নির্বাচন কমিশন গঠন পক্রিয়া এবং জনগণ

সদ্য গঠিত হলো আমাদের দেশের আগামীর দিকনির্দেশনার মেরুদন্ড সোজা করার কারিঘর নামে খ্যাত নির্বাচন কমিশন। এই কমিশন নিয়ে অনেক গলাবাজি হয়েছে। কিন্তু এই পক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক দল এবং সুশিল সমাজ। এই প্রথম সকলকে এক পাল্লায় তোলা সম্ভব হলো। এখানেই আমাদের সরকার এবং এর ব্যবস্থার সফলতা। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে আগামীর তরে। এখানে একটি প্রাসঙ্গিকতা বিরাজমান ছিল এবং আছে ও থাকবে। আমরা দেখেছি অনেকে এই পরিচ্ছন্ন কাজটিকে ভিন্ন প্রবাহে ধাবমান করতে অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোন প্রচেষ্টাই কাজে লাগেনি। রাষ্ট্রপতি তার স্বীয় ক্ষমতায় নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন এমনটিই কাম্য। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রপতি করলেন কি সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং সার্চ কমিটির জন্য সম্ভাব্য নাম এর তালিকা চাইলেন। যা অতি স্বচ্ছ এবং গনতন্ত্রের জন্য একটি জলন্ত দৃষ্টান্ত।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেই মোতাবেক সার্চ কমিটি গঠন করলেন এবং এই সার্চ কমিটিকেও বিতর্কিত করার লক্ষ্যে কতরকমের চেষ্টা হলো তা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। সার্চ কমিটির প্রাজ্ঞ এবং প্রথিতযসা সম্মানীত ব্যক্তিদ্বয় করলেন আরো একধাপ এগিয়ে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ৫ জন করে ব্যক্তির নাম চাইলেন পাশাপাশি স্বঘোশিত শুশিল সমাজের ব্যক্তিদের সঙ্গে এবং সাবেক অভিজ্ঞ ইসিদের সঙ্গে বসলেন। সকলের মতামত সাপেক্ষে তারা দশজনের নাম রাষ্ট্রের অভিবাবক সর্বজনশ্রদ্দেয় আবদুল হামিদ সাহেবের কাছে জমা দিলেন। সেই মোতাবেক রাষ্ট্রপতি সেখান থেকে ৫জন ব্যক্তিকে আগামী ৫ বছরের জন্য নিয়োগ দিলেন এর মধ্যে জনাব নূরুল হুদাকে করলেন প্রধান।
এই নিয়োগের পরও চেষ্টা চলছে বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে। কিন্তু হিতে বিপরীত হতে চলেছে। নিন্দুকেরা বা নেতিবাচক মন-মানসিকতা এমনকি অনুস্থ্য ধারার রাজনীতিবিদরা সমালোচনাসহ নানাহবিধ কথা আওড়াচ্ছেন। কিন্তু কি লাভ? এই ভদ্রলোকর কাছে ধরাশায়ী হতে হবে এবং আগামী নির্বাচন অংশগ্রহন করে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যেতে হবে। নিন্দুকদের বা হতাশাগ্রস্থদের যারা পরামর্শ দিয়ে রাজনীতির মাঠে চাঙ্গা রাখত সেই লোকগুলো এখন এই নির্বাচন কমিশনারের পক্ষে মতামত দিয়ে সকলকে মেনে নিয়ে আগামী নির্বাচন পরিচালনার সুযোগ দিতে আহবান জানাচ্ছেন।
এখানে স্পষ্ট করে বোঝা যায় আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি এখন নেতাহীন অবস্থায় এবং যদিও যারা সিদ্ধান্ত নেয়ার জায়গায় রয়েছেন তারা বা তাদের সকলের এখন মতিভ্রম ঘটেছে। কে কখন কি বলছে তা মিলানো যাচ্চে না। একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে দলটি এখন মেরুদন্ডহীন বা চেইন অব কমান্ড বিলুপ্ত হয়েছে বা মেধা এবং নেতাশুন্য অবস্থায় স্থবীর হয়ে আছে যারা জন্য এলোমেলো কথাবার্তা বলে নিজে নিজে সান্তনা খুজে নিচ্ছে।  আমি বলব এহেন অবস্থা থেকে অবশ্যই বিএনপি বের হয়ে এসে সঠিক নেতা নির্বাচন করে আগামীর রাজনীতিতে টিকে থাকার সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। তবে এইবার কোন হরতাল বা অবরোধ না দিয়ে নিজেদেরকে ইসি গঠন কার্যক্রমে অংশগ্রহন করতে চেয়েছে। নিরবতাই এখন সম্মতির লক্ষণ বলে প্রতিয়মান করে দলটি এগুচ্ছে। তবে কোন চালাকি করলে সামনে কান্ডারী বিহীন দলটি আরো সমুহ বিপদে পড়তে পারে।
বিএনপি বা এর শরিকদের কোমড় ভাঙ্গা এবং মেরুদন্ড ক্ষয় হয়ে গেছে তাই তারা এখন আর আন্দোলন, অবরোধ বা কোন কর্মসূচী দেয়ার মত অবস্থায় নেই। হতাশা এবং বিশৃঙ্খলা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত। তারপরও বলব এখনও সময় আছে ফিরে আসুন সুস্থ্য রাজনৈতিক ধারায় এবং কাজ করুন দেশের উন্নয়নের জন্য। নিশ্চিত সুযোগ পাবেন দেশের মানুষের সেবা করার। চাপাবাজি না করে মিথ্যা বুলি না আওড়িয়ে জনসেবায় সম্পৃক্ত হউন এবং আগামী ২০১৯সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হউন। নেতিবাচক কথা ছেড়ে ইতিবাচক কথা বলুন এবং উন্নয়নের মহাসড়কের গতিনিয়ে কথা বলুন। নিজেদেরকে শুধরানোর জন্য এখনই কাজ শুরু করুন।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর উক্তি; উন্নয়ন এবং দূর্নীতি একসঙ্গে চলতে পারে না। এই কথাটি চিরন্তন সত্য। আর এই সত্যকে বাস্তবে রূপদিতে গেলে আরো অনেক কষ্টের ও ত্যাগের পথ অতিক্রম করতে হবে। আমাদের সমাজের এবং দলের নেতাদেরকে হৃদয় সম্পূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ করতে হবে। অফিস আদালত পাড়ায় সততার এবং ন্যায়-পরায়নতার বাস্তব চর্চার প্রতিষ্ঠা লাভ করাতে হবে। জনগণের ইচ্ছা এবং মনোভাবের প্রতিফলন ঘটানোর নিমিত্তে কাজ করতে হবে। জনসম্পৃক্ততা আরো বেশীসংখ্যক দৃশ্যমান হতে হবে।
সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ যেভাবে মোকাবেলা করা হয়েছে সেই ভাবেই সকল অপশক্তি এবং বাধাসমূহ প্রতিহত করে এগিয়ে যেতে হবে। যার গতিশীল নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সেই মহীয়সী নারী আমাদের সেই টুঙ্গিপাড়ার কিশোরী থেকে এখন পরিণত রুপের সর্বোচ্চ শিখড়ে অবস্থানকারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষনিক কার্যকর রাখতে হবে। চোখ এবং কান খোলা রেখে সামনের ভঙ্গুর পথ পাড়ি দিতে হবে। তাহলেই কেবল আমাদের দেশ কাঙ্খিল লক্ষে এবং স্থানে পৌঁছাবে।
গণতন্ত্রের যে যাত্রা শুরু হয়েছে তা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে এই চলমান প্রক্রিয়াকে জনগণের দৌঁড়গোড়ায় নিয়ে যেতে হবে। নেতাদেরকে বলছি আপনার নিজ ভূবনে না থেকে জনগণের কাছ যান এবং উন্নয়ন ও আগামীর পরিকল্পনা এমনকি আগামীতে আমরা কোথায় যাব তা তুলে ধরুন। কারন এখনও মিথ্যা আমাদের সমাজে কাজ করছে। যা সবৈব মিথ্যা কিন্তু উপস্থাপন ও প্রতিনিয়ত বলতে বলতে মিথ্যাকে সত্যতে পরিণত করে যাচ্ছে ঐ মিথ্যার রাজনীতির ধারকরা। (একটি উদারহণ দিয়ে দেখাতে চাই আমাদের নেতাদের দূর্বলতা)। সিলেট থেকে আগত এক ভদ্রলোক এবং তার সাথে গাড়িতে আলাপ চারিতায় বললাম বর্তমান দেশের উন্নয়ন নিয়ে বলুন; তখন তিনি বললেন কিছু যা আমার কাছে আহামরি নয়। আমি আওয়ামী লিগের হয়ে প্রচার করলাম এবং উন্নয়ন রূপরেখা তুলে ধরলাম তখন সে স্বীকার করে নিল উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু চেহারায় উন্নয়ন ফুটে উঠেনি। আমি আর একধাপ এগিয়ে বললাম দুর্নিতির কথা এবং বিএনপির আমলের দুর্নিতির কথা। তখন তিনি আমাকে বললেন আমাদের দেশের সব নেতারাই এক এবং সবাই এইসকল দুর্নিতি করে। আমি জানতে চাইলাম তাহলে এই সরকারের দুর্নিতী একটু পরিস্কার করুন। তখন সে বলল জয় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব টাকা নিয়ে গেছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কিভাবে বুঝলেন এবং কোথায় শুনলেন। তিনি বললেন সমগ্র পৃথিবীই জানে। আমি হতভম্ব হলাম এই মিথ্যা তথ্যের সত্যতার আবরণ দেখে। তখন আমি দায়িত্ব নিয়ে একে একে দেশের উন্নয়ন এবং জয়ের প্রচেষ্ট এমনকি শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার নিয়ে বলতে শুরু করলাম। তখন তিনি চুম্বুকের মত সব শুলল এবং তার ভুল শুধরিয়ে আমাকে বলল নেতারা কোথায় কেন মানুষের কাছে যায় নাই এই কথাগুলো নিয়ে। আমরা এবং আমাদের মত মানুষগুলো মিথ্যা শুনে প্রতারিত হচ্ছি এমনকি আগামী নির্বাচনে ভোট না দিয়ে এমনকি সমালোচনায়ও লিপ্ত রয়েছি।
ঐ লোকের কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলতে চাই প্রিয় ভাইয়েরা আপনারা ঘরে বসে নেতা না সেজে এখন কর্মী সেজে জনতার ঘরে ঘরে কাজ করুন তাহলে আগামী নির্বাচন আনন্দের ফল বয়ে নিয়ে আসবে। এবং এই উন্নয়ন ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাবু সুরঞ্জিত যথার্থই বলেই আমাদেরকে চলে যেতে হবে; নতুনরাই দেশের দায়িত্ব নেবে এবং এই উন্নয়ন গতি এমনকি এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। নতুনদেরকে বলছি নেতা নেতা ভাব এমনকি নেতা হওয়ার বাসনা থেকে বের হয়ে আসুন এবং নেতা ও কর্মী উভয়েই এক সারিতে কাজ করুন তাহলে উন্নয়নের জোয়ার এবং আগামী নির্বাচন একসূত্রে গেথে উঠবে ২০৪১এ পৌঁছার নিমিত্তে। আমিও বিশ্ব নেত্রী এবং সদ্য প্রয়াত বাবুর সেই কথায় একমত হয়ে এই ভাষার মাসে বলতে চাই আসুন আমরা একসঙ্গে দেশকে সেবা করি। বন্ধু সবসময়েই ভালবাসে, আর ভাই থাকে দুর্দশার সময়ে সাহায্য করবার জন্য। এই কথাটির যতার্থতা প্রমান করি আমাদের দৈনন্দিন কাজে ও চিন্তায় সর্বোপরি বাস্তবায়নে।
জনগণ এই নির্বাচন কমিশন গঠন পক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে এবং আগামী দিনে এই কমিশনের কাজ উপভোগ করতে অধীর আগ্রমে ২০১৯ পর্যন্ত প্রহর গুনবে। আম জনতার সঙ্গে আলাপ চারিতায় জানা যায় এই স্বচ্ছ পক্রিয়া সুন্দর এবং এখন শুধু কমিশনারদের স্বচ্ছ কাজ দেখার আশায় আছি। লোকমুখে শোনা নেতিবাচক কথার কোন মুল্য নেই কারণ ‘পাগলে কি না বলে আর ছাগলে কি না খায়” তা এখন সকলেই জানে। তারপরও জ্ঞানহীনদের সুবিধার্থে বলছি মাঝপথে যে বা যারাই পুর্বের ন্যায় কাদা ছোড়াছুড়ি এবং মিথ্যা বুলি আওড়িয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে তাহলে ইতিহাসের আস্তাকুড়েত নয়ই বরং অনিশ্চয়তার আস্তাকুড়ে কেঁদে মড়ারও স্থান হবে না। যাই হউক আগামীর জন্য সরকারের পদক্ষেপগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হউক এবং আগামী প্রজন্ম সুফল ভোগ করুক ইহাই আমাদের কামনা এবং সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.