নিষিদ্ধ হচ্ছে লিভ টুগেদার, গর্ভপাত ও সমকামী বিয়ে

তাজুল ইসলাম নয়ন॥ ক্ষমতা গ্রহণের পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের খড়গ নেমে এসেছে শরণার্থী ও অভিবাসীসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে। এবার এ তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক (লিভ টুগেদার), সমকামী বিয়ে ও গর্ভপাত। ট্রাম্প প্রশাসনের এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনার খসড়া ফাঁস করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য নেশন।
খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রচলিত কিছু ধর্মীয় বিশ্বাসের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নির্বাহী আদেশ জারি করতে চান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর আওতায় বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক বা লিভ টুগেদার এবং সমকামী বিবাহের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে প্রচলিত ধর্মভিত্তিক যে মূল্যবোধ আছে, তার আইনগত ভিত্তি দিতে চান তিনি। একইসাথে গর্ভপাতকেও নিষিদ্ধ করতে চান। এমনকি যেসব প্রতিষ্ঠান সমকামী বিবাহ ও বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কের বিরুদ্ধে কাজ করে তাদেরকে করমুক্ত সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।
যদিও ট্রাম্প এ পরিকল্পনার পেছনে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এর মাধ্যমে রক্ষণশীল খ্রিস্টান ও ক্যাথলিক ধর্মীয় বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি ইসলামের ঐসকল বিষয়গুলি হারাম তাই ট্রাম্পের এই উদ্যেগকে স্বাগত জানানো পাশাপাশি খোদায়ী মূল্যবোধের প্রকাশও বলা যায়।
তাদের মতে, এ আদেশের ফলে দীর্ঘদিন থেকে নিজেদের অধিকারের পক্ষে আন্দোলন করে আসা তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, এলজিবিটি সম্প্রদায় ও নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কেননা তখন এ ধরনের আন্দোলন ও তৎপরতা শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এমনকি ট্রাম্প এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ জারি করলে, তা মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর (এস্টাবলিমমেন্ট ক্লজ) ধারা ক্ষুন্ন হবে। এ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্র থেকে গির্জাকে আলাদা করা হয়েছে, দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের মধ্যে সীমারেখা টেনে দেয়া হয়েছে।
এদিকে এ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত আছে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পেইসার বলেন, ‘এ ধরনের আদেশ জারি হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। তাই এখনই এ বিষয়ে আমাদের কিছুই বলার নেই।’
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের ক্ষমতা নেয়ার পরে বার্ষিক গর্ভপাত বিরোধী রর্‌্যালি এবার ভিন্ন মাত্রা পায়। ওয়াশিংটনে আয়োজিত এ রর্‌্যালিতে সমবেত হন লাখো মানুষ। ট্রাম্পের সমর্থনে তাদের মধ্যে বিশেষ উদ্দীপনা দেখা যায়। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো ভাইস প্রেসিডেন্ট এ আয়োজনে বক্তব্য দেন। তখনই মনে করা হয়েছিল, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের খড়গে বলি হবে নারীদের গর্ভপাতের অধিকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published.