এদেশের গণ আদালতে একদিন বিএনপি-জামায়াতের বিচার হবে: প্রধানমন্ত্রী

টিআইএন॥ সন্ত্রাসের জন্য এ দেশের গণআদালতে একদিন বিএনপি-জামায়াতের বিচার হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের উস্কে দিচ্ছে। বাংলার জনগণই এদের বিচার করবে। গণআদালতে এদের বিচার হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়া ও তার নেতৃত্বাধীন জোটের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তার মুখে গণতন্ত্রের কথা! যে মানুষ খুন করে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায়, তাদের হাতে এ দেশের গণতন্ত্র আর তাদের মুখে এ দেশের গণতন্ত্র সুরক্ষার কথা কোনদিন মানায় না।
তার (খালেদা জিয়া) কাছ থেকে আমাদের রাজনীতি শিখতে হবে বা গণতন্ত্রের ভাষা শিখতে হবে- সেটা বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন মেনে নেবে না, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ শান্তিতে আছে, সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখে। আর মানুষ যখন ভালো থাকে তখন তার বুকে অন্তর্জ্বালা!
বিগত বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময়কার সহিংসতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে বিএনপি নেত্রী আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করেছেন। মানুষের ওপর জুলুম করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন ঠেকাবে। কেন ইলেকশন ঠেকাবে? নির্বাচনের সময় হয়েছে, নির্বাচন হবে। তিনি নির্বাচন করতে দিবেন না, নিজেও করবেন না। এই কথা বলে আন্দোলনে নেমে মানুষ হত্যা শুরু করলেন। ২০১৪-তে ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ কেউ তার হাত থেকে রেহাই পায়নি।
হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নির্বাচন ঠেকাতে পারলো না। ২০১৫ সালে আবার শুরু করলো তান্ডব। বাসা ছেড়ে অফিসে এসে বসলেন সরকার উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, ২শ’ ৩১ জনকে পেট্রোল বোমা দিয়ে হত্যা করেছে সেই সময় খালেদা জিয়া। … হাজার হাজার মানুষ তাদের পেট্রোল বোমায় আহত হয়েছেন। ৩ হাজার ৩৬ জন মানুষকে নানাভাবে আহত করেছেন খালেদা জিয়া। ২৯টি রেল গাড়ি, ৯টি লঞ্চ, রেললাইন ধ্বংস করেছেন, ২৩ জন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছেন। মসজিদে আগুন দিয়েছেন, শত শত কোরআর শরীফ পুড়িয়েছেন। এই ছিলো তার আন্দোলন। জনগণের প্রতিরোধের মুখে অফিস ছেড়ে আদালতে মামলার হাজিরা দিয়ে ঘরে ফিরে গেলেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি, সন্ত্রাসের স্থান হবে না। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে আহ্বান জানাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তি, সৌহার্দ্য, ভাতৃত্বের ধর্ম। ইসলামে কখনো মানুষ হত্যা শেখায় না। ইসলামে হত্যা, আত্মহত্যা মহাপাপ। আজকে যারা ইসলামের নামে সন্ত্রাস করছে, আত্মঘাতী হামলা করছে, মনে করছে বেহেশতে যাবে, তারা সেখানে যেতে পারবে না। ইসলাম কখনো এসবকে প্রশ্রয় দেয় না। তিনি বলেন, এদেশে সকলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শান্তিতে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন প্রমুখ। মঞ্চে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ছবি সাইফুল ইসলাম কল্লোল

Leave a Reply

Your email address will not be published.