একটি বাড়ি ও আইন এবং সরকারের মনোভাব

আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে এবং সেই অনুযায়ী সকল মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা হলো একজন বিচারে সন্তুষ্ট হয় আরেকজন হয় অসুন্তুষ্ট। এটাই আইনের ধর্ম এবং সৃষ্টিকর্তারও বিচারের রুপরেখা। সব পক্ষকে বিচারের ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট করা যায়নি এবং যাবেও না। এটাই ধরীত্রির নিয়ম। নিয়তির এই নিয়মের কাছে মাঝে মাঝে বিপরীত কিছুও ঘটে যদি আইনকে এবং বিচারালয়কে অদৃশ্য কোন শক্তি নিয়ন্ত্রন করে। সেই ক্ষেত্রে এবারই সরকার প্রধান তাঁর ন্যায় বিচার প্রকাশ করেছেন অবৈধভাবে দখল করা বাড়িটি জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে। সরকার প্রধান অনুসরণ করেছেন আল্লাহর সেই আদেশ “মালিক তোমারও একজন মালিক বেহেস্তে আছে ভেবে শ্রমিকের সঙ্গে আচরণ কর”। বিচারপতি তোমারও একজন বিচারক বেহেস্তে আছে ভেবে তুমি তোমার বিচার কাজ কর। এই যে নিতী পরিলক্ষিত হচ্ছে তা কিন্তু সততার এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি আস্থা, বিশ্বাস ও নির্ভারতার প্রতিক।
একজন রাষ্ট্রনায়ক তখনই সৎ এবং কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন যখন তিনি নিজে সৎ এবং তাঁর পরিকল্পনা হয় মহৎ। তিনি যখন সম্পূর্ণরূপে সৃষ্টিকর্তাতে বিলীন হন তখন সাহসী এবং বিরল দৃষ্টান্তের সিদ্ধান্ত এবং কাজ মানুষ প্রত্যক্ষ করতে পারে। আর তারই একটি হল মিডিয়ারোচক বাড়িটিকে ফিরে পাওয়া। জনগণ বাড়িটি ফিরে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় কোষাগারের মাধ্যমে। কারন রাষ্ট্রের মালিক হলো জনগন। কিন্তু যিনি বাড়িটি হারিয়েছেন তিনি কি পেয়েছেন? হ্যা পেয়েছেন নিলজ্জতার জন্য, লজ্জা, ঘৃণা এবং সরকারের মহতি উদ্যোগের কারণে বের হয়ে আসতে পেরেছেন চলমান অর্জিত পাপ থেকে। কারণ তার লোভ তাকে দিনকে দিন পাপী এবং পাপের পূর্ণতাই মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছিন। তিনি এমন নির্বোধই হয়েছিলেন যে, তিনি যে অন্যায়, পাপ এবং লোভ করেছিলেন তা তার অসাড় বিবেকে বুঝতে অক্ষম ছিলেন। মিথ্যা, ধোকা এবং আইনের ফাঁক ফোকর গড়িয়ে করায়ত্ত্ব করেছিলেন এই বাড়িটি কিন্তু বিধাতার কি খেলা তা ধরে রাখতে পারলেন না।
তিনি কে ছিলেন, সেই পদগুলো উল্লেখ করে ঐ পদগুলোকে কলঙ্কিত করতে চাই না। বরং বলতে চাই তিনি ছিলেন রাষ্ট্র যন্ত্রের সাবেক সর্বক্ষমতার মালিক। কিন্তু সেই ক্ষমতা তাকে আর বেশীদিন ঐ আসীনে রাখেনি কারণ ছিল নিলজ্জ্ব পাপ। কিতাবে আছে লোভ থেকে কামনার জন্ম হয়, আর কামনা মানুষকে ফাঁদে ফেলে, কামনা পুর্ন হলে মৃত্যুর জন্ম হয়। সেই মৃত্যু কখনো রুহানিক আবার কখনও কখনও জাগতিক এবং সামাজিক আবার কখনও কখনও চিরস্থায়ী বদ্ধোবস্তের। এই মওদুদ সাহেব কিই না করেছেন কিন্তু আজ তিনিতো কিছুই করতে পারলেন না। কারণ কি? এর থেকে কি আমাদেরও শিক্ষা নেয়া উচিত নয়? সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেকের হাতে কোন কোন দায়িত্ব বা ক্ষমতা দিয়ে থাকেন যেন আমরা সৃষ্টিকর্তার উদ্ধেশ্যে বা তাঁর সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করি। কিন্তু আসলে আমরা তা করি না বরং নিজের জন্য সবকিছুই করতে চেষ্টা করি আর তখনই ঘটে বিপত্তি। এই বিপত্তির ফলই , তারেক, খালেদা গং এবং শেষঅবদি মওদুদ সাহেবের বাড়ির পরিণতি। আমাদের সামনে যে সকল দৃষ্টান্ত হাজির হয়েছে তার থেকে যদি শিক্ষা না নিয়ে ওদের মত আমরাও কাজ করি তাহলে কিন্তু ঐ পরিণতি এসে হাজির হবে আবার আমাদের সামনে। তখন কিন্তু এই কথার জয় জয়কারই হবে। ক্ষমতা চিরদীন কেউ কুক্ষিগত করে রাখতে পারে না। আজকে ক্ষমতা আছে কালকে কিন্তু থাকবে না। যেমন কুলিল্লাহুম মালিকুল মুলকি… তুতিল মুলকা মিমমানতাশাও বিয়াদিকাল খায়ের… এই সুরার বাংলা অর্থ হলো আল্লাহ কাউকে সকালে বাদশা এবং বিকেলে ফকির এ পরিণত করেন। আল্লাহ যখন যাকে ইচ্ছা তাকে এইরকমই করেন।
আসুন আমরা শিক্ষা নিয়ে নিজেদের জীবন গড়ি। যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হই এবং নিলজ্জ বেহায়াপনা এবং পাপী ও পাপের জন্ম হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকি। সরকার প্রধান যে কঠোরতা দেখিয়ে যাচ্ছেন তা যেন আমরাও আমাদের কাজে, চিন্তায়, আচরণে এবং দায়িত্বে দৃশ্যমান রাখতে পারি সেই চেষ্টাই প্রতিনিয়ত করি। অল্পদিনের পৃথিবীতে জাগতিকতার পিছনে না ছুটে চিরস্থায়ী বসবাসের জায়গা সেই আখেরাতের দিকে সজাগ দৃষ্টি দিয়ে অগ্রসর হই। এই বাড়ি,আইন, সরকার এবং দৃশ্যমান বাস্তবতা আমাদেরকে ঐ আখেরাতের শিক্ষাই দিয়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.