সুপ্রিম কোর্টও কব্জায় নিতে চায় সরকার: প্রধান বিচারপতি

প্রধান প্রতিবেদক॥ গত ২৩মে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, সরকার নিম্ন আদালতের মতো উচ্চ আদালতও নিজেদের কব্জায় নিতে চায়। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর আপিল শুনানিকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। গত মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আপিল শুনানি হয়।
গত মঙ্গলবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার যুক্তি খন্ডন শুরু করেন। বেলা ১১টা পর্যন্ত শুনানি চলার পর আধাঘণ্টার বিরতি দিয়ে সাড়ে ১১টা থেকে আবার শুরু হয়েছে শুনানি। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আপিলের এই শুনানি চলছে।
শুনানিতে আদালত আরো বলেন, নিম্ন আদলতের ৮০ পার্সেন্ট সুপ্রিমকোর্টের নিয়ন্ত্রণে নেই। আপনি বলছেন, বিচার বিভাগ কার্যকর, এক জেলায় ৫ মাস ধরে জজ নেই। বিচার বিভাগ কার্যকর হলো কিভাবে?
এর আগে এ সংক্রান্ত মামলার শুনানির জন্য আজকের এই দিন ঠিক করেন আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। অন্যদিকে রিটকারীর পক্ষে আছেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানিতে ১২ জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
যৌক্তিক ব্যাখ্যা শোনার জন্য ১২ জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধুরা) হলেন- সাবেক বিচারপতি টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, এ এফ হাসান আরিফ, এম আই ফারুকী, ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল, এ জে মোহাম্মদ আলী ও আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া।
এর আগে ৪ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। তার আগে ২৮ নভেম্বর সংসদ কর্তৃক বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী।
২০১৬ সালের ৫ মে সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দুই বিচারপতি ১৬তম সংশোধণী অবৈধ ঘোষণা করলেও এক বিচারপতি ওই সংশোধনী বহাল রেখে রিট আবেদন খারিজ করেন। কিন্তু নিয়মানুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে যে রায় দেয়া হয় সেটাই চূড়ান্ত রায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.