বাজেট প্রাসঙ্গীকতা

বাজেট একটি চলমান প্রক্রিয়া। যা প্রতি বছরই প্রণয়ন করতে হবে এবং সেই প্রণয়নকৃত বাজেট জনগণের সামনে পঠিত আকারে প্রকাশ করতে হবে। এটি একটি সাংবিধানিক রেওয়াজও বটে। এই বাজেট এবং এর জন্য ডাকা অধিবেশন পৃথিবীর সকল দেশের কম-বেশী চলমান। যে যখনই সরকারে থাকবে সে তখনই বাজেট অধিবেশনের মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাবনা আকারে ঘোষণা করবে এবং সেই প্রস্তাবনায় বিভিন্ন জনের মতামত গ্রহণ করে সংশোধীত বাজেট পাশ করার মধ্যদিয়ে অধিবেশনের সমাপ্তি টানা হবে। এটাই হয়েও আসছে।
মজার ব্যাপর হলে বাজেট নিয়ে নেতিবাচক অসাঢ় বক্তব্য আমাদের এই দেশ ছাড়া আর অন্য কোথাউ প্রকাশিত হয় কিনা আমার সন্দেহ। বাজেট নিয়ে এত মাতামাতি এবং মিথ্যা বুলি এমনকি অজ্ঞান ও অবুঝ আবোল তাবোল বক্তব্য প্রায় সকল মানুষই বিভিন্ন মাধ্যমে দিয়ে থাকেন। কিন্ত মজার বিষয় হলো এই বাজেট আসলে সাধারণ মানুষের জন্য; কারণ যে সরকারই ক্ষমতায় থাকে এবং বাজেট প্রকাশ করে … লক্ষ্য কিন্তু একটাই রাষ্ট্র পরিচালনা এবং রাষ্ট্রের জনগণের উন্নয়ন। যেহেতু উন্নয়ন এই রাষ্ট্র পরিচালনায় নিখুঁত ও নির্ভুলতা আনয়ন এমনকি ভবিষ্যত লক্ষ্য স্থির করে সেই লক্ষের দিকে এগিয়ে যাওয়া সেহেতু নেতিবাচক ও অসার এবং পাগলের প্রলাপ না বকে যুক্তিযুক্ত এমনকি উন্নয়ন পরিকল্পনাকে আরো ফলপ্রসু ও গঠনমূলক যোগপোগী করতে পরামর্শ/ প্রস্তাব রাখা উচিত। কারণ এই বাজেট সংশোধিত আকারেই পাস হয়ে আগামী বছরের শুরু ও শেষ লগ্ন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
আমাদের দেশের সব মানুষই বিশাল পন্ডিত বিশেষ করে অর্থনীতি ও পরিকল্পনায় উচ্চতর ডিগ্রী প্রাপ্ত। বাস্তবে যাতে স্কুল কলেজের ন্যূনতম সার্টিফিকেটটুকুও নেই সেই মানুষটিও বজেট নিয়ে বিভিন্ন অবান্তর মন্তব্য করে বসে। এটা হাস্যকর। শিক্ষা ও জ্ঞানহীনভাবে এবং সার্টিফিকেট বিহীন রাজনৈতিক নেতা হওয়া যায় কিন্তু পরিকল্পনা ও বাজেট নিয়ে কথা বলা যায় না। যদি বলতে হয় তাহলে একটা পড়ালেখা করে বিভিন্ন মানুষের পরামর্শ নিয়ে কথা বললে ভাল হয়। একজন আবার বকলের পাগলের প্রলাপ। সবই নাকি হাসিনার ইশারায় এবং কথা প্রনীত হয়েছে। আর তাই যদি হয় তাওতো মঙ্গলের। হাসিনা সকল জ্ঞানের জ্ঞানী। যাক এই অপ্রাসঙ্গিকতার অবসান হওয়া বর্তমান সময়ের দাবি।
আমি নিজেও বাজেট নিয়ে এত মাথা ঘামায় না বরং এইটুকু বুঝি যারা কঠোর পরিশ্রম করে এই বাজেট প্রনয়ন করেছে তাদের পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ দেওয়া আমার নাগরিক দায়িত্ব এবং সেই বাজেট বাস্তবায়নে সহযোগীতা করা রাষ্ট্রীয় নাগরিক কর্তব্য। তবে যে বিষয়টি আমার দৃষ্টিতে বা বুঝাতে অস্পষ্ট সেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলে পরিস্কার হওয়াও কর্তব্য এবং অতি সাধারণ নাগরিক হিসেব ন্যূনতম অধিকার। তবে যদি কোন ভাল পরামর্শ থাকে তাহলে বাজেট পাশের আগে আমাদের সকলেরই উচিত ভালভাবে চিন্তাকরে সরকার এবং বাজেট প্রণেতাদেরকে সহায়তা করা। সকলে মিলেই এই দেশটাকে এগিয়ে নিতে হবে। একজনের ঘাড়ে দায়িত্ব ও দোষ চাপানোর সংস্কৃতি থেকে বেড় হয়ে আসার এখনই উপযুক্ত সময়। কারণ আজকে ওরা , কালকে আমরা, পরশু আরেক জন; সুতরাং প্রত্যেকে আমরা মিলে মিশেই এই দেশের কল্যাণের তরে কাজ করব। যখন যার উপর দায়িত্ব পড়বে তখন যারা দায়িত্বের বাইরে আমাদের কর্তব্য ঐ দায়িত্বশীল মানুষটিকে সহায়তা করে দায়িত্বের পরিপূর্ণনা ভোগ করা।
আমার অনুরোধ সোস্যাল মিডিয়া, রেডিও, টেলিভিশন, সম্মেলন, সভা-সমাবেশ, চায়ের ষ্টল থেকে বাসে এমনকি টার্মিনালে বসে আর সময় নষ্ট ও অন্যের সমালোচনা না করে বরং নিজের দায়িত্বটুকু পালনে আরো তৎপর হয়ে এগিয়ে আসুন জনকল্যাণের তরে। “আপনি যে ব্যবহার আশা করেন ঠিক সেইরকম ব্যবহার আগে নিজে শুরু করুন” তাহলে আপনার আশা পুর্ণ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.