ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী

টিআইএন॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিশ্ব নেতারা সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে আজ থেকে শুরু হওয়া ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ৪৭তম বার্ষিক সভায় যোগ দিয়েছেন। সুইজারল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় আল্পস অঞ্চলে গ্রাউবান্ডেনে পার্বত্য রিসোর্ট ডাভোসে চার দিনব্যাপী এ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের সভার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্রতিবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্ব’।  চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ সভায় যোগ দিয়েছেন। ডব্লিউইএফ প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম চীনের কোনো রাষ্ট্রপতি এতে যোগ দিলেন। অন্যান্য সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভার প্রারম্ভিক প্লেনারি সেশনসহ অন্যান্য সেশনে অংশগ্রহণ করবেন।
ডব্লিউইএফর নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াবের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই প্রথম বাংলাদেশের কোনো নির্বাচিত নেতৃত্ব হিসেবে এই হাইপ্রোফাইল ফোরামে যোগদান করেছেন। ধনী এবং ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ডব্লিউইএফর ৪৭তম এই বার্ষিক সভায় সূচনা বক্তব্য দেবেন ডব্লিউইএফর নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াব। বুধবার থেকে অনুষ্ঠেয় অধিবেশনে সুইস প্রেসিডেন্ট ডরিস লিউথার্ড এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন।
বাংলাদেশ, সুইডেন, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, শ্রীলঙ্কা, পেরু, জর্ডান, মিসর, কাতারসহ ৪৫টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং ডব্লিউটিও, ইউনেস্কো, ইউএনডিপি, আঙ্কটাড, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা এ সভায় যোগ দেন। এ ছাড়াও, জি-২০ দেশগুলোসহ ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদল এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এই সভায় অংশগ্রহণ করছেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ৪৭তম বার্ষিক সভায় ২০১৭ সালে পাঁচটি চ্যালেঞ্জের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে। এগুলো হলো- বৈশ্বিক সহযোগিতা শক্তিশালী, শেয়ারড আইডেন্টিটির ধারণা পুনর্বহাল, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুজ্জীবন, পুঁজিবাদের সংস্কার এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভার ওয়াটার ইকোনমি, টেকসই উন্নয়ন, আঞ্চলিক সহযোগিতা, নারী নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মসংস্থান বিষয়ক প্লেনারি সেশনে যোগ দেবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্লেনারি আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে অংশগ্রহণ করবেন দক্ষিণ আফ্রিকা ও মরিশাস-এর প্রেসিডেন্ট এবং নরওয়ে, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও পেরুর প্রধানমন্ত্রীসহ বিশেষজ্ঞরা।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্লেনারি সেশন শুরুর আগে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াব। ফোরাম সভার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ চীনের প্রেডিডেন্ট শি জিনপিং এবং সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ডরিস লিউথার্ডের সাথে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আজ একই ভ্যানুতে ‘শ্যাপিং-এ নিউ ওয়াটার ইকোনমি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় যোগ দেবেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম হচ্ছে জেনেভার কলোগনি-ভিত্তিক সুইজারল্যান্ডের একটি অলাভজনক ফাউন্ডেশন। এটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে সুইস সরকার কর্তৃক স্বীকৃত। এই সংস্থাটির উদ্দেশ্য হলো- ব্যবসা, রাজনৈতিক, শিক্ষাগত এবং সমাজের অন্যান্য গূরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর অবস্থার উন্নতির মাধ্যমে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং শিল্প খাতের এজেন্ডাগুলো বাস্তব রূপ দেয়া। এই ফোরামটি প্রতিবছর জানুয়ারিতে ডাভোসে বার্ষিক সভার জন্য পরিচিত। চারদিনের এই অনুষ্ঠানে প্রায় তিন হাজার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক নেতা, বাছাইকৃত বৃদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকরা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য একত্রিত হন। খবর বাসসের।

Leave a Reply

Your email address will not be published.