উন্নয়ন শতভাগ এবং প্রচারণায় ৬০ ভাগ

সরকার এবং সরকারের কর্মকান্ডের শতভাগ সফলতা প্রচারিত হয় বিদেশী মিডিয়া বা জরিপের মাধ্যমে। কিন্তু নিজ দেশে  যাদের জন্য উন্নয়ন হচ্ছে তারা কি জানে এবং এর সুফল ভোগ করেও কি বুঝতে পারছে এই সুফল মাত্র সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে হয়েছে। সুফলভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়… তারা এর কিছুই জানে না বা বুঝেও না। গ্রামের সেই খেটে খাওয়া মানুষজন থেকে শহরের ভাসমান এমনকি সংগ্রাম করে টিকে থাকা মানুষগুলো পর্যন্ত সূফল ভোগ করা সম্পর্কে অজ্ঞাত। কারণ আমাদের সরকারের উন্নয়ন প্রচারণার ঘাটতি। গরীব মানুষ ভুতর্কীর তেল, ডাল, চাল এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এর সুফল ভোগ করে কিন্তু সরকারের উদারতা এবং সুচিন্তিত মতামতের ফল এই সকল কিছুই তা জানে না এমনকি বুঝতেও চাই না। তাদের সঙ্গে আলাপকালে আমি নিজেও বিরক্ত প্রকাশ করেছি। মাঝে মাঝে উত্তেজিত হয়েছি কিন্তু কি করার …  বোঝাতে হবে এবং তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে মুল ধারায়। নতুবা সমাজের এমনকি রাষ্ট্রের ক্ষতি বৈকি লাভ হবে না। তারাইতো আগামীতে না বুঝে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের মূল্যবান ভোটটি অপাত্রে দান করে রাষ্ট্রের উন্নয়নের সমুহ ক্ষতি ডেকে আনবে।
সারাদেশ ঘুরে উন্নয়নের ছোয়া দেখে বিস্মিত হয়েছি বৈকি কিন্তু এর প্রচারনার সিকিভাগও চোখে না পড়ায় হতাশ হয়ে আজ লিখতে বাধ্য হয়েছি। যে উন্নয়ন করে সে কিন্ত লিখে না বা বলে বেড়ায় না, তা বলতে হয় দেশের মিডিয়া এবং উন্নয়ভোগী মানুষজন। কিন্তু উন্নয়নের সুফল ভোগীরাও হতাশ হয়ে বেশী সরকার বিমুখতাই প্রকাশ করে কেন? এর কারণ উদঘাটত করা দরকার। সরকার আন্তরিক এবং তাদের প্রচারণাও চলছে উন্নয়নের গতির সঙ্গে তারপরও বলব তা হয়নি এবং ফলপ্রসুতা বয়ে আনবে না। কারণ এই প্রচারনায় থাকতে হবে বিশ্বস্ত মিডিয়া (প্রিন্ট ও ইলেকট্টনিক, সোস্যাল মিডিয়া) এমনকি দলের প্রচারনা সেল এর সক্রিয় কর্মীদের ফলপ্রসু মেধাবি উদ্যোগ। এই সকলই ব্যর্থ। যে ৬০ ভাগের কথা উল্লেখ করেছি তা কিন্তু হয়েছে দলের নিষ্কিয় সমর্থক বা অন্ধ সমর্থক ও স্যোসাল মিডিয়ার কিছু প্রচার বিমুখ এমনকি দলীয় কর্মকান্ডে পিছিয়ে পড়া সমর্থক বা সরকারের অঘোষিত প্রাণ হিসেবে গন্য মানুষদের কল্যাণে। প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়ও ঠিক একই ধরনের মানুষিকতা নির্ভর ব্যক্তিদের প্রচারনায় টিকে আছে মাত্র। নিরেপক্ষ মিডিয়ায় এর ফলপ্রসুতা তেমনভাবে জনগনের দ্বারে পৌঁছানো হয় নি বা হওয়ার কোন প্রচেষ্টাও লক্ষনীয় দৃশ্যমান নেই। সরকারের মন্ত্রী, এমপি মহোদয়দের প্রচারণাও চলছে ঐ ৬০ ভাগেই।
বড় দু:খের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলীয় নেতা, কর্মী ও কার্যকরী কর্মীদ্বয় শুধু ব্যস্ত নিজেদের কল্যানের আগামী করনীয় নিয়ে। মন্ত্রী, এমপি মহোদয়ের দৃষ্টি সিমার মধ্যে থাকার আশায় সব বিসর্জণ দিয়ে এখন শুধু প্রতিযোগীতা কিভাবে মন্ত্রী/ এমপি মহোদয়ের নেক নজরে পড়া যায় বা দৃষ্টিসিমার মধ্যে থেকে বাকী কাজটুকু আদায় করা যায়। আসলে এই প্রতিচ্ছবী সবখানেই। আর এই প্রতিচ্ছবিগুলো দেখে সাধারণ জনগণ এদের কাছ থেকে প্রায় বিমুখ। হয়ত সম্মুখে স্তুতি বা ভক্তি কিন্তু পিছনে বা সঠিক সময়ের হিসেবে ভিন্নতা পোষণ ও প্রয়োগ নিশ্চিত করে রেখেছে। এই বিমুখতা এবং ভিন্নতা থেকে ঐ জনগণকে ফিরিয়ে আনার সময় কিন্তু এখনই। আমাদের শ্রদ্ধেয় মন্ত্রী/ এমপি মহোদয়গণকি এইদিকে দৃষ্টিপাত দিবেন। সিনিয়র স্থানীয় গ্রহণযোগ্য নেতা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যারা মানুষের নিকট আইডল বা যাদেরকে মানুষ অনুকরণ করে সেইসকল জন এখনই এগিয়ে এসে কাজ শুরু করুন। কারণ দল আমাদের সকলের। দলে মূল্যায়ন নেই বা এমপি ও মন্ত্রীর কাছে সুযোগ নেই কথা বলার সমস্যা নেই; কারণ আমরাতো এমপি/ মন্ত্রীর নেক দৃষ্টির জন্য বা ব্যক্তিস্বার্থের জন্য দল করি না বরং দল করি দেশের মানুষের কল্যানের তরে কাজ করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য এবং সকল অসমাপ্ত কাজ যা তাঁরই ঔরশজাত কন্যা হাতে নিয়েছেন সেগুলিকে সফলতায় রূপদান করার জন্য।
আমি নেতা/ নেত্রী সমর্থক ও এমপি/ মন্ত্রীমহোদয়দের আঘাত করার জন্য এই লিখা লিখিনি বরং লিখেছে সচেতন হয়ে সঠিক পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে। আমরা সবাই মিলেই একটি পরিবার আর এই পরিবারের নাম আওয়ামী পরিবার। স্বাধীনতার পক্ষের পরিবার। তাই সকলেই পিছনে ফিরে তাকান এবং অতিত পর্যালোচনা করে বর্তমানকে সাজিয়ে ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা রাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করুন। যারা বিতর্কীত তাদেরকে শুদ্ধ করে আবার কাজের অংশীদার করুন। সকলে একসঙ্গে কাজ করুন। কাউকে মীরজাফর হিসেবে কাজ করুর সুযোগ দিবেন না। লক্ষ্য আমাদের স্থীর তাই লক্ষের দিকে দৃষ্টিপাত করুন। একজন আরেক জনের সমালোচনা না করে বরং ইতিবাচক মনোভঙ্গি ও ঐক্যের চেতনায় কাজ করুন।
প্রচারনা এবং সফলতা তুলে ধরা এমনকি জনগনের মনে জাগা ভুল ধারনা দুর করা এখন সকলেরই আশু দায়িত্ব। সুতরাং কোনভাবেই এই দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই। সম্মান, শ্রদ্ধা এবং পরামর্শ ও আলোচনার সারাংশ নিয়ে এগিয়ে যান। যাদেরকে ব্যবহার করা প্রয়োজন সেই স্বচ্ছ ইমেজের নির্লোভ মানুষদের ব্যবহার করুন। নেতা হিসেবে আপনার দায়িত্ব হলো ঐ ইতিবাচক ও স্বচ্ছ ইমেজের লোকদের ব্যবহার করা। নিজে নিজে সব কিছু করতে যাওয়ার সময় এখন নয়। বরং দলীয় ঐক্য ও সুনাম বৃদ্ধি এবং শেখ হাসিনার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অনেক নেতা, কর্মী ও সমর্থকই নানাবিধ কাজে জড়িয়ে নিজেকে বিতর্কিত ও স্বচ্ছতা হারিয়েছেন। সমস্যা নেই শিখুন এবং নিজেদেরকে শোধরিয়ে কাজে লেগে থাকুন। তবে সতর্কতা অবলম্বন করুন যাতে আপনার ব্যক্তিগত সমস্যার বা নেতিবাচকতার কারণে যেন দলের কোন ক্ষতি না হয়। তবে স্বচ্ছ ইমেজের লোকদের সঙ্গে থেকেই কাজ করুন। তাহলে হয়ত একদিন আপনার হারানো ইমেজ বা ইতিবাচক স্বচ্ছতা ফিরে আসবে এবং জনগণ আবার আগের মত আপনাকে গ্রহন করবে ও আপনার পরামর্শ/ অনুরোধে তাদের মহামূল্যবান ভোট আপনার প্রার্থীকে দিবে। সেই জন্যই কাজে লেগে থাকুন। আর কোন বিবেদ নয় বরং কাধে কাধ মিলিয়ে এগিয়ে চলুন।
যারা নতুন হিসেব দলে ভিড়তে প্রস্তুত তাদেরকে যুক্ত করুন এবং সময়ের দাবিকে মেনে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করুন। তাহলেই আগামী দিনে দল ও দেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রগতি অক্ষুন্ন থেকে তরান্বিত হবে। কাউকেই দল থেকে বিতাড়ির নয় বা কেউ দলে আসতে চাইলে তাকে সুযোগ না দিয়ে কোন ভুল করার কাজে কোনপ্রকার সহযোগীতা বা ইন্দন যোগানো থেকে বিরত থাকুন। বঙ্গবন্ধুর সময়ে বাংলাদেশের সকলেই কিন্তু ছিল আওয়ামী লীগ। শুধু জামাত তাদের বহুরূপী নাম ব্যবহার করে দেশের এবং বঙ্গবন্ধুর বিরোধীতায় মরীয়া ছিল। স্বাধীনতার পর এমনকি বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বরণের পর দেশে বিভিন্ন দল, মত, পথ এর মেরুকরণ শুরু হয় যা পরবর্তীতৈ দেশকে উল্টো পথে পরিচালিত করে আসছিল। কিন্তু এখন দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে আর এই সঠিকতা ধরে রাখাই আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা হওয়া উচিত।
আমি একজন নঘন্য কলমযোদ্ধা এবং আমার ক্ষমতাও নেই কিছু করার। তবে আমার যা আছে তার সর্বস্ব দিয়ে দেশের কল্যাণে এবং সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি এবং যাব। এর জন্য যদি আগামী বেলার খাবারটুকু শেখ হয়ে যায় তাও আমার কাজ চালিয়ে যাব। কারো কোন সহযোগীতা বা সহমর্মীতা এমনকি কোন সম্মান বনে আনার জন্যও নয়। আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন তাঁর সবকিছু এবং দিয়েছেন জ্ঞান ও সম্মান। সবকিছুই ব্যয় করতে চাই মানবতা এবং দেশ মাতৃকার কল্যানের তরে। আমার দল ও সরকার এগিয়ে যাক এটাই আমার ঐকান্তিক কামনা। তাই সর্বান্তকরণে সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আমৃত্যু অঙ্গিকার রাখছি। আগামীবার আবার ফিরে আসবো অন্যকোন প্রাসঙ্গিকতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.