উগ্রবাদীতা ও বিশৃঙ্খলার দায় কার

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বিশ্ব কবিদের দেশ আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ নব দিগন্তে নব সূচনায় যখন উন্নতির শিখরে অগ্রসরমান…. তখনই ঘটছে একের পর এক বিপত্তি। মাঝে মাঝে থমকে দাঁড়ায় উন্নতির সোপান বা চাকা। আমরা ভাবি কেন এমন হলো বা আমরা কেউ কেউ এর পক্ষে বা বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করাতে চেষ্টা করি। কিন্তু কি একবারের জন্যও ভাবি যে এই সকল আশান্তি সৃষ্টির পিছনে কি অন্ত:নীহিত কারণ। আমাদের অনেক মাথা আছে, কারোটা মোটা, কারোটা আবার চিকন, কারোটা আবার মাঝারি। কই এইসকল মাথাগুলো একসঙ্গে বসেতো সমস্যার গভীরে প্রবেশ করে সমাধান নিয়ে এগোতে পারে না। শুধু সমস্যার বেড়াজাল বিস্তৃতি করা ছাড়া আর কি হয়। হয় একটি বিরল ও তরল জিনিস; যা হলো নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য এবং দোষারোপের আদীম খেলা। যা থেকে প্রকৃত সমস্যা অন্তরাল থেকে আরো গভীর অন্তরালে প্রবেশ করে।
সাঁওতালদের সমস্যা, হিন্দুদের সমস্যা, প্রশাসনিক সমস্যা, খুন, গুম, ধর্ষন ফুটপাত দখলসহ যত ধরণের সমস্যা এই সমাজে বিদ্যমান; যা দেখা যায় আবার যা দেখা যায় না। সবমিলিয়ে এই সকল সমস্যার দায় কার বা এই সমস্যা সমাধানকারী কে? আসুন না আমরা আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করি এবং এই বিবেক প্রসুত নিঃস্বার্থ ও নিঃশর্ত পরোপকারী উত্তর নিয়ে আগামীর জন্য কাজ করি।
একটি কথা না বললেই নই যে, সকল সমস্যার সমাধান শুধু যে শেখ হাসিনার বা সকল কিছুর দায় যে শেখ হাসিনার তা কিন্তু নয়। তিনি প্রধান এবং তিনিই সকল কিছু করে যাচ্ছেন। যার জন্য রাষ্ট এবং দেশ পাচ্ছে সম্মান ও উন্নতির ভিত্তি। কিন্তু সবই যদি তিনি করেন তাহলে এত মন্ত্রি, এমপি এবং রাজনৈতিক নেতার কি প্রয়োজন। বরং আমাদের দেশ হবে আরো সমৃদ্ধ যদি ঐ লোকদের বেতনের অংশ উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির কাজে লাগানো হয়।
আমি কাউকে কষ্ট বা আঘাত দেয়ার জন্য এই কথা লিখছি না বরং লিখছি আমাদের স্ব স্ব দায়িত্ব সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিজে নিজের মেধা ও মননের বিকাশ ও সকলের অংশগ্রহন নিশ্চিত করে অগ্রসর হওয়ার জন্যই বলছি। আজকে সাঁওতাল সমস্যার সমাধান হয়েছে, কে করেছে … মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। খুব ভাল কিন্তু প্রধান মন্ত্রীরতো আরো অনেক কাজ রয়েছে এবং এই জন্যই তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন মন্ত্রী, এমপি, ও স্থানীয় নেতৃত্বের উপর। পাশাপাশি এই দায়িত্ব দলীয় নেতাদের উপর বর্তায়। কিন্ত কি দেখছি, সবই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুখোপানে চেয়ে সমস্যার ঘনত্ব বাড়িয়ে বসে থাকে। তাই যদি হয় তাহলে তাদের আর প্রয়োজন নেই। জনগণ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই যোগাযোগ করে তাদের সমস্যার কথা বলে সমাধান পেতে পারে। এই যে সমস্যা সৃষ্টি হয় তা কিন্তু একদিনেই হয়নি বরং দিনের পর দিন একটু একটু করে বৃদ্ধি পেয়েই বিস্ফোরণম্মুখ হয়। যখন যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের মন্ত্রী, এমপি, স্বানীয় সরকার মনোনীয় ব্যক্তিরা ও দলীয় নেতৃবৃন্দ মিলে যদি সমস্যার সমাধান করে সুখ, শান্তি এবং নিশ্চিত আনন্দের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখি তাহলেতো আমাদের মনোমালিন্য এবং অন্তদ্বন্ধের কারণে মনোকষ্টে ভুগতে হয় না এমনকি বিশাল ক্ষতির (দলীয়, রাষ্ট্রীয়, সম্পদ ও জীবন) মুখ থেকে বাঁচতে পারি। নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সকল সমস্যার অন্তরালে যে অনুঘটক রয়েছে সেই অনুঘটকে খুঁজে বের করে আগামী দিনের ঐসকল সমস্যার সমাধান করে চীতররে ঝঞ্ঝা বিক্ষোভ দুর করা হউক, সমন্বয়ের ভিত্তিতে (মন্ত্রী, এমপি, প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং জনগণের অংশগ্রহনে) এই সংস্কৃতি চালু হউক দৃষ্টান্ত হিসেবে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হউক শান্তির স্বর্গ হিসেবে।
আমার একটি আক্ষেপ হই দলীয় নেতা-কর্মী এবং মন্ত্রী এমপি সাহেবরা কি এখনো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আকাঙ্খা, ইচ্ছা, অভিপ্রায় ও সর্বোপরি মনোভাব বুঝতে পারেন নি। যদি না পারেন তাহলে বোঝার জন্য লিখাপড়া শুরু করুন এবং তাড়াতাড়ি বুঝে সেই ইচ্ছা, আকাঙ্খা, অভিপ্রায় ও সর্বোপরি মনোভাব অনুযায়ী কাজ করুন। দেখবেন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী আরো দ্রুত লক্ষে ঁেপৗছতে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে এগিয়ে যাবেন।
আমাদের, আপনাদের সৃষ্টিকরা সমস্যা সমাধান করেই যখন প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত; তারপর পরও তিনি দ্রুত লয়ে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করছেন, দয়া করে আর বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না। সকল কিছুই আপনারা দায়িত্ব নিয়ে সেবার মনোভাব কাজে প্রকাশ করুন। আমি কারো নামোল্লেখ না করে শুধু বলতে চাই বিবেক ও চোখ খোলে দেখুন কিছু কিছু মন্ত্রীমহোদয় ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা কিভাবে তাদের নিজস্ব সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর দারস্থ ছাড়াই সমাধান করে এগিয়ে যাচ্ছেন।
রাষ্ট্রের মাথা প্রধানমন্ত্রী এই প্রধানমন্ত্রীকে নিরলসভাবে তাঁর কাজটুকু করতে দিন যাতে আপনার ও আমার সর্বোপরি দেশের নিশ্চিত কল্যাণ ও উন্নতির ধারাবাহিকতা দ্রুত লয়ে এগিয়ে যায়। প্রসাসনিক বাধাও দুর করুন এবং অন্তদ্বন্ধ ভুলে গিয়ে একমন নিয়ে সবাই জনতার কাতারে ঝাঁপিয়ে পড়–ন। দুরত্ব সৃষ্টি না করে দুরত্ব লাঘবে কাজ করুন। একই কাতারে কাজ করতে সুবিধা এবং এর ফলপ্রসূতা ব্যাপক। আসুন আমরা এগিয়ে যাই একসঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে জনতার সঙ্গে। ভুলে যাই আমাদের মাঝখানের বিভেদ এবং দুরত্বের বেড়াজাল। তাহলেইতো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও শেখ হাসিনার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তি হবে এবং জাতি ভোগ করবে উন্নততর জীবন ও নিশ্চিত বাসস্থান, চিকিৎসা, খাবার, শিক্ষা ও কমসংস্থানের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা। বাংলাদেশের যে অর্জনগুলি আজ দৃশ্যমান এই অর্জনের সঙ্গে যে আরো অনেকদুর এগিয়ে যেতে হবে আমাদের সুনিশ্চিত আগামীর জন্য সেই দিকে মনোনিবেশ দিয়ে কাজ করুন। অহৎকার, ঘৃণা, সামাজিক স্ট্যাটাস, বিভেদ ও ফ্যাতনা-ফ্যাসাদ ভুলে গিয়ে যা সত্য, যা উপযুক্ত, যা সৎ, যা খাঁটি, যা সুন্দর বা সম্মান পাবার যোগ্য, মোটকথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে তোমরা মন দাও।
আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রাখি এবং তার কালামের উপর স্থির থাকি। মাবুদ বলেছেন, “তোমাদের জন্য আমার পরিকল্পনার কথা আমিই জানি; তা তোমাদের উপকারের জন্য, অপকারের জন্য নয়। সেই পরিকল্পনার মধ্যদিয়ে তোমাদের ভবিষ্যতের আশা পূর্ণ হবে।” হ্যা মঙ্গলময় খোদা তায়ালার পরিকল্পনায় আমাদের আশা পূর্ণ হউক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.