানুষের সামনে নিজেকে দাঁড় করাবেন সেই উপায় এখনই খুঁজে বের করুন।
সরকার এবং আপামর জনসাধারণ অধির আগহে অপেক্ষায় আছে আমাদের রক্তাক্ত এবং আক্ষেপের অবস্থা থেকে আগষ্টকে মুক্ত করতে এবং জাতি মুক্ত থাকতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.