এডভোকেট হারুনুর রশিদ খাঁন॥ মনে নানা বিষয়ে জ্বালা যন্ত্রনা দিতে থাকে, কিছুটা হালকা হতে হেড লাইন বিষয়ে কিছু লিখছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা শহীদের রক্ত ও মা-বোনদের বিসর্জিত ইজ্জতের করুন হাহাকারে বাধা। জনগণের কর্ম-ধর্ম দায়বদ্ধতার নিরিখে আইনভিত্তিক হতে-ই হবে।
বিট্রিশ ঔপনিবেশিক শাসনে ভারত বর্ষের জনগন শোষন বঞ্চনার শিকার হয়। বিট্রিশরা অর্থ সম্পদ মূল্যবান জিনিস পত্রাদি পাচার করে নিয়ে যায়। অগণিত প্রাণ বিসর্জন, জেল জুলুম, নির্যাতনের পিষ্ঠে, অপশাসন হতে মুক্ত হওয়া কালে ১৯৪৭ সালে ১৪ই আগষ্ট পাকিস্থান রাষ্ট্রের সৃস্টি হয়। পশ্চিম পাকিস্থানের রাজনীতিবিদগণ সু-কৌশলে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। বিট্রিশদের কায়দা পূর্ব পাকিস্থানের জনগনের উপর শোষন বঞ্চনা নীতিগুলো প্রয়োগ করে, ব্যবসা বানিজ্য শিল্প কারখানা এবং রাষ্ট্রীয় আয়ের অসম বন্টন অর্থ সম্পদ কৌশলে পশ্চিম পাকিস্থানে নিয়ে যায়। দেশ প্রেমিক রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে জেল জুলুম ও নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে শোষন বঞ্চনা হতে মুক্তি পেতে সংগ্রাম গড়ে তুললে শাসক গোষ্টি নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।
১৯৭০ সালে জাতীয় নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ক্ষমতায় থাকার কু-উদ্দেশ্যে ২৫ মার্চ কালরাতে তাদের সু-সজ্জিত সামরিক বাহিনীকে পূর্ব বাংলার নিরীহ, নিরস্ত্র জনগণের উপর লেলাইয়া দিয়া বুদ্ধিজীবি ছাত্র প্রেমিক ও নিরীহ জনগণকে অস্ত্র চালিয়ে হত্যা করতে থাকে। জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আহ্বানে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিজেদের জীবন বাজী রেখে স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে। যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ লোক শহীদ হন ও তিন লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট লোভী মহলের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে জাতির পিতা শেখ মজিবুর রহমানকে সহ সকলকে হত্য করা হয়। ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। অশুভ শক্তি ক্ষমতা গ্রহণে সরকার পরিচালনায় একটি স্বার্থান্বেষি মহলকে সুবিধা দিয়ে অনাদর্শ ভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠনে সরকারের অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টায় চালায়।
দেশ প্রেমিক রাজনীতিবিদের বাকরুদ্ধ করে দেয়। শোষন বঞ্চনা ও দূর্নীতি হয়ে উঠে স্বাভাবিক রীতিনীতি। শোষন ও দুর্নীতিবাজদের বাহবা দেওয়ার জন্য এক শ্রেণীর স্বার্থবাদী সদায় প্রস্তুত রহে। যারা অনৈতিক অবৈধ উপায়ে অর্থ সম্পদ উপার্জন করতে থাকে। সরকার নীতি প্রণয়নে অবৈধ অর্থ সম্পদ বৈধ করার প্রক্রিয়া চালু করে। । দেশপ্রেমিকগণ সমাজে তাচ্ছিলের পর্যায়ে গিয়ে অভাবনীয় যাতনা ভোগ করে।
সাংবিধানিকভাবে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হলে দেশ প্রেমিক জনগন আশা করে নির্বাচিত সরকার সংবিধানে বর্ণিত নীতি মোতাবেক জাতির প্রতি দায়বদ্ধতার আলোকে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রদান, কর্তব্য পালনে বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করবে। জনগণের ব্যবসা-বানিজ্য, শিল্প, চাকুরী, সহ সকল কর্মে উপার্জিত অর্থ সম্পদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতঃ শোষন বঞ্চনা ঘুষ দুর্নীতি সহ সকল অপকর্মের অবসানে উন্নত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে এবং সততাভিত্তিক আয়ের স্থায়ী উৎস সৃষ্টি করবে।
কিন্তু বর্তমানে ভিআইপি সিআইপি মর্যাদা রাষ্ট্রীয়ভাবে দেওয়া হয়। কয়জনের অর্থ, সম্পদ শোসনকৃত নয় প্রতারনা না জালিয়াতির নয়। কয়েকজনের অর্থ-সম্পদ বৈধ উপায়ে উপার্জিত তার সততা যাচাই বিহীন মর্যাদা দেয়া হলে এটা জাতির দুর্ভাগ্য।
বিগত ২১ শে জানুয়ারী ২০১৭ বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রথম পাতায় মির্জা মেহেদী তমাল ও জুলকার নাইন এর শিল্প বিলাসী জীবন যাপন, গার্মেন্টস মালিকদের কানাডায় বেগম পাড়া, মালেয়শিয়ায় সেকেন্ড হোম, ইউরোপ, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়ায় নাগরিকত্ব, সিঙ্গাপুর, ব্যাংককে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অনেকের কারখানা নেই তুব বন্ড লাইসেন্স, বাংলাদেশে শ্রমিকের কর্মের মজুরী না দিয়ে কানাডায় গড়েছেন বহু শিল্প কারখানা এরিয়ার নাম “বেগম পাড়া” কানাডিয়া এক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় সাহেবরা বাংলাদেশে বেগমরা শিল্প কারখানা পরিচালনায় ব্যস্ত। বহুজনের কানাডা অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রয়েছে নাগরিকত্ব। অনেকে মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম বানিয়েছেন। তারা বিদেশে টাকার পাহাড় গড়েছে, অথচ বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরী সামান্য অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ।
বাস্তবতার নিরিখে বলতে হয় শোষন, বঞ্চনা, ঘুষ, দুর্নীতিবাজদের দাপটে সৎ পেশাজীবি ব্যবসায়ী ও রাজনীতিগণ অসহায়। অবৈধ অর্থ সম্পদের প্রভাবে সমাজে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শোষন ও দুর্নীতিবাজদের অবৈধ অর্থ সম্পদের ফলে শ্রেণী বৈষম্য দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় বিরাজমান।
আমার একটি কথা মনে পড়ে ১৯৯৬ এর পূর্বে বা পড়ে তারিখ মনে নেই শ্রেণী বৈষম্যের সমতার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিল সরকারের অর্থাৎ জনগণের হাজার হাজার বাড়ী ঘর শহরে বন্দরে এক শ্রেণীর শোষক এবং দুষ্ট চক্র জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে। যাহা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেই সত্য বক্তব্য দিয়ে দেশ প্রেমিককে আশান্বিত করেছেন। দেশে যারা অনৈতিক উপায়ে অবৈধ অর্থ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এবং যারা ভবিষ্যত প্রজন্মের নিরাপদ বিলাস বহুল যাপনের জন্য অবৈধ অর্থ সম্পদ পাচার করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সুরক্ষিত করছে তাদের তালিকান জানতে জনগন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পর হতে শহীদের রক্ত ও মা বোনের ছিনাইয়া নেওয়া ইজ্জতের আহাজারীর উপর দাড়িয়ে যারা শোষন বঞ্চনা, ঘুষ, দুর্ণীতি, সন্ত্রাসী কার্য, প্রতারনার মাধ্যমে জনগনের অর্থ সম্পদ উপার্জনে দেশে অবৈধ অর্থ সম্পদের পাহাড় গড়েছে। যারা অনৈতিকভাবে উপার্জিত অবৈধ অর্থ সম্পদ বিদেশে পাচার শিল্প কারখানা বা অন্যান্য ব্যবসা বানিজ্যে গড়ে তুলছে। বিভিন্ন দেশে টাকার পাহাড় গড়ছে, বহু দেশের নাগরিকত্ব ও নিয়াছে এবং মালেয়শিয়া সহ বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম গড়ছে, অনেকে সেকেন্ড হোম করতে চেষ্টারত তাদের বিচারের আশায় দেশ প্রেমিক জনগন প্রহর গুনছে। জাতির প্রতি দায়বদ্ধ থেকে যারা সৎ উপায়ে ব্যবসা বানিজ্য শিল্প কারখানা, চাকুরী নানাহ পেশা করছে তাদেরকে জাতীয় সম্মান দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জয় হউক দেশ প্রেমিক জনতার, জয় হউক সততার, জয় হউক মানবতার।