বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি পরিচালনা কোম্পানির অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা

বাআ॥ মন্ত্রিসভা দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি (বিসিএসসি) লিমিটেড গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্বে গত সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, দেশের প্রথম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ যাত্রা শুরু করার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হওয়ায় শিগগিরই বাংলাদেশ স্যাটেলাইট ক্লাবে যোগদান করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই মহাকাশে স্যাটেলাইটটি যাত্রা শুরু করবে এবং এটি পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানী গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় স্থানীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পরিচালনা করার জন্য একটি কোম্পানী গঠনের প্রস্তাব করে। কোম্পানিটির নাম হবে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি (বিসিএসসি) লিমিটেড। কোম্পানিটি ৫,০০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে গঠিত হবে যা প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের ৫০০ কোটি শেয়ারে বিভক্ত।
আলম বলেন, সংঘ স্মারক অনুযায়ী প্রস্তাবিত কোম্পানির জন্য ১১ সদস্যের কমিটি থাকবে এবং সদস্যদের সবাই হবেন সরকারি কর্মচারি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বিসিএসসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচালক সদস্য সচিব হিসাবে কাজ করবেন। তিনি বলেন, কোম্পানির অন্যান্য পরিচালক হবেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, অর্থ, তথ্য ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ, স্পারসোর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেলিকমুনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের ডিজি এবং সরকার মনোনীত দু’জন ব্যক্তি। মন্ত্রিপরিষদ বর্তমান আইনকে আরও সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে ‘বীজ আইন, ২০১৭’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ইতোপূর্বে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সামরিক শাসনের সময় জারিকৃত ১৯৭৭ সালের মূল ‘সীড অর্ডিন্যান্সকে’ অবৈধ ঘোষণা করায় এবং কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলায় অনুবাদ ও প্রয়োজনীয় সংশোধনী সাপেক্ষে খসড়া আইনটি তৈরি করা হয়।
নতুন খসড়া আইন অনুযায়ী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চেয়ারম্যান ও একই মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকে (সীড উইং) সদস্য সচিব করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় বীজ বোর্ড গঠন করা হবে। আলম বলেন, এই বোর্ড ছয় মাসে একবার বৈঠকে বসবে। তবে প্রয়োজন হলে এর আগেও বৈঠক করা যাবে। বোর্ডের কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি মূলত বীজের গুণগতমান নিয়ন্ত্রণ করবে। প্রয়োজনীয় আইন তৈরির পর বীজ বোর্ডের যাবতীয় কার্যক্রম নির্ধারণ করা হবে।
আলম আরও বলেন, এতে একটি বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি থাকবে, যার মাধ্যমে বীজের ডিলারশীপের অনুমোদন ও লাইসেন্স প্রদান করা হবে। কোন ডিলার বা বীজ ব্যবহারকারী কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তার জন্য সীড ইন্সপেক্টর প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন। তিনি বলেন, এ জাতীয় অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ডিলার বা ব্যক্তিকে তিন মাসের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যাবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে দোষী ব্যক্তিকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে।
এছাড়াও প্রস্তাবিত আইনে আইন প্রয়োগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার বিধানও রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে বীজ আমদানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্যাকেজিং লেবেল ও স্ট্যান্ডার্ড মার্কস গুণগতমান সম্পন্ন না হলে বীজ আমদানির অনুমোদন দেয়া হবে না। বৈঠকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ এবং সংশ্লিষ্ট সচিববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.