ভারতকে ধর্মান্ধদের দেশ বানাবেন না: তসলিমা

আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ ভারতকে ধর্মান্ধ দেশ না বানাতে দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের নির্বাসিত, বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি বলেন, ‘ভারত একটি উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। তাই কোনোভাবেই এখানে যেন মৌলবাদিদের উত্থান না হয়।’ সম্প্রতি ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ তসলিমা নাসরিন মনে করেন এখন তিনি ভারতে আছেন। এখন এটাই তার নিজের দেশ। আর তাই তিনি তার দেশকে পাকিস্থানের মতো মৌলবাদী দেশ না বানাতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। এবং ভারতে যেসব মৌলবাদী আছে তাদের লাগাম টেনে ধরার কথাও বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গিগোষ্টির হামলার কারণে অনেক ভারতীয় মারা গেছে। এর ব্যথা আমি বুঝি। কিন্তু পাকিস্তানি শিল্পীদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাটা এর সমাধান না।’ এ সময় তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতিও জোর দেন। তিনি বলেন, ‘ভারত ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি সচেতন। একটি উদারপন্থী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সুনাম আছে। কিন্তু মৌলবাদীদের লাগাম না টেনে ধরলে এ সুনাম ধরে রাখতে পারবে না।’ পশ্চিমবঙ্গ ও হায়দারবাদে তার উপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমি যখন সত্য কথা বলছি তখন আমার উপর হামলা চালাচ্ছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা, উল্টো উত্তেজনা সৃষ্টি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে।’
তার কলকাতা নির্বাসন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাকে কলকাতাতেও কয়েকবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই আমি কলকাতাতেও নির্বাসিত হয়েছি। আমি এখন কলকাতাতেও ফিরে যেতে পারব না। কিন্তু আমি ভারতের মত দেশে মৌলবাদিদের হামলার শিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি মর্মাহত হয়েছি। কারণ, ভারতকে একটি অত্যন্ত  প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’ উল্লেখ্য, বাংলাদেশের এই বিতর্কিত লেখিকা তার লেখা ‘লজ্জা’ বইটির জন্য বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। তারপর ভারতের কলকাতায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে সেখানেও মৌলবাদিদের হামলার শিকার হন তিনি। সেখান থেকে পালিয়ে বর্তমানে তিনি ভারতের অন্য একটি রাজ্যে আশ্রয়গ্রহণ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.