ডেমরায় প্রেমিকার ভাইদের প্রহারে প্রেমিকের মৃত্যু

ডেমরা প্রতিনিধি॥ ডেমরায় প্রেমের দায়ে জীবন দিতে হলো জাহিদ হাসান (২০) নামের এক যুবককে। এ ঘটনায় বুধবার ভোররাতে ডেমরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন জাহিদের বাবা মো. বারেক। ভোলার লালমোহন থানার কালমা গ্রামে বারেকের বাড়ি। রাজধানীর ভাটারা থানাধীন সাহজাদপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন জাহিদ। জাহিদের বাবা একজন রিকশাচালক। জাহিদ চাকরি করতেন একটি হার্ডওয়ারের দোকানে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ডেমরার পূর্ব বক্সনগর এলাকায় লিঙ্কনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন বারেকের মেঝ ভাই সিদ্দিক। পারিবারিকভাবে যাতায়াতের এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে জাহিদ ও চাচাতো বোন তামান্নার (১৫) সঙ্গে। জাহিদের দারিদ্রতার কারণে এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি তার চাচার পরিবার। নানা বাধা বিপত্তিতেও থেমে থাকেনি তাদের সম্পর্ক। মুঠোফোনে হতো তাদের যোগাযোগ। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হন তামান্নার বাবা। এ ঘটনায় গত ১০ই অক্টোবর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কৌশলে জাহিদকে ডেকে এনে বেদম প্রহার করেন তামান্নার ৩ ভাই, বাবা সিদ্দিক, মামা ফারুক সহ অজ্ঞাত কয়েকজন। পরে সিদ্দিক তার ভাতিজা জাহিদের বড় ভাই রিয়াজকে খবর দেন। পরে ঐ রাতেই সাড়ে ১১ টায় অচেতন অবস্থায় জাহিদকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন রিয়াজ। পরের দিন ১১ই অক্টোবার মঙ্গলবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়। এদিকে মঙ্গলবার বিকালে ঘটনা ধামাচাপা দিতে এবং নিজেদের রক্ষার উদ্দেশ্যে তামান্নার বাবা সিদ্দিক তার মেয়েকে বিরক্ত করার অপরাধে উল্টো জাহিদের বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে মঙ্গলবার সন্ধায় হাসপাতাল থেকে বিশেষ পুলিশ ডেমরা থানায় ঘটনাটি জানালে থানা পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে তামান্নার বাবা, তিন ভাই ও মামাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম কাওসার বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। প্রহারের পর মৃত জাহিদের ডান হাতের কনুইসহ সারা শরীরে থেতলে যাওয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে। এমনকি পায়ের পাতায় অমানুষিকভাবে আঘাত করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনা। তামান্নার ভাই মুসলিম, জুবায়ের, সাইফুল ইসলাম, বাবা সিদ্দিক ও মামা ফারুকসহ আসামিরা পলাতক থাকলেও শিগগিরি তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.