দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও ইতিবাচক মনোভাব

এখনই সময় বাংলাদেশের। এখনই সময় আমাদের। এখনই সময় দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার। এখনই সময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পথ চলার। বাংলাদেশ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছে মিশ্র সংস্কৃতি নিয়ে। আর এই মিশ্র সংস্কৃতির কবলে পড়ে আমাদের বিবেদ, হানা-হানি, ভেদাভেদ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিন্ত লাভের খাতার সেই শুন্যই বসবাস করছে। মাঝে মধ্যে কিছু আঙ্গুল ফুলে কলাগাছের উত্থান এবং পতন হয়েছে। কিন্তু দেশ, সমাজ, কাঠামো সেই শুন্যের কোটায়ই রয়েছে। তারপরও এই চড়াই উৎরাই পার হয়ে ভঙ্গুর এবং নিমজ্জ্বিত দেশকে টেনে তুলে এনেছে আজকের পর্যায়ে। কেউ হয়তো এর মধ্যে অনেক ত্রুটি অনুসন্ধান করে বের করেছেন। কিন্তু আসলে কি এই নি¤œগামীতা থেকে সংস্কৃতি, দেশ, কৃষ্টি-কালচার এবং সমাজ ব্যবস্থার কাঠামো পরিবর্তন করা খুব যে সহজ ছিল তা কিন্তু না। যেহেতু প্রতিটি মুহুর্ত্বেই করতে হয়েছে যুদ্ধ দেশীয় এবং বিদেশী চক্রের বিরুদ্ধে। তারপরও বলব সফল সফলতা এসেছে বৈকি। এখন প্রয়োজন শুদ্ধতার এবং আত্মশুদ্ধি জাগ্রত বিবেক নিয়ে পথ চলার।
তাই আসুন সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ইতিবাচক মনোভাব ও দৃষ্টি-ভঙ্গি নিয়ে পথ চলি। পথমধ্যে সহযোগীতার হাত বাড়াই ইতিবাচক দৃষ্টিতে। ভুলে যায় আমাদের স্বভাবের নেতীবাচন দৃষ্টিভঙ্গি। সকলে মিলে মিশে জনগণের সেবা করি। হানাহানি ও ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করি। ক্ষমতার লোভকে বিসর্জন দিয়ে ক্ষমতার পিছনে থেকে বা আড়ালে থেকেই দেশবাসীর সেবার ব্রতী নিয়ে এগিয়ে আসি। দোষ খোজা এবং সমালোচনা না করে বরং নিজের দোষ ও কৃতকর্মের সমালোচনা করে অন্যের প্রশংসা করে এগিয়ে যায়। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। অন্যের সেবা করার ব্রতী নিয়ে শুরু করি নতুন অধ্যায়। যেখানে শুধু শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। আগামীর জন্য থাকবে নতুন সুন্দর ও নিশ্চিত আবাসের ব্যবস্থা। যা নতুন প্রজন্মকে আরো গতিশীল ও আন্তরিক হতে সহযোগীতা করবে।
সরকারী দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি আবেদন অন্যের দোষ না ধরে শুধু নিজের দোষ খোজুন এবং নিজেদের উন্নয়নের কথা এমনকি আগামীর পরিকল্পনার সুফল ভোগ করার কথা জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিন। নিজ দলের লোকদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখুন। খোচা মেরে কথা বন্ধু করুন। পরনিন্দা ও গিবদ থেকে বিরত থাকুন। আগামী দিনের সরকারের ভীতকে মজবুত করতে প্রয়োজনীয় জনকল্যাণমুলক পদক্ষেপ নিন। অন্যায়কারীকে ক্ষমা করে দেশীয় উন্নয়নে ব্যবহার করুন যাতে দেশ আরো গতিশীল এবং দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে পারে। পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালনে আরো যতœশীল হউন। আচরণে ও কথা বার্তায় আরো পরিশীলন ও মার্জিত হউন। ক্ষমতার মালিক এমনকি আপনারও একজন মালিক আছেন ভেবে কাজ করুন। সেবা পেতে চেষ্টা না করে বরং সেবা করার মনোভাব নিয়ে কাজ করুন। দেশের প্রতিটি মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-হাসি-কান্নার মাঝে নিজেকে উপস্থিত রাখুন। বিরোধী দল ও মতের মানুষগুলোকে আগলে রাখুন যাতে তারা নতুন করে আর কোনো ভুল করতে না পারে।  সর্বোপরি যা সৎ, যা খাটি, যা মঙ্গল ও সম্মান পাবার যোগ্য সেইদিকে তোমরা মন দাও। এই পথে হাটুন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো প্রতি রইলো একই আহবান। নিজের লাভের আশায় আর সমাজের, দেশের/ রাষ্ট্রের এমনকি মানুষের ক্ষতি করবেন না। নিজের স্বার্থের পরিবর্তে অন্যকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করুন। সমস্ত বিরোধীতা, হিংসা-বিদ্দেষ, মোট কথা ক্ষতিকর চিন্তা ও সমালোচনা পরিহার করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি জাগ্রত রেখে এগিয়ে যান। সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে বেহেস্তি শাস্তি দিবেন। ভুল-ত্রুটি মানুষেরই হয় আর সকল ভুলগুলোকে ক্ষমা করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে সুন্দরের নিশ্চয়তা নিয়ে আগামীর পথে এগিয়ে গেলে দেশ এগুবো, এমনকি সবাই এগুবো। প্রমানিত হবে সংস্কৃতি বদলের কৃষ্টি আচার অনুষ্ঠান পরিবর্তনের। এই পরিবর্তনই আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পাথেয় হয়ে থাকবে। দীর্ঘদিনের যে কুসংস্কারাচ্ছন্ন সংস্কৃতি নিয়ে এগুচ্ছেন তা পরিহার করার এখনই উপযুক্ত সময় এবং আসুন নিজেকে পরিবর্তন করি এবং আন্যকে সম্মান করি ও প্রাপ্যটুকু দিয়ে নিজেকে একজন প্রকৃত মানুষ ও সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করি।
ক্ষমতার পালাবদলের আশায় বেসামাল হলে চলবে না বরং ধৈর্য্য ধরে নতুন স্বচ্ছ ও সুন্দর উন্নয়মুখী পরিকল্পনা নিয়ে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। এই কাজই আগামী দিনের নেতা নির্বাচনের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। ষড়যন্ত্রমুলক কর্মকান্ডে লিপ্ত না হয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব পরিবর্তনের এখনই সময়। ডিজিটাইজেশন পক্রিয়ার বাইরে থেকে রাজনৈতিকভাবে ফায়দা লুটার সময় শেষ। ডিজিটাল রাজনীতি এখনই শুরু করার সময়। আওয়ামী লীগ স্বাধীন করেছে দেশ; দিয়েছে স্বাধীনতা করেছে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর। দেখিয়েছে নতুনত্ব রাজনীতিতে এবং চমক দেখিয়েছে এবারের সম্মেলনে। এই সবকিছুই শিখার জন্য যথেষ্ট আমাদের দেশের নব্য রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলের জন্য। যত সম্বভ আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে সকলকে নিয়েই তাই সকলের সঙ্গে মিলে মিশে এগিয়ে যাই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে। দল, মত, গোত্র ভেদে ভেদাভেদ সৃষ্টি না করে বরং এক যেগে এদেশের বাসিন্দা ভেবে এগিয়ে যেতে হবে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। সংস্থাগুলি অবশ্যই সমন্বয় এবং সম্মান বজায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে। নতুবা সমস্যার অন্তরালে ঘনীভূত হবে উন্নয়ন।
শিশুদের রক্ষার জন্য খোলা হেল্প লাইন ‘১০৯৮’। এই নাম্বারটি যেন প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। এর অপব্যবহার রোধ কল্পে কঠোরতা জরুরী। জরুরী প্রয়োজনে ঢাকার রাস্তা ব্যবহার সংকীর্ণ তাই মেয়রদ্বয় যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা খুবই জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ। এই পদক্ষেপের সফলতা দেখতে চাই এবং ভবিষ্যতে এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক এই জোর দাবী রাখছি। বাংলাদেশের একটি অর্জন প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। এই অর্জনের মাধ্যমে সরকারের সাফল্য ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। আর স্বীকৃতিগুলিই আসছে বিশ্বদরবার থেকে। কিন্তু দেশীয়ভাবে আমরা কি কোন স্বীকৃতি দিয়ে সরকারকে উৎসাহ দিতে পারিনা? আমাদের কৃপনতা কোথায়। কিভাবে করতে হয় তা আমাদের শিখতে হবে। আসুন আমরা চর্চা করি প্রশংসা এবং উৎসাহ যোগাতে এবং নিজেরাও অন্যের উৎসাহ ও প্রশংসা গ্রহণ করি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও ইতিবাচক মনোভাব চর্চা শুরু করি এখন থেকেই। এগিয়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশকে। মাথা উঁচু করে দাড়াই বিশ্বদরবারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.