প্রতীক্ষার পালা শেষে অবশেষে মহাকাশে পাড়ি দিল বাংলাদেশের ন্যানো স্যাটেলাইট

ইসরাত জাহান লাকী॥ বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের আদলে নিজেদেরকে প্রকাশ করছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে সেই প্রমান আবার প্রকাশিত হলো। প্রতিক্ষার অবসান হলো। গত ৪ জুন ভোররাতে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশের বানানো প্রথম ন্যানো স্যাটেলাইট ‘ব্র্যাক অন্বেষা’। বাংলাদেশের ব্র্যাক অন্বেষা দলের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছানো ও ন্যানো স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে স্থাপন নিয়ে আপডেট পরবর্তীতে যথাসময়ে জানানো হবে।” দলটির প্রতি সমর্থন, প্রার্থনা, উৎসাহ, প্রেরণার জন্য সবাইকে ধন্যবাদও জানায় তারা।
৪ জুন বাংলাদেশ সময় রাত তিনটার দিকে মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স আর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র সিআরএস-১১ অভিযানে স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেটে করে এই ন্যানো স্যাটেলাইট পাঠানো হয়। এই উৎক্ষেপণ-এর ঠিক আগ মূহুর্তে নাসা’র এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ফ্লোরিডায় আমাদের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলীয় স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৭মিনিটে ফ্যালকন ৯ রকেট উৎক্ষেপণ করা হবে।”
জাপানে বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী ‘ব্র্যাক অন্বেষা’ নামের এই ন্যানো স্যাটেলাইট বানান। উৎক্ষেপণের পর এক ভিডিও পোস্টে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তারা। ওই ভিডিওতে মাইসুন বলেন, এটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ পৌঁছানোর পর একে কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। তারপর আমরা এটি থেকে সিগন্যাল পাওয়া শুরু করলেই পুরো কাজ সম্পন্ন হবে। বাংলাদেশের ন্যানো স্যাটেলাইট যাত্রা গবেষক ড. আরিফুর রহমান খান-এর হাত ধরেই শুরু। উৎক্ষেপণের পর নিজের ফেইসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, “মহাকাশে বাংলাদেশ।”
গত বছরের জুনে কৃত্রিম উপগ্রহটি বানানোর জন্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জাপানের কিউশু ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (কিউটেক) চুক্তি হয়। পরে কিউটেকের ল্যাবরেটরি অব স্পেস ক্র্যাফট এনভায়রনমেন্ট ইন্টারঅ্যাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তত্ত্বাবধানে এটা বানানোর কাজে যুক্ত হন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ও বর্তমানে কিউটেকে গবেষণারত বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থী রায়হানা শামস ইসলাম, আবদুল্লা হিল কাফি ও মায়সূন ইবনে মনোয়ার।
স্যাটেলাইটের নকশা প্রণয়ন থেকে শুরু করে চূড়ান্ত কাঠামো তৈরির সব কাজই করেন এই শিক্ষার্থীরা। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি তা মহাকাশে পাঠানোর জন্য জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জেএএক্সএ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.