বীরের ন্যায় স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও বঙ্গবন্ধু এবং আমাদের শিক্ষা

বাঙ্গালীর অবিসংবাধিত নেতা ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের লাল সুর্য্য, মহা নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ী জুলিওকুড়ি ওপাধি সম্বলিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহামানব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাথা। মুক্তিকামী মানুষের মুক্তি এবং স্বাধীনতার লাল সুর্য্য ছিনিয়ে আনা ও আজকের বাংলাদেশের উন্নয়নের রোডম্যাপ এমনকি উন্নয়নের চুড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছার সিড়ি সবই হচ্ছে আমাদের বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে। সেদিনের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তণই ছিল আজকের আমাদের দিকনির্দেশনা। আমরা দেখেছি ও শুনেছি একজন বীর, মহানায়ক বা বাঙ্গালীর অন্তরাত্মা ফিরে এসে রেইসকোর্স ময়দানে পৃথিবী বিখ্যাত সেই ভাসন আজও ইতিহাসে অম্লান এবং শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে আছে। সেই ভাসন থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি জীবনের প্রতিটি ক্ষণে। কৃতজ্ঞতা, দায়-দেনা পরিশোধ, জবাবদিহিতা, উৎসাহ-উদ্দিপনা, সমগ্র দেশের মানুষই একটি পরিবারের অন্তর্ভূক্তকরণ এবং সেই পরিবার পরিচালনা ও প্রয়োজনীয় যোগান; শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তা-ঘাট মেরামত, খাদ্য, ধর্ম, ব্যাবসা, চাকুরী, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, ভাষাগত মান বৃদ্ধিসহ যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনা ও বাস্তবায়ন এর উন্নত রূপরেখা প্রকাশ পেয়েছিল এক ঝলকের প্রত্যাবর্তন আনন্দাশ্রু মিশ্রিত ভাষণে। কি ছিলনা সেই ভাষনে? আবেগঘন এই ভাষনের মাধ্যমে জাতিকে দ্বিতীয়বারের মত উজ্জ্বীবিত করেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পূর্ণগঠনের কাজে। জাতিও সেদিন পেয়েছিল দিশা।
ক্ষমা এবং ভালবাসায় পূর্ণতা দিয়ে সেদিন রচিত করেছিল আজকের উন্নয়ন মহাসড়কের রোডম্যাপ। যা তাঁরই কন্যাদ্বারা বাস্তবায়িত হয়ে যাচ্ছে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। মাঝখানের অনেকগুলি বছর আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল উন্নয়ন, শান্তি, স্থিতিশিলতা, সহাবস্থান এবং স্বপ্ন দেখার উন্নততর স্বপ্নকে। যার বীজ শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার ঠিক পর-পরই এবং চুড়ান্ত রূপ লাভ করে ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট’র কালরাত্রীর মাধ্যমে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুতো একজন বা এক স্বত্তা নয় বরং তিনিইতো বাংলাদেশ এবং এই দেশের মানুষের অন্তরাত্মা। তাই জাতিকে জেগে উঠতে বা আঘাত সামলিয়ে মূল ধারায় ফিরে আসতে অনেকগুলি বছর ব্যায় করে তাঁরই কন্যার দূরদর্শী নের্তৃত্বে এবং রাষ্ট পরিচালনার নিমিত্তে বাংলাদেশ ফিরে পেয়েছে তার হারিয়ে যাওয়া গতিশীল দিকনির্দেশনা এবং এর বাস্তবায়ন গতি। আমরা যত সহজেই এই অবস্থান নিয়ে কথা বলিনা কেন তা কিন্তু ছিল দুরুহ যা ভঙ্গুর পথ পাড়ি দিয়ে অতিক্রম করে আসা বিস্তর দুরন্তপনার মহাসাগর সম পথ। কিন্তু সেই চক্রের বাধা কিন্তু এখন প্রতিটি পলে পলে প্রতিফলিত হচ্ছে বিভিন্ন আঙ্গিকে। কিন্তু থেমে না থাকা শত্রুর সকল ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা এবং প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করেই আজ বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ে পৌঁছার স্বপ্নে বিভোর।
সেই স্বপ্নের পথেই এগিয়ে যেতে মমতাময়ী একজন মা আহবান জানিয়েছেন অকল্পনীয় উন্নয়নে জনগণকে আরো নিবিরভাবে সম্পৃক্ত হবে। তিনি আহবান করেছেন জনগণের সহযোগীতার। আর সরকার, সরকারের সঙ্গে যুক্ত সরকারী, আধাসরকারী, স্বায়ত্বস্বাসীত প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক দলের নেতাদের সকলের উদ্যেশ্যেই বলেছেন আপনারা জনগনের সেবার লক্ষ্যে কাজ করবেন। নিজের প্রয়োজনীয়তা বিসর্জন দিয়ে জনসেবার মুলমন্ত্র নিয়ে উন্নয়ক পরিকল্পনায় ঝাপিয়ে পড়–ন। আমাদের এই বাংলাদেশের উন্নয়নকে কেউ আটকাতে বা বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। সকল প্রতিবন্ধকতা দূর হবে এবং সমুলে বিনাশ হবে সমস্ত অপশক্তির ছোয়া।
যে যে জায়গায় এখন দুর্ণীতি ও স্বজনপ্রীতি রয়েছে এবং জনসাধারণের মনে সংকা জাগার আশংকা তৈরী হয় এমন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সেই জায়গাগুলিও অল্পসময়েই পুন:ঘটন করে নতুন প্রজ¤েœর কাছে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হবে। যেমনি করা হয়েছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি এবং যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর বিচার এবং রায় কার্যকরের মাধ্যমে। জনতার আদালতে সকল অপকর্মের বিচার হবে এই ধারার প্রচলন শুরু হয়েছে এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে সূদুর আগামী আর বেশী দুরে নয় যে জাতি একদিন সকল কিছুর বস্তুনিষ্ঠতা নিজ চোখে দেখে সন্তুষ্টচিত্তে দেশকে নিয়ে গর্ব করে মাথা উচু করে বহিবিশ্বের মানুষদের বাংলাদেশের আদলে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার দিকনির্দেশনা দিতে পারবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু করে দেখিয়েছেন এবং শিখিয়েছেন। এখন তাঁর কন্যা সেই কাজটুকু অনুশিলনের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন চ’ড়ান্ত পর্যায়ের দিকে। পাশাপাশি জাতি তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন এর ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখার।
আসন্ন বিশ্ব ইতেমার মাধ্যমে সমগ্র সৃষ্টির সেবা জীবদের প্রতি রইল আমাদের আহবান “জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মুনাজাতের, নামাজের, এবাদতের সময়ের, আরাধনার সময়ে, পুজার সময়ের মুহুর্তটুকুর ন্যায় পবিত্র, ন্যায়পরায়ন, ভগ্ন মনের সৃষ্টিকর্তাতে বিলীন অবস্থান বজায় রাখুন। তাহলে বিশ্ব হবে বেহেস্ত এবং আপনার হবেন সেই বেহেস্তের বাসিন্দা। যেখানে নেই কোন পাপের স্খলন এবং আশে শুধু শান্তি আর আনন্দের পরিপূর্ণতা। স্বপ্নের সোনার বাংলায় এবং বেহেস্তী শান্তি উপভোগ করে বিলিয়ে যেতে চাই সমগ্র বিশ্বে এই প্রত্যয় রইল আমাদের আগামীর জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published.