খাদিজার পাশে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি॥ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছোয়ায় ফিরে পাবে নতুন জীবন এবং দুষ্টান্ত স্থাপিত হবে হাদিজার উপর আক্রমণকারীর। আগামী দিনের দৃষ্টান্ত প্রত্যক্ষ করে ভবিষ্যতে আর সাহস করবে না নতুন কোন খাদিজার জীবন বিনাশে এটাই আমাদের দেশবাসীর কামনা।  কলেজছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে  তিনি বলেছেন, হামলাকারী বদরুল যে দলেরই হোক না কেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে সুস্থ করে তুলতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজারে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় যোগ দিতে সিলেট আসেন। ঢাকা থেকে বিমানযোগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। সোমবার বিকালে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রী ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম নার্গিসের (২৩) ওপর হামলা চালায় শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক বদরুল আলম। এসময় সে চাপাতি দিয়ে খাদিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপুরি কোপাতে থাকে। এতে খাদিজার মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে সেলাই দেয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার ভোরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে। সেখানে আরেকদফা খাদিজার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে সে হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তার অবস্থা এখনও আশংকাজনক।
এদিকে ঘটনার সময় হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা বদরুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। সে বর্তমানে পুলিলি প্রহরায় ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। বদরুল ছাতক উপজেলার মুনিরজ্ঞাতি গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে এবং খাদিজা সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ আউশা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে। আহত খাদিজাকে সর্বপ্রথম রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রলীগের কর্মীরা সহ স্থানীয় জনতা হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং ছাত্রলীগের এক কর্মীর রক্তদেয়ার মাধ্যমেই খাদিজার চিকিৎসা শুরু হয়। দুঃখের বিষয় বদরুল এক সময় ছাত্রলীগ করতো এবং বার্তমানে সে একজন স্কুল শিক্ষক এবং সে ছাত্রলীগের কেউ নয়। আর তাঁর এই নৈতিক স্খলনের জন্যতো ছাত্রলীগ দায়ী নয়। দায়ী পরিবেশ, মানসিকতা এবং বিকৃত রুচি। সর্বোপরি বদরূল একজন মানষিক অসুস্থ্য শয়তান দ্বারা পরিচালিত রোগী। আমাদের সাংবাদিক বন্ধুগণ যেভাবে বদরুলের দায় ছাত্রলীগের গায়ে চাপানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তা অত্যান্ত গর্হিত কাজ এবং সাংবাদিকতার অপেশাদারী লক্ষণ। যখন কোন ভাল কাজ হয় তখন কেউতো দলের পরিচয়ে সংবাদ পরিবেশন করেন না বরং তাঁর ব্যক্তিপরিচয়েই নিউজ করে থাকেন। কিন্তু কোন দুঃঘটনা ঘটলেই প্রথমে ছাত্রলীগ তারপর আওয়ামী লীগ এর উপর দায় চাপানো হয়। এই ধরণের লেখনীল মানসিকতা এবং সংবাদ পটনের মানসিকতার মানোন্নয়ন প্রয়োজন। নতুন মানুষ সংবাদবিমুখ হবে।
বদরুল বদরুলই এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই সকলের কাম্য। তবে বদরুলরা যেন আর বদরুল হয়ে না উঠে সেই খবর নিয়ে এরও ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ শাস্তিই একমাত্র সমাধান নয়। এর পিছনের কারণগুলো চিহ্নিত করে এরও আশু সমাধান করা জরুরী। আর তাহলেই সমাজ তথা দেশ থেকে বদরুল মার্কা কাজ চিরতরে নির্মূল হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.