ভাইরাস এখন আওয়ামী লীগে

লিখাটা লিখতে আমার কষ্ট হয়েছে; তারপরও লিখছি উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে ঐ ভাইরাস নামক জীবানু ধ্বংস করে সুস্থ্য এবং উদ্যোমী দল এবং এর কর্মকান্ড এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে। ইদানিং বেশী বেশী প্রতীয়মান প্রতিচ্ছবি, লেখনি এমনকি আকার ও ইংগিতবাহী বার্তা দেখেই এই অনিচ্ছাকৃত লিখাটি লিখলাম। দলের ভিতর কিছু নেতা, কর্মী এবং সমর্থক রয়েছে যাদের বিখাউজ বা গ্রামে গঞ্জে প্রচলিত আছে চুলকানী রোগ হিসেবে। এই চুলকানী রোগ বা ভিখাউজ রোগ হলে শরীর এমনভাবে চুলকাবে তখন লজ্জা-শরম এমনকি হিতাহিত জ্ঞানশুণ্য পর্যন্ত হয়ে যায়। ঐ অবস্থার কথা আমাদের সকলেরই মনে আছে এমনকি প্রত্যক্ষ করার সুযোগও হয়েছে। আমার দেখার সুযোগ হয়েছিল এবং একবার আমিও শৈশবে ঐ চুলকানীতে আক্রান্ত হয়েছিলাম এবং উপযুক্ত ঔষধ ব্যবহার করে চিরতরে ঐ চুলকানী বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তাই আমি মনে করি এই চুলকানী বন্ধ করার জন্য এখন উপযুক্ত সময়। দলের মধ্যে যাদের অতিরিক্ত ব্যক্তি চাহিদা যা দলের নীতির বিরুদ্ধে। দল মানে মানুষের সেবা বা সার্বজনীন ও সামগ্রীক কল্যানের তরে কাজ করা। কিন্তু এখন কিছু নেতা, কর্মী  ও সমর্থক নিজের আখের গোছানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যা ঐ চুলকানী বা বিখাউজ রোগীর মত। হিতাহীত জ্ঞান শুন্য এমনকি নিলজ্জ্ব হয়ে পড়া অবস্থা। আবার কিছু আছে নিজের স্বার্থ হাছিল করতে না পেরে ঐ চুলকানী রোগীর আচরণ করে নিলজ্জ্ব বা হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে পড়েছেন।  তারা প্রথমে করছেন নিজের ক্ষতি, তারপর চারপাশের পরিবেশের ক্ষতি এবং সর্বপরি করছেন দলের ক্ষতি। এই দুই শ্রেণীর ভিখাউজ বা চুলকানী রোগী এখন আমাদের দেশের সকল দলেই বিরাজমান। তবে আমি আমার দল আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করেই বলছি কারণ এদের আশু চিকিৎসার প্রয়োজন। কারণ চিকিৎসা ছাড়া ঐ দুই শ্রেণীর রোগীদের সুস্থ্য করা সম্ভব নয়। তাই চিকিৎসার জন্য এখনই টিম গঠন করে রোগ নির্মূল কেন্দ্রে পাঠিয়ে দ্রুত আরোগ্য করে আগামীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণে উদ্যোমী হউন।
দলের সিনিয়ররা জানেন কি চিকিৎসা দিলে অতি তারাতারি সুস্থ্য হয়ে আবার পুনরায় দলীয় কর্মকান্ডে ঝাপিয়ে পড়বে। দলের প্রয়োজনে আগামী নের্তৃত্ব ও দলীয় শৃঙ্খলা এমনকি দলের আদর্শের ধারাবাহিকতা রক্ষার তাগিদেই এই সকল রোগের চিকিৎসা দরকার। মনোবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং বর্তমান কৃতকর্মের আলোকে এক যোগসূত্র তৈরী করে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। চারের কম্বিনেশনে এদের চিকিৎসা হলে আরোগ্য প্রাপ্তি সহজ হবে এবং আরোগ্য লাভও স্থায়ী হবে। কাউন্সিলিং, ভেলিউল (মূল্যবোধ প্রশিক্ষণ) ট্রেনিং, কোচিং এন্ড মেন্টরিং সহ যাবতীয় চিকিৎসাই আমাদের সমাজে বিরাজমান। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমি বিসিএম (বেঙ্গল ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার) স্মরণাপন্ন হতেও পরামর্শ দিতে পারি। তারা এই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করে যাচ্ছে।
আমি ভাইরাস দিয়ে শুরু করেছিলাম এবং ভিখাউজে গিয়ে পৌঁছলাম। এবার ভাইরাসে আসি; ভাইরাসকে আমরা সবাই চিনি এবং জানি। ভাইরাসের যেমন উপকারীতা আছে তেমনী অপকারীতাও রয়েছে। তবে অপকারীতাই বেশী। প্রতিটি দলেই ভাইরাস রয়েছে তবে আমি গুরুত্বরোপ করতে চাচ্ছি আমার দল আওয়ামী লীগকে। ভাইরাস কিভাবে ছড়াই; তা হল মুখের কথায়, ব্যক্তি আচরণে, ব্যবহারে, দৈনন্দিন কাজ কর্মে; মিডিয়ায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে- বক্তব্যে, আলোচনায়, সমালোচনায়, দলীয় কর্মসূচীর মাধ্যমেও- একে অন্যের সমালোচনায় বা মনোমালন্যের বহি:প্রকাশে; পত্র-পত্রিকার মুখরোচক খবর পরিবেশনের মাধ্যমে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই সকল ক্ষেত্রে ভাষা সংযত হওয়া দরকার এবং দলীয় ঐক্যের লক্ষ্যে প্রকাশ্য সমালোচনা এমনকি ব্যক্তিগত মনোমালিন্য প্রকাশে বিরত থাকা দরকার; ক্ষমতা জাহির করা থেকেও বিরত থাকা দরকার।
কারা ঐ ভাইরাতে আক্রান্ত তা কিন্তু স্পষ্ট। দুধের শিশুটিও নির্বোধ নয়। তাই যারা; আমরা পড়তে-লিখতে, দেখতে এবং সুস্থ্য দেহ ও মন নিয়ে পথ চলছি তারা, ঐ ভাইরাস আক্রান্তদের চিহ্নিত করতে না পারার কোন কারণ নেই। এই ভাইরাস আক্রান্ত লোকগুলিও ঠিক ঐ ভিখাউজ বা চুলকানী রোগাক্রান্তদেরই একজন। তাদের ন্যায় ভাইরাস ছড়াচ্ছে সমাজের প্রতিটি স্তুরে। বিরুপ মনোভাবের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এখনই উপযুক্ত সময় এই ভাইরাস আক্রান্তদের উপযুক্ত চিকিৎসা দিয়ে দলীয় কর্মকান্ডে ব্যবহার করা। পরিচ্ছন্ন, নির্লোভ এমনকি সর্বজন গ্রহণযোগ্য ইমেজের ব্যক্তি, কর্মী, নেতা হিসেবে গড়ে তুলে আগামী প্রজন্মের নের্তৃত্বে ব্যবহার করা জন্য এখন থেকেই সু চিকিৎসার মাধ্যমে কাজ শুরু একান্ত আবশ্যক।
পরিশেষে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই অপ্রিয় সত্য কথাটি লিখে যদি কারো মনে কোন আঘাত দিয়ে থাকি তার জন্য। আমরা এক এবং এক ও অভিন্ন লক্ষ নিয়েই এগিয়ে যাব আগামীর তরে এই প্রত্যাশা রেখেই আজকের মত বিদায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.