আনন্দ উপভোগে সাবধানতা

আসছে ঈদুল আযহার আনন্দ যেন ছাপিয়ে যায় আমাদের বাঙ্গালী জাতির জীবনের সকল ক্ষেত্রে। এই আনন্দ উদযাপন হউক সার্বজনীন এবং আনন্দের মধ্যেদিয়ে ধুয়ে-মুছে যাক সব ঘøানিময় স্মৃতিগুলি। কোরবানীর পশুর গলায় ছুরি চালানোর পূর্বে ভাই বন্ধু প্রতিবেশী এবং আন্তীয়সজনের সঙ্গে ন্যুনতম মনোমালিন্যও যদি থাকে সেই ঘুচিয়ে বা মিটিয়ে নিয়ে গরুর গলার ছুরি চালান তাহলে সেই কোরবানী কবুল হবে আল্লাহর দরবারে। সমাজ ও দেশ ফিরে পাবে শান্তি এবং আনন্দের ¯্রােতে ঘা ভাসিয়ে চলার দিশা। কোরবানী প্রসঙ্গে মহান রাব্বুল আলআমীন বলেছেন “কুরবানগাহের সামনে তোমার দান কোরবানী  দেয়ার সময় যদি তোমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকে তাহলে আগে তোমার ভাইয়ের সঙ্গে মিলিত হও এবং সবকিছু মিটিয়ে এসে দান কোরবানী দাও, তাহলে তোমার ঐ দান কোরবানী আমি কবুল করব।”
সরকারের সার্বজনীন সাফল্য দেখে সকলেরই আনন্দ প্রকাশ হচ্ছে এবং কারো কারো ইর্ষাও হচ্চে। আমাদের কুটনৈতিক সাফল্য, পররাষ্ট্রনিতির সাফল্য, পরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়নে সাফল্য, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাফল্য, জঙ্গিদমনে যুগান্তকারী সাফল্য, সন্ত্রাস নির্মূলের দৃষ্টান্তকারী সাফল্য, দেশকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে এগিয়ে যাওয়ার সাফল্য, যোগাযোগ কাঠামো এবং নতুন যোগাযোগের উৎসের সন্ধান এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপের বাস্তবায়ন সাফল্য, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং জালানীসহ প্রকৃতিক সম্পদ মওজুদ ও এর সুসম বন্টন সাফল্য এবং আগামীর করনীয় নির্বাচনের সাফল্য…. সবকিছু মিলিয়ে প্রকাশ করে শেষ না করার সাফল্যই দেশবাসী তথা বিশ্ববাসীকে ভাবতে এবং ধীরে ধীরে স্বীকৃতি দিয়ে বাস্তবতা স্বীকারে বাধ্য করছে। যদিও নিন্দুকদের নিন্দার ঝর বইছে এবং আগামীতেও বইবে। আর এই নিন্দার ঝর থেকেও প্রমাণিত হয় সার্বজনীন আনন্দের। তাই আমাদেরকে সাবধান হতে হবে এই আনন্দকে ধরে রাখতে। উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে। পিছপা হলে চলবে না। এগিয়ে যেতে হবে আমাদের অভিষ্ট লক্ষের দিকে।
সকল অগ্রগতি, উন্নয়ন ও আনন্দ উপভোগের মাঝে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা আমাদেরকে ভাবায় এবং সেই ঘটনার পরিক্রমাই আমাদের সার্বজনীন আনন্দ, উন্নয়ন গতি এবং জনগণের মনের কাঙ্খিত লক্ষ ও ইচ্ছার ভাটা পড়ে বা অগ্রগতিতে বাধা পড়ে এই বাধাকে অপসারণ করতে হবে এবং স্বচ্চতার সঙ্গে চলামান আনন্দ এবং উন্নয়ন অগ্রগতিকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে ন¤্রতা এবং বিজ্ঞতার সঙ্গে ভালবাসার সংমিশ্রনে। কোনো বাধাকেই পাশ কাটিয়ে গেলে চলবে না বরং গুরুত্ব দিয়ে সমস্যার সমাধান করাই শ্রেয়। আশা করি আগামী দিনে ছোট-খাট ভূলত্রুটি সংশোধন করে আরো আন্তরিকতার সহিত আমাদের উন্নয়ন অগ্রগতি এবং তৃণমুলের ভাবনায় গতীশিলতা আনতে কাজ করতে হবে। সজাগ থাকতে হবে অনাকাঙ্খিত আর কোন ঘটনা না ঘটুক এবং ভুল ধারনা থেকে কোন দল বা মানুষ আর নিজেদেরকে শেষ করে না দিক এমনকি ঘৃনার অতল গহবরে ডুবে না যাক। এখন এই ঈদুল আযহার কুরবানীর মাধ্যমে সকল পাপ, মন্দতা এবং লোভ, হিংসা-বিদ্ধেষ এর বিসর্জন দিয়ে সার্বজনীন আনন্দ উপভোগ করি এবং সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভের আশায় না থেকে লাভ করে এমনকি সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে থেকেই আগামী জীবনটা উপভোগ করি।
আনন্দের মাঝে দুঃখের খবরও প্রকাশিত হয়। যেমন সরকারের এবং সরকারি বাহিনীর কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত সততা এবং দায়িত্ব পালনের স্বচ্চতার খবরে আমরা উৎসাহিত এমনকি আমাদের সহযোগীতার হাত দ্বিগুন ভাবে প্রসারিত করি। ঐ সততাকেই দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করে আগামীর প্রজন্ম বা ভীত রচিত হচ্ছে। আসুন আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সচেতন হই। জবাবদিহীতার সম্পূর্ণ ব্যবহার করি। আমাদেরকে অনেকেই অনুসরণ এবং অনুকরণ করছে এই ভেবে কাজে স্বচ্চতা এবং জবাবদিহীত বৃদ্ধি করি। সর্বোপরি আল্লাহ তায়ালা তো আমাদের সব খবরই রাখেন যা রোজ হাশরে শওয়াল জবাব ও হিসাবের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে বেহেস্ত বা দোজহের ভাগ্যাবরণের মাধ্যমে। মাঝে মাঝে যে পাপের বিশাল অট্টালিকার সংবাদ শোনা যায় বা ক্ষমতার অপব্যবহার ও অন্যায় বিচারের রায় শোনা যায় তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ফিরে আসা এবং আগামী প্রজন্মকে জানান দেওয়া যে পাপী বা অন্যায়কারীদের রেহাই নেই এখানে এবং সেখানে। সুতরাং সাবধান হউন। অন্যায়, জুলুম, নির্যাতন, জালিয়াতি করে দুনিয়াবী ধনী হওয়ার চেয়ে বরং বেহেশতে ধন সম্পদ জমা করা অনেক ভালো এবং স্থায়ী। সেখানে ঘুনে ধরে না এমনকি পোকায় নষ্ট করে না। তাই আনন্দ উপভোগে সাবধান হউন।
আসন্ন ঈদে সরকারের নেয়া সকল পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। কারণ সরকার জনগনের জান মাল রক্ষকল্পে সচেষ্ট এবং আন্তরিক। আমাদের করণীয় হল সরকার এর গৃহতি পদক্ষেপগুলোকে বাস্তবায়িত করা। পাশ কাটিয়ে না গিয়ে যার যার অবস্থান থেকে সরকারকে সহয্গোীতা করা। তাহলে জান মালের কোন ক্ষতি হবে না। আর বিশেষ করে যাদের উপর দায়িত্ব তারা একটু আন্তরিক এবং ধৈয্যশীল হয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে যার যার দায়িত্ব পালন করলে ইনশাআল্লাহ আমরা আগামী দিনে কোন দুঃখের সংবাদ শুনতে পাব না। জান মান রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ঠিকই কিন্তু আমাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব দায়িত্ব আছে যে কিভাবে আমরা আমাদের জীবন রক্ষা করবো এবং কিভাবে সরকারের পদক্ষেপের সঙ্গে একমত হয়ে কাজ করবো। যদি আমরা এই একমত পোষণ করে এগিয়ে যেতে পারি তাহলে সমস্যাহীন জীবন উপভোগ করতে পারবো। যদি দ্বিমত পোষণ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করি তাহেল যানযট ও দুর্বিসহ জীবন ভোগ করতে হবে। এ পযন্ত নেয়া নৌপথ, রেলপথ, আকাশপথ এমনকি সড়ক মহাসড়কের সকল নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলায় কোন ঘাটতি নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোরবানীর হাট একটি সমস্যা কিন্তু সেটিতেও সরকার সার্বিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যেন জনগণের কল্যাণে সবকিছুই নিরাপদে এবং শান্তিপূর্ণভাবে হয়। কোন কোন এলাকায় অসৎ ও লোভীজনগণ সরকারের সহজ ও সরল মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে কোরবানীর পশুর হাট নামকরণে সরকারী এবং পাবলিগের জায়গা দখল মহড়ায় মেতেছে। নতুন বালি ভরাট করে সেই জায়গা দখল কল্পে সকল পদক্ষেপ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশা করি আমাদের সফল সরকার সজাগ দৃষ্টি রেখে কুরবানী পরবর্তীতে ঐ হাট বাজার পুনরায় সরকারী এবং পাবিলিগের আয়ত্বে নিয়ে নিবে। কাউকে অন্যায়করে ভোগ করতে দেব না। তাই সাবধান অনন্দ উপভোগে। মতলববাজরা সবকিছুতেই তাদের মতলব হাসিল করতে প্রস্তুত থাকে।
ঈদ হউক আনন্দের, ত্যাগের ও মহিমার। সকল দৈন্যতা, মন্দতা বিসর্জনের এমনকি ঈদ পরবর্তী জীবন হউক শান্তির, আনন্দের, ভালবাসার, ক্ষমার এককথায় সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে প্রতিনিয়ত বসবাসের। ফিরে আসুন আবার নিরাপদে শান্তি এবং আনন্দ নিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে এ্টাই আমাদের কামনা। সকলকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছাসহ ঈদ মোবারক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.