ভিশন ২০৩০ ও আগামী নির্বাচন

ভিশন ২০৩০ নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা দুটোই চলছে সমান তালে। তবে আলোচনার চেয়ে সমালোচনাই বেশী হচ্ছে ঐ ঘোষিত ভঙ্গুর স্বপ্ন নিয়ে। যা দেখানো উচিত ছিলা তা দেখাতে ব্যার্থ হয়ে এখন অন্তসাড়শুন্য দলিত গর্তে লুকানোর জায়গা বা অবলম্বলটুকুও হারিয়েছে। বিগত দিনে যখন ক্ষমতায় ছিল তখন একের পর এক সন্ত্রাসী ও দূর্নীতির চমক দেখিয়ে দেশকে মোট ২৫বছর পিছিয়ে দিয়েছে ঐ দলটি। যা এদেশের মানুষের প্রাপ্য অধিকার ছিল তা ছিনিয়ে নিয়েছে এবং কপালে এটে দিয়েছে কলঙ্কের তিলক। সেই তিলক থেকে যখন বেড় হয়ে এসে নতুন এক মুক্ত দিগন্তের উন্মোচন হলো এবং জাতি দেখতে পেলো নতুন আশা ও ভরসা এবং মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার রূপরেখা। আর তখনই আবার ভিশন ২০৩০ নামক নকলে ভরপুর এক নি¤œগামী মধুবালা গল্পে ভিমরুলের আক্রমন নিয়ে হাজির হলে চোখ কান খোলা তীখœ জাতির সামনে। এই ২০৩০ই হলো অতীতের ন্যায় আবার বর্তমানকে ২০ বছর পিছিয়ে দেয়ার গাল-গল্প। যদিও দেশের মানুষ এই গাল-গল্প শুনতে এবং দেখতে নারাজ। আমি নিজেও এই খৈই ফোটানো শুভঙ্খরের ফাঁকিবাজির গল্প শুনিনি এবং পড়িও নাই এমনকি আগামী দিনে পড়ার কোন আকাঙ্খ নেই। বরং ফেসবুক থেকে কিছু কথার এমনকি আমার অফিসের কিছু সহকর্মীর তাচ্ছিল্যভরা হাসির যোগানোর মাধ্যমেই জ্ঞ্যাত হইলাম ঐ ২০৩০ সম্পর্কে।
শিক্ষার এবং মেধার গুরুত্ব সবসময়ই ছিল বহমান নদীর মত। সেই শিক্ষাবিহীন কিছুই যে আজ আর ধোপে টিকে না তার প্রমানই হল ২০৩০। যেখানে আমাদের ভিশন ২০৩০ পড়ে শোনানো শ্রদ্ধেয়া বেগম খালেদা জিয়ার রংধনু গল্পটিও তাই। রংধনু কি এবং দেশ ও দেশবাসী কি এই সম্পর্কে যাদের কোন জ্ঞান নেই তাদের কথা শুনার সময় আমাদের উদীয়মান তরুন প্রজন্মেরও নেই। এখনকার বর্তমান বাংলাদেশ এবং এর অভ্যন্তরে বসবাসরত ও বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সম্মানীত নাগরিকগণ ঐ রংধনু এবং দেশ এই দুটো বিষয় খুল ভালভাবেই জানেন এবং অভিজ্ঞতায় আয়ত্ব করেছেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য সেই মহান দেশপ্রেমীক নামধারী ভালমানুষী পোষাক পরিচ্ছদের অধিকারী জ্ঞানপাপীরা এমনকি শয়তানরাই বুঝতে পারেন না তাদের রচিত গল্প ২০৩০ এর রংধনু কি? যাক সেই কথা; বাস্তবতা হলো আমার দেশের মানুষদের সঙ্গে আমিও ঐ ২০৩০ কে ঘৃণা করি। তবে ২০৩০ সম্পর্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কতিপয় নেতার অগোছালো মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করতে অপারগতা প্রকাশ করছি।
মন্তব্য করার আগে ঐ ২০৩০ এর ভিশণ ভালকরে পড়ে এবং আওয়ামী লিগের রূপকল্পটা ভালকরে মিলিয়ে দেখে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন ছিল। যদিও জাতির কোন আকাঙ্খা নেই ঐ ২০৩০ এর প্রতি। জাতি এখন আগামী ১০বছর পরে কি হবে সেই বিষয় নিয়ে ভাবছে এবং সেই অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে। পিছনে ফিরে যাওয়ার কোন আকাঙ্খাই জাতিকে আর বিভ্রান্ত করতে পারে না। ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে সোসাল মিডিয়ার অবদানে আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট শিশুটিও এখন সচেতন তাই মিথ্যা আশ্বাস ও প্রলোভন এখন আর ফলপ্রসু কোন কাজেই আসে না। তাই আমি মনে করি আমাদের প্রয়োজন ফলপ্রসু ও যুগোপযোগী কর্মকান্ড নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ বেশী বেশী করা। নেতিবাচক মনোভাবের প্রয়োগ বন্ধকরা। ভুলপথের ও মতের মানুষদের সঠিক পথে নিয়ে আসার কাজে পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে যাওয়া।
সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমেই এই ভিশন ২০৩০ এসেছিল এবং এই মিডিয়ার মাধ্যমেই প্রত্যাখাত হয়ে ফিরে গেল। যার কোন আভির্ভাবের প্রয়োজনই ছিল না কিন্তু নির্বোধ বণীতাবেশী বালিকা বধু এখন হয়তো বুঝতে পারছেন তিনি প্রতিনিয়ত কি ভুলইনা করে যাচ্ছেন। যদি এখনও বুঝতে না পারেন তাহলে হয়ত ঐ নির্বোধ বণীতাবেশী বালিকার জীবনাবসান হবে এই নিবুদ্ধিতারই গুণে। আরেক নির্বোধ প্রার্চ্যে বসে পাকামো আর জ্ঞান গর্বভরা বুলি আওড়িয়ে দলকে তলানী থেকে আরো তলানিতে নিয়ে এখন প্রায় গর্ত খোজার জায়গাটাও হারিয়েছে। এই মৃত দলটিই আগামী নির্বাচন নিয়ে যে গালগল্প ও টালবাহানা করে বেড়াচ্ছে তাযে শুধু আহাম্মকি কান্ড; তা বোঝার বাকি নেই আম জনতার। যাদের কোন আন্দোলন সংগ্রামের মোরদ নেই এমনকি সুচিন্তিক ও ফলপ্রসু উদার এমনকি উদিয়মান চিন্তার কোন বহি:প্রকাশ নেই সেই দলটি কিভাবে আশা করে প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসে দরকষা কষী করে দাবী আদায় করে নির্বাচনে যাবে। এই মুর্খ্যরে দল আগে নিজে জ্ঞান অর্জন কর তারপর যোগের চাহিদা মিঠিয়ে এগিয়ে আস এবং নিজেদের মেরুদন্ড সোজা করে পথ চল। গর্তে লুকিয়ে রাজনীতি চলে না বরং জীবন বিসর্জন দিয়ে দাবি আদায় করতে হয়। যে দাবি হবে গণ মানুষের এবং বাংলাদেশের আপামর উন্নয়ন ও চলমান ধারাবাহিকতা রক্ষার। মিডিয়ার মাধ্যমে যা প্রকাশ হয় তা আসলেই অসাঢ়; বাতাসের পিছনে দোলা নল-খাগড়া ছাড়া আর কিছু নয়। এই অনিশ্চয়তায় জাতি আর ফিরতে চায় না। তাই সময় থাকতে সঠিক পথে ফিরে আসুন নতুন নিজের অস্তিত্বটুকুও বিলীন হয়ে যাবে অন্ধকারে হাতড়িয়ে।
বর্তমান সরকারের প্রতি রইল অঘাদ শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস। যে গতিতে দেশ এবং এর আগামীর কর্মপরিধি এগুচ্ছে সেই গতির ধারাবাহিকতা যেন অক্ষুন্ন থাকে সেই বিষয়টিই এখন্য যুগের চাহিদানুযায়ী দাবী; এবং আগামী নির্বাচন যেন হয় সুস্থ্য ও স্বস্থির এমনকি চলমান ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার। শয়তান ও কুচক্রি মহল এবং ক্ষমতালোভীদের কোন ফাঁদে পা দেয়া যাবে না। বরং নিজের মেধা ও স্বচ্ছ নিষ্কন্ঠক পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধান বিচারপতি এমনকি নির্বাচন কালীন কোন নতুন ফর্মূলার প্রয়োজন নেই। বরং সংবিধান অনুয়ায়ী গত নির্বাচনের সুশৃঙ্খল নিয়মের আঙ্গিকেই এগিয়ে যেতে হবে নতুন নির্বাচন এবং সরকার গঠন কল্পে। এর বিকল্প কিছু নেই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধিনেই নির্বাচন হবে এবং এর বাইরের কোন ছক বা পরিকল্পনার ফাঁদে পা দেয়া চলবে না। যদি কেউ নির্বাচনে আসতে অনিহা প্রকাশ করে তাহলে তাদের নির্বাচনে আসার কোন প্রয়োজনীয়তা জাতী আজ উপলব্দি করে না। বিশেষ করে বিদেশী দালাল ও দেশীয় চাটুকার এবং ক্ষমতালোভীদের কোন আটানো ফাঁদে পা দেয়া যাবে না। সচেতন হউন এবং চোখ কান খোলা রেখে আগামীর প্রয়োজনে এগিয়ে যান। আমাদের প্রত্যাশা হল; দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেভাবেই এগিয়ে যাক আগামী লক্ষ্য পুরণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে।
দলের নেতা-কর্মীদের জীবন এবং কাজে আরো স্বচ্ছতা আনয়নকল্পে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে এগুতো হবে। নির্বচান যতই সামনে আসবে ততই স্বচ্ছতা প্রকাশ করতে হবে। কোন ভয়-ভীতি এবং হম্বিতম্বি চলবে না। সম্মান ও শ্রদ্ধানির্ভর মূল্যায়ন এখন সময়ের দাবী। ক্ষমতাকে কোনভাবেই সামনে নিয়ে আসা যাবে না বরং ক্ষমতাকে পিছনে নিয়ে জনতাকে সামনে নিয়ে তাদের কাজ ও ভাবনাগুলো সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করে এগুতে পারলেই জয় অবিশম্বাভী। আমাদের প্রত্যাশা এবং সমর্থন অব্যাহত থাকবে আগামীর তরে উন্নয়নের গতি ও ধারাবাহিকতা অব্যাহতের পক্ষে।
গত কয়েকদিন যে ঝড় বইছে একটি মামলা ও ক্ষমতাশালী বিত্ত্ববানের তরে। সেই কলঙ্ক আজ আমাদের সকলের মাথা নত করে দিয়েছে। কি জবাব দিব ঐ ঘটনার স্বিকার পরিবারগুলোকে। কিন্তু হতাশাগ্রস্থ না হয়ে সরকার ও তাঁর প্রশাসনের উপর আস্থা রেখেই বলতে পারি এর বিষাক্ততা থেকে আমাদের আশু মুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আগামীর পথপ্রদর্শক হয়ে ফিরে আসুক সমাজে সুস্থির বারতা। কেউ কোন বুঝে বা না বুঝে বলার মধ্যে যে অন্যায় চলমান তা থেকে বেড়িয়ে আসুক আমাদের এই অগ্রসড়মান জাতি। বনানীর হোটেল রেইন ট্রি এর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিক সমগ্র জাতি। পরিবার হোক আরো সচেতন এবং জবাবদিহীতার ক্ষেত্রে আরো কঠোর চর্চার আহবান রাখছি। সন্তান কোথায় যাচ্ছে কি করছে এটা আমাদের আদিম কাল থেকেই পাওয়া একটি পারিবারিক অধিকার। আর এই অধিকার যে যত বেশী চর্চা করেছে সে বা সেই পরিবারই এর সুফল ততবেশী পেয়েছে। কিন্তু এর চর্চা যারা করেনি বা স্বাধীনতাকে অপব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছে সেই ক্ষেত্রেই এই ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম হয়েছে। বিভিন্ন আঙ্গিকে তা সমাজে আতঙ্কের কারণ হয়ে টুটি চেপে ধরেছে।
সময় এসেছে এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার এবং সন্তান লালন-পালনে যতœশীল এমনকি আরো সচেতন হওয়ার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই তার ভাষনে বলে থাকেন মা-বাবাদের উদ্দেশ্য করে; কিন্তু কি? আমরা মা-বাবা হিসেবে একবারও সেই কথাটি চিন্তা করেছি? যদি না করে থাকি তাহলে এখনও সময় ও সুযোগ রয়েছে আমাদের সন্তান, পরিবার ও সমাজকে সর্বোপরি রক্ষা করার। ঐ ন্যাক্কারজনক ঘটনার হাত থেকে জাতিকে বাঁচানোর। চলুন আমরা আমাদের কাজটুকু সঠিকভাবে পালন করি এবং ঘটনা ঘটার আগেই সচেতন হই ঘটানার পরে আর নিজে এবং জাতীকে লজ্জিত না করি।
একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ন যে; সমালোচনা এবং নিন্দুকের কথায় কান না দিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠটুকু জাতির প্রয়োজনে বিলিয়ে দেয়াটাই মোক্ষম। সেই কাজটুকুই করে যাচ্ছে আমাদের শ্রদ্ধার এবং আস্থার ভবিষ্যত সজিব ওয়াজেদ জয়। তার সেই কাজ ও মেধার সাথে পরিকল্পনার সমন্বয় দিন দিন দেশ, সমাজ ও জাতিকে দিয়েছে অনাকাঙ্খিত সম্মান ও অর্জন। যা আজ সারা পৃথিবীতে স্বৃকীতিপ্রাপ্ত। সেই আশার বানী নিয়েই আগামী দিনে পথ চলতে চাই সকলের সম্মিলীত প্রয়াসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.