গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বললে জেল-জরিমানা

রাইসলাম॥ ‘মহিলা সিটে’ পুরুষ বসলে জেল-জরিমানা।  সনদ নেয়ার সময় চালকেরা ১২ পয়েন্ট পাবেন। আইন ভাঙলে পয়েন্ট হারাবেন চালক, পয়েন্ট শূন্য হলে লাইসেন্স বাতিল। যানবাহন চালানোর সময় চালক মুঠোফোনে কথা বললে এক মাসের কারাদন্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭ এর খসড়া তৈরি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। গত সোমবার সকাল ১০টায় সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আইনের খসড়াটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, আইন অনুযায়ী চালকদের অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। পাশাপাশি চালকের সহকারীদের অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে এবং সহকারীকেও লাইসেন্স নিতে হবে। এ ছাড়া কোনো চালক গাড়ি চালানোর সময় মুঠোফোনে কথা বললে এক মাসের কারাদন্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।  সচিব আরো জানান, আইনে যানবাহনের মালিক ও চালকদের জন্য ২৫টি নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনার পাশাপাশি যাত্রীদের জন্যেও কিছু নির্দেশনা রয়েছে। যানবাহনে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনে কোনো পুরুষ যাত্রী বসলে সেটি এই আইনে একটি অপরাধ। এই অপরাধে অভিযুক্তকে এক মাসের কারাদন্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম আরো বলেন, কেউ লাইসেন্স ছাড়া বা জাল লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালালে তাঁকে দুই বছর কারাদন্ড অথবা তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন চালালে মালিক ও চালকের এক বছর জেল অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালিয়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটালে তিন বছর জেল অথবা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।
সচিব আরো জানান, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনায় কোনো মানুষ নিহত হলে সেটি হত্যাকান্ড হিসেবে দন্ডবিধি অনুযায়ী বিচার হবে। হত্যাকান্ডের জন্য আদালত দন্ডবিধি ৩০২ ধারা প্রয়োগ করে মৃত্যুদন্ড অথবা ৩০৪ ধারা প্রয়োগ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিতে পারবেন। অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনার জন্য ৩০৪/বি ধারা প্রয়োগ করে তিন বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করতে পারবেন আদালত।
শফিউল আলম জানান, উন্নত রাষ্ট্রের মতো আমাদের দেশের চালকদের জন্য লাইসেন্সের পয়েন্ট রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে চালকরা যানবাহন চালানো ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন।  আইনটি মূলত সামরিক সরকারের আমলে করা। এটিকে আরো হালনাগাদ করে ও অনেক বিধান সংযোজন-বিয়োজন করে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.